প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে এবং নিজের দলকে বারবার করে বাংলা এবং বাংলাপ্রেমী বলে দাবি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু গতকালই তাদের মুখোশ খুলে গিয়েছে। সামনেই দুর্গাপুজো, অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নতুন মাস পড়লে সরকারি কর্মীদের বেতন হয়। তবে রাজ্যের পক্ষ থেকে সেরকম কোনো নির্দেশিকা দেওয়া না হলেও কেন্দ্রীয় সরকার গতকালই জানিয়ে দিয়েছে যে, উৎসবের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রের সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের বেতন আগামী ২৬ তারিখে দেওয়া হবে। যার ফলে সকলেই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে শুরু করেন। সকলেই বলতে শুরু করেন যে, আগে তো এই কাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করে দেখানোর কথা ছিল। তিনি তো বাংলার মুখ্যমন্ত্রী! তাহলে বাংলার সংস্কৃতিকে যিনি এত ভালবাসেন, যিনি বাংলা ও বাঙালিকে উন্নয়নের মধ্য দিয়ে ভরিয়ে দিচ্ছেন বলে দাবি করেন, যিনি দাবি করেন, বিজেপি বাংলা বিরোধী দল, সেই মুখ্যমন্ত্রী তো কিছু করতে পারলেন না। উল্টে বিজেপি তো কেন্দ্রীয় সরকারে থেকে দেখিয়ে দিলো যে, বাংলার সংস্কৃতিকে কতটা তারা আপন করে নিয়েছে! সেই জন্য দুর্গাপুজোর আগেই তারা কেন্দ্রের সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের জন্য মাস শেষ হওয়ার আগেই বেতন দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিলো। তবে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এই বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা হতেই রীতিমত চাপে পড়ে গিয়েছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন এই কথা বলা হচ্ছে? তার কারণ, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের ঘোষণার পরেই রাজ্যের পক্ষ থেকে পাল্টা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হলো, দুর্গাপুজোর আগেই অর্থাৎ নতুন মাস পড়ার আগেই চলতি মাসের বেতন দিয়ে দেবে রাজ্য সরকার।
আর এই ঘটনার পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কে কাকে নকল করছে? এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তো কথায় কথায় বলেন যে, রাজ্যকে নকল করে নাকি কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপি শাসিত অন্যান্য রাজ্য সরকারগুলো বিভিন্ন প্রকল্প স্থাপন করে! কিন্তু পুজোর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেই তো আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকারি কর্মীদের বেতন মাস পয়লার আগেই দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর তারপরেই রীতিমত চাপে পড়ে বাংলা ও বাঙালির কাছে তাদের মুখোশ খুলে যাচ্ছে, এই ভয়ে শেষমেশ মোদীকেই নকল করতে বাধ্য হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? যতদূর খবর পাওয়া যাচ্ছে, আগামী ২৪ এবং ২৫ তারিখ রাজ্যের সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের এবং পেনশন ভোগীদের একাউন্টে ঢুকে যাবেন বেতন। শুধু তাই নয়, লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে শুরু করে যে সমস্ত সরকারি প্রকল্প রয়েছে, তার অনুদানও পুজোর আগেই অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়ে দেবে রাজ্য সরকার।
বিজেপির দাবি, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গতকাল কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরই রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি যে, কেন্দ্রীয় সরকার এরকম একটি বড় পদক্ষেপ বাংলা ও বাঙালির জন্য নিতে পারেন। তাই সেই পদক্ষেপের পরেই তিনি রীতিমতো দিশেহারা হয়ে গিয়েছেন। যার ফলে এখন বাংলা ও বাঙালির কাছে আপন হতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার বা নরেন্দ্র মোদীর দেখানো পথেই হাঁটতে হচ্ছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা ও বাঙালিকে এতই বেশি ভালবাসতেন, তাহলে অনেকদিন আগেই তিনি ঘোষণা করে দিতে পারতেন যে, পুজোর আগেই চলতি মাসের বেতন দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু কেন্দ্র ঘোষণা করেছে, তারপর তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, এবার তো তিনি নিজের রাজ্যের মানুষের কাছেই প্রশ্নের মুখে পড়ে যাবেন। তাই বাধ্য হয়েই কেন্দ্রীয় সরকারকে নকল করে এখন মানুষের মন পেতে বা সরকারি কর্মচারীদের মন পাওয়ার একটা মরিয়া চেষ্টা শুরু করে দিলেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেই কটাক্ষ বিরোধীদের।