প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের বুকে শুধুমাত্র বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিরা নয়, যে কেন্দ্রীয় বাহিনী তাদের নিরাপত্তায় রয়েছেন, যে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেশের গর্ব, তাদের পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে আক্রান্ত হতে হয়। এর আগেও এরকম বহু ঘটনা ঘটেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল রিপোর্ট তৈরি করেছেন দিল্লিতে পাঠিয়েছেন। কিন্তু তার রিপোর্টে কাদের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টে রাজ্যপাল হিসেবে এই রাজ্যের বুকে যে সমস্ত ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে যে সমস্ত কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত ছিল, তার কিছুই বর্তমান রাজ্যপালের পক্ষ থেকে দেখতে পাওয়া যায়নি বলেই অভিযোগ রয়েছে অনেকের। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে ত্রাণকার্যে শামিল হতে গিয়ে বিজেপির দুই জনপ্রতিনিধি, একজন সাংসদ এবং একজন বিধায়ক আক্রান্ত হয়েছেন। আর সেই ঘটনা নিয়েই যখন তোলপাড় গোটা রাজ্য, ঠিক তখনই আরও একটি ভয়ংকর চিত্র সামনে এসেছে। যেখানে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে যে, সিআইএসএফ জওয়ানদের পর্যন্ত আক্রমণ করা হচ্ছে। আর এত বড় চিত্র সামনে আসার পরেও কিছু করে বসে থাকবেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান? কেন তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের ত্রাণকার্যে সামিল হতে গিয়ে রক্তাক্ত হয়েছেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। গুরুতর জখম অবস্থায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। একইভাবে আক্রান্ত হতে হয়েছে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকেও। তিনিও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যে রাজ্যে জনপ্রতিনিধিরা নিরাপদ নন, সেই রাজ্যে কি করে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হতে পারে? এই প্রশ্ন বিরোধীরা তুলতে শুরু করেছেন। একদিকে যখন রাজ্যের এই অব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, ঠিক তখনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়েও। তিনি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তিনি কেন চুপ করে বসে আছেন? তিনি কেন এইভাবে জনপ্রতিনিধির ওপর হামলা হওয়ার কারণে করা পদক্ষেপ নিচ্ছেন না রাজ্যের বিরুদ্ধে? আর এসবের মাঝেই রাজ্যপালের ভূমিকা যে তাদের কাছে অত্যন্ত প্রশ্নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এই রাজ্যপালের পারফরম্যান্স নিয়ে যে তারা মোটেই খুশি নন, তা স্পষ্ট হয়ে গেল বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। আর সেখানেই তাকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন যে, শুধুমাত্র জনপ্রতিনিধিরা নন, সিআইএসএফ জওয়ানরা পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন। তাহলে এই বিষয়ে আপনি কি বলবেন? আর সেই প্রশ্নের উত্তরে সরাসরি রাজ্যপালের ভূমিকাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, “তাহলে এই রাজ্যে কি কোনো আইনের শাসন আছে? আমার মনে হয়, সাংবাদিক সম্মেলনের পর একটু রাজ্যপাল ভবনের কাছে যান। ওনার যদি শরীর ভালো থাকে, ওনার সঙ্গে কথা বলুন। আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি যখন এই কথা বলছেন, তখন তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজেই স্পষ্ট যে, রাজ্যপাল হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান সাংবিধানিক প্রধানের পক্ষ থেকে যে সমস্ত দায়িত্ব এবং কর্তব্য পালন করা উচিত ছিল, তা করা হয়নি। সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে মোটেই ঠিকমত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছেন না সিভি আনন্দ বোস। আর তার সম্পর্কে যে একটা চূড়ান্ত বিরক্তি বিজেপি দলের মধ্যে কাজ করছে, তা শমীক ভট্টাচার্যের এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট হয়ে গেল হলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।