প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- নিজের ছোট্ট মেয়েকে অনেক কষ্ট করে মানুষ করছিলেন। কিন্তু নাবালিকা সেই ছোট্ট মেয়েটি রাজনৈতিক হিংসার শিকার হয়ে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল। চোখের সামনে মেয়ের এই চলে যাওয়া মেনে নিতে পারেননি মা। কালীগঞ্জে উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের দিন তৃণমূলের উল্লাসের কারণে যে বোমা ফেটেছিল, সেই বোমার আঘাতে প্রাণ গিয়েছিল ছোট্ট তামান্নার। বারবার করে তার পরিবার দাবি করেছিল, যারা প্রকৃত দোষী, তাদের গ্রেপ্তার করা হোক। কিন্তু এই রাজ্যের পুলিশের অবদার্থতা এব নিষ্ক্রিয়তা বারবার করে সামনে এসেছে। তাই সেই প্রশাসনের ওপর ভরসা ছিল না নিহত তামান্নার পরিবারের। দীর্ঘদিন ধরে তারা শুধু দেখে যাচ্ছিলেন, কবে বিচার হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদার জন্য এবার বড় পদক্ষেপ নিলো তামান্নার পরিবার।

প্রসঙ্গত, কালীগঞ্জের উপনির্বাচনের দিন বোমা বিস্ফোরণে প্রাণ হারায় ছোট্ট তামান্না। আর তারপর থেকেই গোটা রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ হয়। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আওয়াজ ওঠে। বিরোধীরাও রাস্তায় নামে। কিন্তু তামান্নার মায়ের কষ্ট তার মনের মধ্যেই রয়ে গিয়েছে। ঘটনার ৮১ দিন পেরিয়ে গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত চার্জশিট দেওয়া তো দূরের কথা, মেয়ের মৃত্যুর বিচার পর্যন্ত হয়নি। তাই আজ বাধ্য হয়েই পুলিশ সুপারের অফিসের বাইরে ধর্না দিতে শুরু করলেন তিনি। যতদূর খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, পুলিশ সুপার তার সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করেননি। স্বাভাবিকভাবেই সেই পুলিশ কর্তার সহানুভূতি নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন কতটা অপদার্থ, কতটা সহানুভূতিহীন, তা আরও একবার এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়ে গেল‌। পুলিশের প্রতি মানুষের বিশ্বাস থাকবে কি করে? পুলিশ যদি নিজেরাই নিজেদের কর্তব্যে অবিচল না থাকে, তাহলে মানুষ তো এই পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে, রাস্তায় নামবে, এটাই স্বাভাবিক। তামান্নার মা তো এমনি এমনি আজকে পুলিশ সুপারের অফিসের বাইরে ধর্না দেয়নি। তার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। নিজের মানুষ করা ছোট্ট মেয়েকে তিনি হারিয়ে ফেলেছেন। একজন মা নিজের মেয়েকে হারিয়ে ফেলার কষ্ট বোঝেন। সেটা কোনো পুলিশ কর্তারা বুঝবেন না। তাই মেয়ে চলে গেছে ঠিকই, কিন্তু মেয়ের মৃত্যুর জন্য যাদের দায়ী, তাদের তিনি ছাড়বেন না বলে প্রথম দিন থেকেই গোটা বিষয়ে লেগেছিলেন তামান্নার মা। তাই আজ বাধ্য হয়েই বিচারের দাবিতে পুলিশের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে ধর্নায় বসলো তামান্নার পরিবার। এখন দেখার বিষয়, পুলিশকর্তাদের সহানুভূতি কখন জাগে এবং কখন তারা তামান্নার পরিবারের সঙ্গে এসে কথা বলেন! যার দিকে তাকিয়ে গোটা রাজ্যবাসী।