প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে গণতন্ত্র বলে যে কিছু নেই, তা প্রতিমুহূর্তে প্রমাণিত হয়েছে। কিছুদিন আগেই নাগড়াকাটায় ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে রক্তাক্ত হতে হয় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুকে। গোটা ঘটনায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ কর্মসূচি সংগঠিত করেছে বিজেপি। একজন আদিবাসী সাংসদকে কেন এইভাবে আক্রমণ করা হলো, তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। শুধুমাত্র তিনি বিজেপির জনপ্রতিনিধি বলেই কি আজকে তার নিরাপত্তা এই রাজ্যের মাটিতে নেই, তা নিয়েও সোচ্চার হয়েছে বিরোধীরা। আর তার মাঝেই যখন সেই খগেন মুর্মু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তখন ভাইফোঁটার দিন দিদি হিসেবে নিজের কর্তব্য পালন করে নিজের দলেরই সাংসদকে সেই হাসপাতালে গিয়ে ভাই ফোঁটা দিলেন বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। আর এই ছবি সামনে আসার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল ও প্রশাসনকে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিরোধীরা।

ইতিমধ্যেই গোটা রাজ্যবাসী জেনে গিয়েছেন যে, নাগরাকাটায় কিছুদিন আগে কি ঘটনা ঘটেছে। যেখানে ত্রাণ বিলি করতে গিয়েছিলেন বিজেপির দুইজন জনপ্রতিনিধি খগেন মুর্মু এবং শংকর ঘোষ। সেখানে তাদের ওপর বিধ্বংসী হামলা হয়। পরবর্তীতে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে খগেনবাবুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনও পর্যন্ত তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন। তার চোখের নিচে গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে খবর। আর দলেরই একজন সতীর্থ তথা একজন সাংসদ যখন এইভাবে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি তখন দিদি হিসেবে নিজের কর্তব্য পালন করে সেই সাংসদের পাশে দাঁড়িয়ে তার মনোবলকে আরও বাড়িয়ে দিতে হাসপাতালে পৌঁছে গেলেন বিজেপি বিধায়ক শ্রীরুপা মিত্র চৌধুরী। যেখানে খগেন মুর্মুকে সেই হাসপাতালেই ভাইফোঁটা দিলেন তিনি।

আর এই দৃশ্য সামনে আসার পরেই তৃণমূল দল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে বাংলার মেয়ে বলে দাবি করেন। তাহলে তার আমলে যে বাংলার ভাইরা সুরক্ষিত নয়, তা তো কিছুদিন আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বোনেদের নিরাপত্তা তো এমনিতেই তলানিতে। কিন্তু বাংলার একজন জনপ্রতিনিধি, একজন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ একজন সাংসদ যেভাবে রক্তাক্ত হয়েছেন, তারপরেও এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যিনি নিজেকে দিদি বলে দাবি করেন, তিনি নিজের কর্তব্য পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত যারা মূল অভিযুক্ত, তারা গ্রেফতার হয়নি বলেই দাবি করছে বিরোধীরা। তাই সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা সকলের দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই রীতিমতো লজ্জায় ফেলে দিয়ে আক্রান্ত সাংসদের পাশে দাঁড়িয়ে ভাই ফোঁটার দিনে তাকে ফোটা দিয়ে নিজের কর্তব্য পালন করলেন বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। কিন্তু এই কাজ আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বাংলার দিদি, বাংলার মেয়ে বলে নিজেকে যিনি দাবি করেন, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা উচিত ছিল এবং যদি তিনি সত্যিই সকলের দিদি হয়ে থাকতেন, তাহলে খগেন মুর্মুর ওপর যারা হামলা করেছে, এই ভাইফোঁটার দিনে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের দায়িত্ব পালন করে তাদের প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করে জেলে ঢোকানোর নির্দেশ দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিতেন যে, তিনিই প্রকৃত রাজধর্ম পালন করেছেন, তিনিই প্রকৃত দিদি হয়ে উঠেছেন। কিন্তু সেই কাজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেখতে পাওয়া যায়নি বলেই খোঁচা দিচ্ছে বিরোধীরা।