প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের বুকে এত অগণতান্ত্রিক ঘটনা ঘটে গেলেও কেন কেন্দ্রীয় সরকার সঠিক পদক্ষেপ নিচ্ছে না, এই প্রশ্ন বঙ্গ বিজেপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল। কিন্তু এবার রাখঢাক না করেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যেই এই ব্যাপারে মুখ খুলে রীতিমত অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একসময় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলেন তিনি। তবে সেই পদ থেকে পদত্যাগ করে শুধুমাত্র এই রাজ্যের সুশাসন আনার জন্য বিজেপিতে যুক্ত হয়েছিলেন অভিজিৎ গাঙ্গুলী। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন যে, পশ্চিমবঙ্গে সুশাসন আনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে এবং বাংলায় যে প্রশাসন বর্তমানে শাসনব্যবস্থা চালাচ্ছে, তাদের জব্দ করার জন্য তারা কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই রকম কিছু দেখতে না পাওয়ার কারণে এবার আর মুখ বন্ধ করে থাকতে পারলেন না তমলুকের বিজেপি সাংসদ। বরঞ্চ যে লক্ষ্য নিয়ে তিনি রাজনীতির ময়দানে নেমেছিলেন, সেই লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের ঘাড়েই দায় চাপালেন তিনি।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে এতদিনে এরকম বহু ঘটনা ঘটে গিয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে কড়া পদক্ষেপ নিতেই পারত কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু তারা কেন কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে না? তাহলে কি বাম এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের সঙ্গে তৃণমূলের সরকারের একটা সেটিং রয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, সেটা সত্যি? এই প্রশ্ন নীচুতলায় যারা বিজেপি কর্মী রয়েছেন, যারা প্রতিনিয়ত লড়াই করছেন, তাদের মধ্যে মাঝেমধ্যেই দেখা দিতে শুরু করেছিল। আর এবার নীচুতলার বিজেপি কর্মীদের সেই মনের কথাই সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলে দিলেন তমলুকের বিজেপি সাংসদ। স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়ে দিলেন, তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন এই রাজ্যের অরাজকতার পরিস্থিতি বন্ধ করার জন্য, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য। কিন্তু সেই লক্ষ্যের ধারে কাছে তিনি যেতে পারেননি। আর এর জন্য একমাত্র দায়ী কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারে যখন বিজেপি রয়েছে, তখন বিজেপিরই একজন সাংসদ হিসেবে সেই কেন্দ্রকেই দায়ী করে অভিজিৎ গাঙ্গুলী সর্বভারতীয় বিজেপি নেতৃত্বের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দিলেন বলেই মনে করছেন একাংশ।
এদিন এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তমলুকের বিজেপি সাংসদ বলেন, “আমার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার এবং তাদের হয়ে ভোটে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্য ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার সব রকমের ব্যবস্থা করা হবে। সেই উদ্দেশ্যের ধারে কাছে আজ পর্যন্ত আমি গিয়ে উঠতে পারিনি। তার দায় মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের। কেন্দ্রীয় সরকার এর জন্য কিছু করেনি।” অর্থ্যাৎ একটি প্রদেশে যে সমস্ত ঘটনা ঘটছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের অনেক কিছু করার ক্ষমতা ছিল। কিন্তু কেন্দ্র সেই কাজ না করার কারণে যে তিনি প্রচণ্ড পরিমাণে হতাশ এবং ক্ষুব্ধ, তা নিজের এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়েই বুঝিয়ে দিলেন হেভিওয়েট বিজেপি সাংসদ। আর তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রকাশ্যে যে কথা বলেছেন, সেটাই নীচু তলায় বাংলায় লড়াই করা বিজেপি কর্মীদের মনের কথা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।