প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- কিছুদিন আগেই ইডির পক্ষ থেকে নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। বিশেষ সূত্র যতটুকু খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, তিনি সরাসরি নিয়োগ দুর্নীতির টাকা নিতেন। এক্ষেত্রে মাঝে কোনো এজেন্ট থাকতো না। তবে বিরোধীদের অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন যে, নিয়োগ দুর্নীতির এই যে বিপুল অংকের টাকা এই তৃণমূল বিধায়ক তুলতেন, সেই টাকা কি তিনি আরও অন্য কারও কাছে পাঠাতেন? আরও বড় মাথার কাছে কি সেই টাকা যেত? আর এসবের মধ্যেই আজ সেই জীবনকৃষ্ণ সাহাকে আবার আদালতে তোলা হচ্ছে। আর আজই তার সঙ্গে দেখা করতে এলেন সেই মুর্শিদাবাদেরই ভরতপুরে তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, একজন তৃণমূল বিধায়ক নিজেই যখন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তার থেকে যখন দশ হাত দূরত্ব বাড়াচ্ছেন সকলে, তখন হঠাৎ করে কেন হুমায়ুন কবীর কেন তার সঙ্গে দেখা করতে এলেন? এত কেন দরদ উথলে পড়ছে এই তৃণমূল বিধায়কের?
ইতিমধ্যেই তৃণমূল বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার কুকীর্তি নিয়ে চর্চা হয়েছে রাজ্যজুড়ে। বারবার করে তাকে যখনই তদন্তকারী সংস্থা জেরা করতে এসেছে, তখনই তিনি যেভাবে মোবাইল ফেলে দিয়েছেন, তা নিয়ে গোটা অনেকেই কটাক্ষ করেছেন। সকলেই জেনে গিয়েছেন যে, এই জীবনকৃষ্ণ সাহা হয়ত বড় কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। আর সেই সমস্ত তথ্য তার মোবাইল ফোনে রয়েছে জন্যেই ইডি হোক বা সিবিআই, যখনই তার বাড়িতে এসেছে, তিনি সবার আগে সেই মোবাইল ফোন পাশের পুকুর অথবা জঙ্গলে ফেলে দিয়েছে। তবে প্রথমে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ছাড়া পাওয়ার পর ইডির তদন্তে আবার তিনি গ্রেফতার হয়েছেন। আর আজ তার জেল হেফাজত শেষে তাকে আবার আদালতে তোলা হয়েছে। আর সেখানেই তার সঙ্গে দেখা করতে এলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। কেন হঠাৎ করে একজন জেলে থাকা গ্রেপ্তার হয়ে যাওয়া বিধায়কের সঙ্গে তিনি দেখা করতে এলেন? হুমায়ুনবাবুর যুক্তি, আমার পাশের বিধানসভার বিধায়ক তিনি। এখনও পর্যন্ত তো দোষ প্রমাণিত হয়নি। তাই আজ বিধানসভায় এসেছিলাম। সেই কারণে দেখা করে গেলাম।
তবে হুমায়ুনবাবু এই সমস্ত যুক্তি দিলেও তা মানতে নারাজ বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, কথায় আছে না, রতনে রতন চেনে। হয়ত হুমায়ুনবাবু ভয়ে রয়েছেন। কারণ যে কোনোদিন তার দুর্নীতির তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে। আর সেই সমস্ত কিছু জীবনকৃষ্ণ সাহার কাছে রয়েছে কিনা, কে বলতে পারে! হয়ত জীবনবাবু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে হুমায়ুনবাবু সম্পর্কে যাতে বাড়তি কোনো তথ্য না দিয়ে দেন, তার জন্যই হয়ত তার সঙ্গে দেখা করে আগেভাগেই সেই কথা জানিয়ে দিতেই এসেছিলেন এই তৃণমূল বিধায়ক। তা না হলে হঠাৎ করেই একজন বিধায়ক, যিনি দুর্নীতিতে জড়িত, যিনি বারবার করে জেলে যাচ্ছেন, তার সঙ্গে দেখা করার জন্য দরদ উথলে পড়ছে আর এক তৃনমূল বিধায়কের? এত ভালো মানুষ অন্তত তৃণমূল কংগ্রেসে নেই। কটাক্ষ করে তেমনটাই বলছে বিরোধীরা। তবে সত্যিই কি অন্য কোনো কারণে নয়? শুধুমাত্র ব্যক্তি সম্পর্কের জন্যই জীবনকৃষ্ণ সাহার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন হুমায়ুন কবীর, নাকি ভেতরে অন্য কোনো রহস্য রয়েছে? প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও।