প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
প্রায় তিন বছরের মত সময় জেলে বন্দী ছিলেন তিনি। জেলে থাকার সময় একদিনের জন্যও দলের বিরুদ্ধে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। কিন্তু তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর দল তার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়। তাকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। তবে প্রায় দীর্ঘ সময় পর গতকাল জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী। ইতিমধ্যেই তারিখ দলনেত্রীকে দেওয়া একটি চিঠি সামনে এসেছে। যেখানে জানা যাচ্ছে যে, দলের কোন সংবিধান মেনে তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন তিনি। আর দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জেল মুক্তির পরেই আজ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে তিনি সাক্ষাৎকার দিতে শুরু করেন। আর সেখানেই তিনি এক সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন যে, দল তার সঙ্গে না থাকলেও, তিনি সব সময় দলের সঙ্গে আছেন।
ইতিমধ্যেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেল মুক্তি হলেও তাকে দল আবার গ্রহণ করবেন কিনা, তিনি আবার দলের হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরতে পারবেন কিনা, তা নিয়েই একটা বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। বিরোধীরা দাবি করছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের একার দুর্নীতির কারণে তো তিনি জেলে যাননি। এটা একটা সংগঠিত দুর্নীতি। ফলে তৃণমূলকে এর দায় নিতেই হবে। তবে পার্থবাবুর মনে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে যে, দীর্ঘদিন ধরে জেলে থাকার পর দল তাকে আবার গ্রহণ নাও করতে পারে। কেননা এমনিতেই তার ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। ফলে ২০২৬ এর নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক ইস্যু তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে যদি দল তাকে আবার সক্রিয় রাজনীতি করার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দেয়, তাহলে বিরোধীরা এই বিষয়টি হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আরও করে ময়দানে নেমে পড়বে। তাই এই সমস্ত কিছু উপলব্ধি করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল তৃণমূল কংগ্রেস পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যে এখনও দূরত্ব বজায় রাখবে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। আর তার মধ্যেই কাঁঠালের আঠার মত যেন দলের সঙ্গে সেটে থাকার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে গেলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিন এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে দলের সঙ্গে তিনি যে এখনও পর্যন্ত রয়েছেন, তা জানিয়ে দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “তৃণমূল আমার দল নয়, এটা কে বললো? আপনারা বারবার করে প্রশ্ন করেছেন যে, দল তো আপনার সঙ্গে নেই। আর আমি বলেছি, দল আমার সঙ্গে না থাকলেও, আমি দলের সঙ্গে সবসময় আছি। বিধানসভা তো জনপ্রতিনিধিদের বলবার জায়গা। আমি সাড়ে তিন বছর ধরে কিছু বলতে পারিনি। আমায় বলতে দাও বলে চিৎকার করেছি। আমি আমার বিধানসভা কেন্দ্রের প্রত্যেকটি মানুষের কাছে দায়বদ্ধ।” আর পার্থবাবুর এই মন্তব্যের পরেই প্রশ্ন উঠছে যে, তাহলে কি দল তার সঙ্গে ক্রমাগত দূরত্ব স্থাপন করছে? তিনি জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পরেও কি দল তার সাসপেনশন ওঠানোর ব্যাপারে কোনো কথা তার সঙ্গে বলেনি? আর সেই কারণেই কি দল যাতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে, তিনি যাতে দলের সঙ্গে থাকতে পারেন, তার জন্য কাঁঠালের আঠার মত সেটে থাকার মরিয়া চেষ্টা শুরু করে দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী? এখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই কাতরতার পর তৃণমূলের পক্ষ থেকে তার সাসপেনশন তুলে নেওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয় কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।