প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খুব ভালোমতই বুঝতে পারছেন যে, এবার তার সরকারের বিরুদ্ধে যে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া কাজ করছে, তাতে ২০২৬ এর ভোট বৈতরণী পার হওয়া কতটা কঠিন। একদিকে এসআইআর, অন্যদিকে বিভিন্ন ইস্যু তার সরকারের বিরুদ্ধে রয়েছে। ফলে অবৈধ ভোটারদের নাম বাদ গেলে এবং বিজেপি যদি ঠিকমত কাজ করতে পারে, তাহলে চতুর্থবারের জন্য তার আর মুখ্যমন্ত্রী পদে ফিরে আসা হচ্ছে না। আর সেই বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেই কি এখন ঘন ঘন মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ আসা এবং উত্তরবঙ্গের যে শক্ত ঘাঁটি বিজেপির রয়েছে, সেখানে ঘাসফুল ফোটানোর চেষ্টা? আর সেই কারণেই কি উত্তরবঙ্গে মহাকাল মন্দিরের প্রতিশ্রুতি থেকে শুরু করে বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটার রিচা ঘোষের নামে স্টেডিয়াম সহ একাধিক প্রতিশ্রুতি দিতে শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? তবে চেষ্টা করেও যে এসবে লাভ নেই, এপ্রিলেই যে প্রাক্তন হয়ে যাবেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী, উত্তরবঙ্গের মাটিতে পা রেখে পাল্টা জানিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মানুষ অনেক স্বপ্ন দেখেছিল। তারা ভেবেছিল যে, এই সরকার অন্তত বাম সরকারের মত হবে না। এরা অন্তত বেকার যুবকদের হাতে কাজ দেবে, তাদের চাকরি সুনিশ্চিত করবে। কিন্তু তৃণমূল সরকারের আমলে যে সমস্ত বেকাররা চাকরি পাওয়ার আশা করেছিলেন, তাদের এখন সর্বস্বান্ত হয়ে যাওয়ার জোগার। চাকরি পেয়েও অনেককে আবার নতুন করে প্রমাণ করতে হচ্ছে যে, তারা যোগ্য কিনা! আর এই সমস্যার মুখে পড়েছেন বেকাররা, তার একটাই কারণ। কারণ, তৃণমূল সরকারের দুর্নীতি। তাদের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পর্যন্ত কিছুদিন আগে পর্যন্ত জেলে ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই দুর্নীতি যে তৃণমূল সরকারের পথের একটা বড় কাঁটা হতে চলেছে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে, তা গোটা তৃণমূল পরিবার খুব ভালো মতই জানে। তাই এখন নিজেদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ঘোষণা করে মানুষের নজর ঘোরানোর একটা চেষ্টা মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী করে চলেছেন। বিরোধীরা অন্তত তেমনটাই দাবি করছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর যে ক্যারিশমা রয়েছে, তাতে তিনি এই ঘোষণা করে কি শেষ পর্যন্ত আবার বাজিমাত করে দেবেন? আবার কি চতুর্থবারের জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী হবেন! বিভিন্ন মহলে এই চর্চা চলছে। এমনকি বিজেপির মধ্যেও গুঞ্জন তৈরি হয়েছে যে, শেষ পর্যন্ত কি ক্ষমতায় আসতে পারবে তারা? তবে উত্তরবঙ্গে পা রেখেই শুভেন্দু অধিকারী দৃপ্ত কণ্ঠে জানিয়ে দিলেন, এপ্রিল মাসেই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় আসবে বিজেপি। আর পশ্চিমবঙ্গে প্রকৃত উন্নয়ন যা হওয়ার, তা বিজেপির হাত ধরেই হবে।

গতকাল উত্তরবঙ্গে পা রাখেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই তাকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন যে, মুখ্যমন্ত্রী তো কিছুদিন আগে উত্তরবঙ্গে এসেছিলেন এবং সেখানে এসে তিনি বলেছিলেন যে, মহাকাল মন্দির হবে এবং রিচা ঘোষের নামে স্টেডিয়াম হবে। আর সেই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়েই শুভেন্দুবাবু পাল্টা বলেন, “মিথ্যা কথা বলেছেন। এই মুখ্যমন্ত্রী প্রাক্তন হবে এপ্রিল মাসে। যা করার আমরাই করব। মমতা ব্যানার্জির করার সুযোগ নেই। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ঘোষণা হবে। উনি আর দু আড়াই মাস কাজ করতে পারবেন। ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখে ফাইনাল ভোটার লিস্ট। ফেব্রুয়ারির যে কোনো সময় নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাবে।” অর্থাৎ এই অল্প সময়ের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন যে, তিনি আর ক্ষমতায় হয়ত থাকতে পারবেন না। আমি সেই কারণেই দিশেহারা হয়ে এখন উন্নয়নের বিভিন্ন ঘোষণা করে যে উত্তরবঙ্গ বিজেপির শক্ত খাঁটি, সেখানে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে দিনের শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাক্তন হওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা বলে আবারও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।