প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
প্রায় সাড়ে তিন বছর জেল খেটে আসা একটি মানুষকে নিয়ে খবর করতে কারোরই ইচ্ছে করে না। সংবাদমাধ্যমে দিনভর সেই মানুষটিকে টিকিয়ে রাখার মত মানসিকতা অন্তত সাংবাদিক কুলের নেই। কিন্তু কখনও কখনও কিছু কিছু খবর করতে হয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় দুর্নীতি করে জেল খেটেছেন, এটা সকলেই জানেন। তবে বিরোধীরা প্রথম থেকেই দাবি করছেন যে, এই একা দুর্নীতি তো পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নয়। তিনি তো একা দুর্নীতি করতে পারেন না। এর পেছনে যারা রয়েছে, তাদেরকে ধরতে হবে। কারণ এটা তৃণমূল দলের সংগঠিত দুর্নীতি। বারবার করে বিরোধীদের নেতাদের গলায় এই কথা শোনা গিয়েছে। সম্প্রতি সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় বাড়ি ফিরে আসার পর গতকাল একাধিক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। আর সেখানে তার এই যে কারাবাস এবং তার এই যে পরিণতি, তার জন্য নিজের আনুগত্যকেই দায়ী করে বসেছেন তিনি। আর এখানেই প্রশ্ন যে, কিসের আনুগত্য? কার দিকে ইঙ্গিত করছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী?
তৃণমূল দলের একসময় মহাসচিব, রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী, পরিষদীয় মন্ত্রী, এমনকি শিক্ষামন্ত্রীর মত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর সামলেছেন তিনি। কিন্তু এখন দলের সাসপেন্ড হওয়া নেতা হিসেবেই বাড়িতে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন জেল খেটে আসার পর তার সঙ্গে যে দল যোগাযোগ করেছে নিজে থেকে, এমনটাও খবর পাওয়া যায়নি। আর এই পরিস্থিতিতে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে এই পরিস্থিতির জন্য তার আনুগত্য দায়ী বলেই দাবি করলেন পার্থবাবু। আর এখানেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।
তাদের বক্তব্য, বারবার তো পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজের নেত্রীর কথা বলেছেন। দলের প্রতি এখনও তিনি নিষ্ঠাবান বলেই দাবি করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই নিজের আনুগত্য তার এই পতনের জন্য দায়ী, এই কথা বলে কি তিনি নিজের দলের দিকেই ইঙ্গিত করতে চাইলেন? তৃণমূল দলের সুপ্রিমোকেই কি ঘুরিয়ে কথা শুনিয়ে দিলেন? কেননা প্রায় সাড়ে তিন বছরের মত সময় জেলে থাকলেও, পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিন্তু একবারের জন্যও দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেননি। স্বাভাবিকভাবেই এতদিন পর জেল থেকে বেরিয়ে আসার পর দল তার সঙ্গে যোগাযোগ না করলেও, তিনি এখনও পর্যন্ত দলের সঙ্গে আছেন বলেই দাবি করছেন। আর এই পরিস্থিতিতে তার এই করুন অবস্থার জন্য আনুগত্য দায়ী বলে কি নিজের দলকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী? প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।