প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন যাকে প্রয়োজন, তখন তাকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেন। আবার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলেই তিনি তাকে ছুঁড়ে ফেলে দেন। বিরোধী দলে যারা রয়েছেন, তারা বিভিন্ন সময় মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এই কটাক্ষ করে থাকেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বারবার করে বলে এসেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘুদের ভোটের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। কিন্তু সংখ্যালঘুদের কোনো উন্নতি তিনি এবং তার সরকার করেননি। আর আজ তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর সংখ্যালঘুদের ভোটে জিতে আসলেও, একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ তথা বিধায়ক যখন বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করতে চাইছেন, তখন কেন তাকে সাসপেন্ড করা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন হুমায়ুন কবীর। শুধু তাই নয়, তৃণমূল তাকে সাসপেন্ড করার পর তিনি যে নতুন দল গঠন করতে চলেছেন, সেই কথাও জানিয়ে দিয়েছেন ভরতপুরের বিধায়ক। তবে যেদিন তাকে সাসপেন্ড করা হলো, সেদিনই মুর্শিদাবাদে দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই কিছুক্ষণ আগে দল থেকে সাসপেন্ড হয়ে যাওয়া বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের উদ্দেশ্যে কিছুটা খোঁচা দিলেন তৃণমূল নেত্রী?
বেশ কিছুদিন ধরেই দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে আসছিলেন হুমায়ুন কবীর। এমনকি দলকে সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি তিনি জানিয়ে দেন, আগামী ৬ তারিখ তিনি বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করবেন। আর এটাই তৃণমূলের কাছে যথেষ্ট অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আজ যখন সেই হুমায়ুন কবীর দলের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন, ঠিক সেই সময় তিনি খবর পান যে, ববি হাকিম সাংবাদিক বৈঠক করে তাকে সাসপেন্ড করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। আর তারপরেই সেই সভাস্থল ছেড়ে বেরিয়ে আসেন হুমায়ুনবাবু। বাবরি মসজিদ শিলান্যাসের কথা বলার জন্য তাকে সাসপেন্ড করা হলেও, তিনি যে এই শিলান্যাস করবেন, সেই কথাও জানিয়ে দেন ভরতপুরের বিধায়ক। আর সাসপেন্ড হওয়ার পর দলের সভায় আমন্ত্রণ পাওয়ার পরেও যেখান থেকে বেরিয়ে গেলেন হুমায়ুন কবীর, তার কিছুক্ষণ পরেই সেই সভা থেকে কি নাম না করে সেই হুমায়ুন কবীরকেই আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
এদিন মুর্শিদাবাদের সভা থেকে ইতিহাসের কথা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা জানেন সিরাজদৌল্লা মীরজাফরের মাথায় মুকুট পড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, তুমি ভেঙ্গো না। স্বাধীনতাকে চলে যেতে দেও না। সম্মান রক্ষা করো। আমি আমার মুকুট তোমার হাতে তুলে দিচ্ছি। কিন্তু তুমি আমাদের স্বাধীনতাকে রক্ষা করো। কিন্তু সেদিন সিরাজউদ্দৌলা এত বড় সম্মান দেখানোর পরেও মীরজাফর সেটা করতে দেননি। তবে সিরাজদ্দৌলার নাম ঘরে ঘরে পূজিত হয়। তার কারণ তিনি চেয়েছিলেন, দেশটা ভালো থাকুক। এটা ইতিহাস। মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষ দাঙ্গা পছন্দ করে না। অনেক সময় আমরা বড় বড় দাঙ্গা দেখলেও মুর্শিদাবাদের মানুষ কিন্তু দাঙ্গার রাজনীতি করেন না। আমরা সব ধর্মকে সম্মান করি। কিন্তু আমরা সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সম্মান জানাই না। আমরা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। সে যেই হোক। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমরা রক্ষা করতে চাই। এটা আমাদের সংবিধান শিখিয়েছে।”