প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এতদিন গণতন্ত্র থেকে শুরু করে সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মত একাধিক মন্তব্য করেছেন। তবে গতকাল নবান্ন থেকে তিনি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, তা কোনোমতেই মেনে নেওয়া যায় না। কেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে না, কেন তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেবে না নির্বাচন কমিশন, এই প্রশ্ন তুলে ইতিমধ্যেই সোচ্চার হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এমনকি আজ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী দপ্তরে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাস্তির দাবিতেও গর্জে উঠেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী এটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কথা বলেছেন, সেই সম্পর্কিত তথ্য প্রমান তাকে দিতে হবে। আর যদি আগামী সোমবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে তিনি সেই তথ্য প্রমাণ দিতে না পারেন, তাহলে নির্বাচন কমিশনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নিতে হবে কড়া পদক্ষেপ। আর যদি কমিশনও সেই রকম কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে তিনি নিজেই যে বড় কর্মসূচি করতে চলেছেন, সেই কথাও জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। মনোজ আগরওয়াল সম্পর্কে তার কাছে অনেক তথ্য রয়েছে বলে তিনি পরোক্ষে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। অনেকে বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পেরেছেন যে, রাজ্যের এই মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ম্যানেজ করার মত লোক নন। তিনি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করার চেষ্টা করছেন। আর তাতেই গাত্রদাহ শুরু হয়েছে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর। যার ফলস্বরূপ তিনি এখন ধমকি দিয়ে পরিস্থিতিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছেন বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। তবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে যেভাবে আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তার পরিপ্রেক্ষিতে কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে না, এবার সেই প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনের ওপরেই চাপ বাড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনোজ আগরওয়াল সম্পর্কে যা বলেছেন, সেই সম্পর্কে যদি সোমবার বিকেল ৫ টার মধ্যে প্রমাণ দিতে না পারেন, আর নির্বাচন কমিশন যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে দীপাবলীর পরে কয়েক হাজার লোক নিয়ে আসব। নিয়ম মেনে ২০০ মিটার দূরে জনতা থাকবে। আর ৫০ থেকে ৬০ জন এমএলএ এখানে নিচে বসে থাকবে। জ্ঞানেশ কুমার বা তার প্রতিনিধি না এলে উঠবো না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনের ওপরে নয়।” অর্থাৎ নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড় পেয়ে যাবেন, আইন যদি সকলের জন্য এক হয়, তাহলে কেন মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আলাদা হবে? এত বড় মন্তব্য করার পরেও কেন তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে না কমিশন? সেই সমস্ত প্রশ্ন তুলেই যদি সঠিক সময় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না হয়, তাহলে যে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে বিধায়কদের নিয়ে এসে তিনি অবস্থানে বসবেন, তা জানিয়ে দিয়ে রীতিমত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তো বটেই, এমনকি নির্বাচন কমিশনেরও চাপ বাড়িয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।