প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
যে বাংলায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীতে ভরে গিয়েছে, যে বাংলায় মাঝেমধ্যেই বিস্ফোরণ এবং বারুদের গন্ধ পাওয়া যায়, সেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এখন প্রশ্ন তুলছে দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে। নিঃসন্দেহে দিল্লিতে যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এতগুলো মানুষের প্রাণ চলে যাওয়া কোনোমতেই স্বাগত জানানোর মত ঘটনা নয়। কিন্তু বর্তমানে দেশে যে সরকার রয়েছে, সেই সরকারের কাছ থেকে বারবার দেশের মানুষ একটা বিষয় দেখেছে যে, যখনই দেশে প্রত্যাঘাত হয়েছে, যখনই দেশে বিস্ফোরণ বা প্রাণহানির মত কোনো ঘটনা ঘটেছে বা দেশদ্রোহিমূলক কাজ হয়েছে, তখনই প্রত্যাঘাত করে কড়া ভাষায় তার জবাব দিয়েছে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার। আর পশ্চিমবঙ্গে দেখা গিয়েছে যে, বোমা, বারুদের গন্ধ যেন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই দিল্লিতে লালকেল্লার সামনে যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে হয়ত যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের আরও বড় কোনো টার্গেট ছিল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দক্ষতার জন্য হয়ত তারা সেই টার্গেট পূরণ করতে পারেনি। কিন্তু তারপরেও সেই ঘটনা যে নিন্দাজনক, তা ও অকপষপটে স্বীকার করে নিচ্ছেন বিজেপি নেতারাও। তবে যে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীরা এখন দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনাকে হাতিয়ার করে রাজনীতি করতে ময়দানে নেমে পড়েছেন এবং অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করছেন, এবার তাদের নৈতিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন সুকান্ত মজুমদার।

ইতিমধ্যেই দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। দফায় দফায় বৈঠকের পাশাপাশি যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাদের যে রেয়াত করা হবে না, তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেননা দেশকে রক্ষা করার জন্য বর্তমান বিজেপি সরকার বা কেন্দ্রের ভূমিকা অত্যন্ত সদর্থক। এর আগেও দেখা গিয়েছিল, অতীতে যখন পহেলগাঁও হামলা হয়েছিল, তারপর পাকিস্তানকে কি করে জবাব দিতে হয়, তা দেখিয়ে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তাই দেশকে রক্ষা করার জন্য বর্তমান সরকার এবং নরেন্দ্র মোদীর ওপর যথেষ্ট ভরসা রয়েছে দেশবাসীর। তবে এর মাঝেই দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনার সামনে আসতেই এই রাজ্যে শাসক দলের কিছু নেতারা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেছেন। তারা দাবি করছেন, দিল্লির নিরাপত্তা কোথায়? কেন দিল্লিতে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে? কেন মানুষ নিরাপদ নয়? তবে তৃণমূলের মুখে যে এই সমস্ত কথা মানায় না, এবার তা যুক্তি সহকারে বুঝিয়ে দিলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি।

এদিন দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের যে সমস্ত আক্রমণ এবং অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি, সেই বিষয়ে সুকান্ত মজুমদারকে প্রশ্ন করা হয়।‌ আর সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “দেখুন যে বিস্ফোরণ হয়েছে, তাতে কিছু মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু আমাদের এজেন্সিরা এর থেকেও একটি বড় ঘটনা ঘটা থেকে কিন্তু আটকাতে পেরেছে। একটি মানুষের মৃত্যুও মেনে নেওয়া যায় না এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যারা অপরাধী, তাদেরকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা ভারতবর্ষের সরকার করবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যারা বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীকে লুকিয়ে রাখতে সহায়তা করে, যারা রোহিঙ্গাদের এখানে রাখতে উৎসাহ দেয়, যে রাজ্য সরকারের নাকের ডগা থেকে মুজিবর রহমানের খুনি কেন্দ্রীয় এজেন্সি দ্বারা গ্রেপ্তার হয় এবং রাজ্য সরকারের পুলিশ জানতে পর্যন্ত পারে না, যে রাজ্য সরকারের আন্ডারে পাকস্থানের নাগরিক ভারতীয় নাগরিক সেজে বছরের পর বছর বসে থাকে, সেই সরকারের কোন একজনের কি নৈতিক অধিকার আছে এই বিষয়ে প্রশ্ন তোলার?” অর্থাৎ যারা বাংলাকে সুরক্ষিত রাখতে পারে না, অর্থাৎ যারা বাংলার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, যারা প্রতিনিয়ত অবৈধ বাংলাদেশি এই পশ্চিমবঙ্গে থাকলেও, তাদের নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নয়, সেই তৃণমূল সরকার এবং তার দলের নেতারা দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে অন্তত এত বড় বড় কথা বললে, তা আর যাই হোক, জনমানসে নীতিগত বাক্য বলে গ্রহনযোগ্য হবে না। নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তেমনটাই বুঝিয়ে দিলেন সুকান্ত মজুমদার।