প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। কিন্তু আরজিকরের যে ঘটনা ঘটেছিল, তারপর যেভাবে রাজ্যের সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে নেমেছিল, তাতে অনেকেই নিশ্চিত ছিলেন যে, এরপর হয়তো এরকম কোনো ঘটনা ঘটবে না। আর ঘটনা ঘটলেও সরকার তাকে কড়া হাতে দমন করবে। কিন্তু এই রাজ্যে যে আইন শৃঙ্খলা নেই, এই রাজ্যে যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে মহিলাদের নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই, তা গতকাল দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এক তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটে গেল, তারপর আরও বেশি করে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। অন্তত তেমনটাই দাবি করছে বিরোধীরা। তবে প্রশ্ন একটাই যে, রাজ্যে কি লাগাতার এইভাবে নারী নির্যাতন চলতেই থাকবে? কেন এই প্রবণতা বন্ধ হচ্ছে না? কেন মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছে না প্রশাসন? আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রীতিমত তথ্য তুলে ধরে বুঝিয়ে দিলেন যে, অতীতে যে সমস্ত নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল, সেক্ষেত্রে যদি শাস্তি হতো, তাহলে এই ধরনের ঘটনা ঘটত না। কিন্তু এই রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ঘটনায় শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে যারা মহিলাদের অসম্মান করে তারা আরও বেশি করে সাহস পেয়ে যাচ্ছে এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর। আর সেই কারণেই দুর্গাপুর থেকে শুরু করে রাজগঞ্জের মত ঘটনা আবার ঘটে গেল এই রাজ্যের বুকে।
ইতিমধ্যেই গতকাল থেকে আবার গোটা রাজ্যবাসী সোচ্চার হয়েছে। দুর্গাপুরের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদে পথে নেমেছে বিরোধীরা। আর গতকাল সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও এই বিষয়ের সোচ্চার হয়েছেন। আরও বেশি করে মাতৃশক্তিকে পথে নামার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, বর্তমান সরকার এবং এই মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে নারী নির্যাতন যেভাবে বাড়ছে, যেভাবে শিশু কন্যারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, তাতে এই সরকারের গাফিলতি চরমভাবে দায়ী বলেই দাবি করেছেন তিনি। এক্ষেত্রে অতীতের একের পর এক ঘটনার কথা তুলে ধরে শুভেন্দু অধিকারী বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, এই সরকার কোনো ক্ষেত্রেই যারা অভিযুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আর তাই ক্রমাগত বাড়ছে নারী নির্যাতনের মত ঘটনা।
এদিন শুভেন্দু অধিকারীকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন যে, এবারেও কি তাহলে কোনোরূপ শাস্তি হবে না? আর তখনই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, “এর আগেও তো অনেক ঘটনা ঘটেছে। শাস্তি হয়েছে? একটা নাম বলুন তো! কুলতলি, চন্দননগর, মাটিগাড়া। হাসখালিতে সিবিআই নিয়েছে জন্য গ্রেপ্তার হয়েছে। কালিয়াগঞ্জ। কামদুনি তো ফাঁসির আদেশ কেস, কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ করে বেল করিয়ে দিয়েছে। আমি অপরাজিতা বিলের ওপরে নাম পড়ছিলাম। স্পিকার বাধা দিয়েছিল। আপনারা দেখেছেন লাইভে। ১৫ জন আইনজীবীর নাম পড়ছিলাম। বলুন, কার শাস্তি হয়েছে? থামবে কি করে? এই ডালিম মহম্মদদের থামাবেন কি করে? উত্তরপ্রদেশে থামাচ্ছে কি করে! এত বড় ২০ কোটির রাজ্য, ওরা থামাচ্ছে কি করে!” অর্থাৎ এই রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নেই, যারা ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটাচ্ছে, তাদেরকে শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার এবং তাদের প্রশাসনের সঠিক ভূমিকা নেই জন্যেই একের পর এক রাজ্যে নারী নির্যাতনের মত ঘটনা ঘটেই চলেছে। আর তার জন্যই যে রাজ্য প্রশাসনের এই ঢিলামি মনোভাব প্রধান ভাবে দায়ী, তা আরও একবার উল্লেখ করে নারী নির্যাতন কোনোভাবেই এই রাজ্যে বর্তমান সরকারের আমলে বন্ধ হবে না বলে স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।