প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
সম্প্রতি খড়্গপুরে প্রকাশ্য রাস্তায় প্রবীণ বাম নেতা অনিল দাসকে ব্যাপক মারধর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলের বিরুদ্ধে। যে ঘটনার পরেই গোটা রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় তৈরি হয়। সকলের মধ্যেই প্রশ্ন ছিল যে, প্রবীণ বাম নেতার যদি কোনো দোষই থাকবে, তাহলে বয়সে এত বড় একজন মানুষকে কেন রাস্তায় এইভাবে মারধর করলেন তৃণমূল নেত্রী? কেন তিনি সংশ্লিষ্ট জায়গায় অভিযোগ জানালেন না? কেন নিজের হাতে আইন তুলে নিলেন? আর এসবের মধ্যেই বিতর্কের মুখে পড়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই বেবি কোলেকে প্রথমে শোকজ করা হয়। পরবর্তীতে তিনি শোকজের উত্তর দিয়ে জানান যে, সেই প্রবীণ বাম নেতা তাকে হেনস্থা করতেন। তার প্রতিবাদ করতে গিয়েই তিনি তাকে মারধর করেছেন। তবে তার এই খেলো যুক্তি অনেকেই মানতে পারেননি। বিরোধীদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল যে, শোকজের উত্তর দিয়েই কি তৃণমূল নেত্রীর সাত খুন মাফ হয়ে যাবে? তবে এবার বিতর্কের মুখে পড়ে সেই নেত্রীকে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। আর তারপরেই আরও বড় প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।
জানা গিয়েছে, এদিন বিতর্কের মুখে পড়ে শোকজের উত্তরের পরেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে সেই বেবি কোলেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় গিয়ে মেদিনীপুরের সেই কথা জানিয়ে দেন তৃণমূলের রাজ্যের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। এদিন তিনি বলেন, “দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নির্দেশেই বেবি কোলেকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলো। বাম নেতাকে মারধরের ঘটনায় তাকে শোকজ করা হয়েছিল। শোকজের জবাব দেখার পরেই দল তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” আর এই ঘটনার পরেই প্রশ্ন উঠছে যে, তৃণমূল হয়ত ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে এখন দলের এই নেত্রীকে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এবার প্রশাসন কি কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে?
একাংশ বলছেন, ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেত্রী তাকে প্রকাশ্য রাস্তায় মারধর করার কারণ এবং পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছেন বাম নেতা অনিল দাস। যার ফলে আরও চাপে পড়ে গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। আর তাই বাধ্য হয়েই দলের এই নেত্রীকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে তৃণমূল রাজনৈতিকভাবে নিজেদের মুখ বাঁচানোর চেষ্টা করলেও, তাদের প্রশাসনই রাজ্যে রয়েছে। রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীর নাম তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি আবার তৃণমূল নেত্রী। তাই শুধুমাত্র বহিষ্কার করে কি হবে? যদি সত্যিই রাজ্যে সুশাসন থাকে, তাহলে তৃণমূলের এই বহিষ্কৃত নেত্রীকে এবার কি গ্রেফতার করতে পারবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।