প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে যে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে, তা ইতিমধ্যেই এসএসসির পক্ষ থেকে যে অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তার মধ্যে দিয়েই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। নতুন করে আবার এসএসসি পরীক্ষা হচ্ছে। যদিও বা সেই পরীক্ষার কতটা সুদূরপ্রসারী ফলাফল হবে, তা নিয়ে পরীক্ষার্থীরা নিজেরাই যথেষ্ট সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন। তবে এসএসসির পক্ষ থেকে ২০১৬ সালের যে অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেটা অসম্পূর্ণ এবং ত্রুটিযুক্ত বলে প্রথম দিন থেকেই দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার বক্তব্য যে, এই তালিকায় আরও অনেক নাম রয়েছে। তবে এবার শুভেন্দুবাবু যে কথা বললেন, তাতে রীতিমত বিনা মেঘে বজ্রপাত হয়ে গেল বঙ্গ রাজনীতিতে। আর বিরোধী দলনেতার বক্তব্যের পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করলো, তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারও এসএসসির চাকরির সুবিধা পেয়েছে? আর তারা কি বৈধভাবে নয়, অবৈধভাবে সেই সুবিধা নিয়েছে?

বলা বাহুল্য, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পরেই প্রত্যেকটি সভা সমিতি থেকে দাবি করেন যে, তারা চাকরি দিতে চান, কিন্তু কিছু ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোর্টে চলে যাচ্ছেন, মামলা করছেন। যার জন্য এই নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে। গতকাল তিনি উত্তরবঙ্গের সভা থেকে সেই অভিযোগ করেছেন। আর তার পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এক ভয়ংকর তথ্য সামনে এনে দিলেন। যার ফলে একদিকে যেমন সংশয় তৈরি হলো যে, নিয়োগ দুর্নীতিতে এসএসসি প্রকাশ করা যে অযোগ্যের তালিকা, সেই তালিকা আরও বৃদ্ধি হতে পারে। ঠিক তেমনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করলো যে, তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের কোনো ব্যক্তিও এসএসসির এই অযোগ্যের তালিকার মধ্যে রয়েছেন?

এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে শুভেন্দুবাবুকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। আর সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কোন পলিটিক্যাল পার্টির কোর্টে যাওয়ার সুযোগ নেই। আপনি ভুল করলেই যাবে। আপনার ভাইজিকে আপনি অযোগ্য ঘোষণা করেননি কেন? এসএসসির শিক্ষক-শিক্ষিকাতে মোট দাগি অযোগ্যের সংখ্যা হচ্ছে, ১৯৫৮। আপনি ১৮০৬ জনের নাম ঘোষণা করেছেন কেন?” আর শুভেন্দুবাবুর এই কথা ধরেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, তাহলে কি এই অযোগ্যের তালিকা আরও বৃদ্ধি হতে পারে? আর যে তালিকা এখনও পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি, শুভেন্দুবাবুর কথা অনুযায়ী যদি তেমনটাই হয়, তাহলে কি সেই তালিকার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইজির নাম পর্যন্ত রয়েছে?

বিরোধীরা বলছেন, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তো সততার প্রতীক। তিনি নাকি সরকারি বেতন পর্যন্ত নেন না। তাহলে তার ভাইজি এসএসসির অযোগ্যের তালিকা রয়েছে, এত বড় কথা শুভেন্দু অধিকারী বলে দিচ্ছেন, আর মুখ্যমন্ত্রী সেটাতে নীরবতা পালন করছেন কেন? শুভেন্দুবাবুর কথা যদি মিথ্যা প্রমাণ হয়, তাহলে কেন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার মত সাহস দেখাচ্ছেন না? নাকি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা যেটা বলছেন, সেটাই সত্যি? কোনটা সত্যি, কেউ জানে না। তবে রাজ্যবাসী চাইছে, দুর্নীতিমুক্ত হোক এসএসসি পরীক্ষা। তবে ২০১৬ সালের প্যানেলের অযোগ্যের তালিকা নিয়ে এখনও পর্যন্ত যে দড়ি টানাটানি চলছে, যদি সেই তালিকায় আরও কিছু নাম থেকে থাকে, তাহলে অবিলম্বে তা প্রকাশ করে দেওয়া হোক। অন্তত তেমনটাই দাবি উঠছে রাজ্যবাসীর পক্ষ থেকে।