প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
সত্যিই তো, এ কোন রাজ্যে বাস করছি আমরা? যেখানে ভাইফোঁটার দিন বোনেরা দাদার কপালে ফোঁটা দিয়ে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার শপথ নিচ্ছেন, সেদিনই খবর পাওয়া গেল রাজ্যের এক নামি সরকারি হাসপাতাল, বলা ভালো শ্রেষ্ঠ সরকারি হাসপাতাল বলে যাকে সবাই চেনে, সেই এসএসকেএম হাসপাতালে ভেতরে ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গিয়েছে। যা শুনে লজ্জায়, ঘৃণায় মুখ লোকাচ্ছে বাঙালি। এমনিতেই তো এসএসকেএম হাসপাতাল নামি হাসপাতাল। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজ্র আঁটুনি থাকার কথা। কিন্তু সেই নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফাক তালে এক ব্যক্তি, যিনি এখন এসএসকেএম হাসপাতালে কর্মরতই নন, তিনি কি করে সেই হাসপাতালে ঢুকে গেলেন? আর কি করেই বা এক নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহ করলেন? কার সাহসে এই সমস্ত ব্যক্তিরা একের পর এক মহিলাদের ওপর নির্যাতন করছেন! যাদের হাত থেকে বাঁচতে পারছেন নাবালিকা কন্যারাও? স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে. প্রশ্ন উঠছে, এত বড় সরকারি হাসপাতালে প্রশাসনের নজরদারির অভাব নিয়েও।
বলা বাহুল্য, আজ যখন উৎসবের মরশুমে রয়েছে বাঙালি, যখন ঘরে ঘরে ভাইফোঁটার মত উৎসব পালন হচ্ছে, তখন এক শিশু কন্যা রীতিমতো কাঁদছেন। কারণ কি? কারণ তার সঙ্গে ঘটে গিয়েছে এক ভয়াবহ ঘটনা। গতকাল দুপুরে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন এক ১৫ বছরের নাবালিকা। তার পরিবারের সঙ্গে সে চিকিৎসা করাতে এসেছিল। তার পরিবার যখন ওপিডির টিকিট করছিল, সেই সময় এক ব্যক্তি সেই নাবালিকাকে ভুলিয়ে ট্রমা কেয়ারের শৌচাগারে নিয়ে যায়। আর সেখানেই সেই ১৫ বছরের নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে যে, সেই ব্যক্তিকে যতদূর খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, সেই ব্যক্তির নাম অমিত মল্লিক। একসময় এই অমিত মল্লিক এসএসকেএম হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক ওয়ার্ড বয়ের কাজে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু এখন আর তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে সঙ্গে জড়িত নন। এখন সেই ব্যক্তি এনআরএস হাসপাতালে কাজ করেন। তবে যখন তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে কাজ করতেন, তখন তার ইউনিফর্ম ছিল। আর সেই ইউনিফর্মকে ব্যবহার করেই গতকাল সে এসএসকেএম হাসপাতালে ঢুকে এই অপকর্ম করেছে বাংলার শিশুকন্যার সঙ্গে।
ইতিমধ্যেই সেই অভিযুক্ত অমিত মল্লিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে প্রশ্ন উঠছে যে, সরকারি হাসপাতালের ভেতরে কিভাবে এই অপরিচিত ব্যক্তিরা ঢুকে যাচ্ছে? আর কিভাবেই বা এত অপকর্ম করছে তারা? তাহলে কোথায় হাসপাতালের ভেতরে নজরদারি? এসএসকেএম হাসপাতাল তো নামি হাসপাতাল। সেখানে কি করে এত বড় ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেল? তাহলে কি রাজ্যের স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই! এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং তার প্রশাসন কি কোনো দিকেই নজর রাখছেন না! যার ফলে আরজিকর কাণ্ডের পরবর্তীতে রাজ্যের একের পর এক সরকারি থেকে বেসরকারি হাসপাতালের ভেতরে ঘটে যাচ্ছে এই রকম ভয়াবহ ঘটনা! আর প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যে, বাংলার মেয়ে, বোন, শিশুকন্যা কারওর নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই! এসএসকেএম হাসপাতালের ভেতরে যদি কোনো অপরিচিত কোনো ব্যক্তি, যে হাসপাতালের সঙ্গে এখন আর জড়িত নয়, সে ঢুকে যায় এবং সেখানে কারও কোনো নজরদারি না থাকে, তাহলে কার ভরসায় মহিলারা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যাবেন? একজন নাবালিকার সঙ্গে যে ঘটনা ঘটে গেল, তাতে না হয় অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হলো। কিন্তু সেই নাবালিকার যে ক্ষতি হয়ে গেল, সেই ক্ষতিপূরণ কি দিতে পারবে এই রাজ্যের প্রশাসন? যারা এই সমস্ত অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত, তারা তো সবসময় চেষ্টা করবে এই ধরনের অপকর্ম করার। কিন্তু তাদেরকে আটকানোর জন্য তো প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে প্রশাসন কোথায়? কেন ভাই ফোটার আগের দিন এই রাজ্যের বুকে কোনো এক নাবালিকা শিশু কন্যার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত থাকবে না? কেন বার ষবার করে এই রাজ্যে বোনেদের ওপর নেমে আসবে বিপদের সংকেত? যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে বাংলার মেয়ে বলে দাবি করেন, তার আমলে কেন বারবার বাংলার শিশু কন্যা থেকে শুরু করে মা-বোনেদের সম্ভ্রম নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হবে? দিনের শেষে এই সমস্ত প্রশ্নই তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।