প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ক্রমাগত বাংলা নিয়ে অত্যন্ত সিরিয়াস হচ্ছে কেন্দ্রীয় বিজেপি। বাংলার বিজেপি কর্মীরা যতই হতাশ হয়ে যান না কেন, বাংলায় একের পর এক যে সমস্ত ঘটনা ঘটছে, তাতে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যেভাবে কমিশন এবং বিভিন্ন টিম পাঠানো হচ্ছে, তাতে স্পষ্ট যে, বাংলা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে কেন্দ্রীয় বিজেপির কাছে। আর কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যে সমস্ত কমিশন বাংলায় পাঠানো হচ্ছে, তাতেই কি ভয় পেয়ে যাচ্ছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এবার তিনি বীরভূমের সভা থেকে যে মন্তব্য করলেন, তার ফলে প্রশ্ন উঠছে যে, সত্যিই কি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান?

বস্তুত, এদিন বীরভূমের প্রশাসনিক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে সমস্ত রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার রয়েছে, সেখানে সবথেকে বেশি চোর রয়েছে বলে কটাক্ষ করেন তিনি। অর্থাৎ ঘুরিয়ে বিজেপিকেই আক্রমণ করতে শুরু করেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি তার কথার মধ্যে দিয়ে উঠে আসে যে, বাংলায় সামান্য কিছু ঘটনা ঘটলেও একের পর এক কমিশন এবং টিম পাঠানো হয়। অর্থাৎ এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পাঠানো কমিশন এবং টিমের গতিবিধিতে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট, তা তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে যে, তাহলে কি তিনি রাজ্যে যে সমস্ত ঘটনা ঘটছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের পাঠানো কমিশনে এবং তার রিপোর্টে কিছুটা হলেও চিন্তায় রয়েছেন? বাংলা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে! এমনটাই কি আশঙ্কা করছেন এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান?

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এখানে টিকটিকি কামড়ালেও কমিশন আছসে। উত্তরপ্রদেশে অত্যাচার হলে সকলে চুপ। হিংসার কোনো ওষুধ নেই। বাংলা কাজ করছে বলেই যত অত্যাচার। উত্তর প্রদেশ, রাজস্থানে বড় বড় চোর বসে আছে। বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকারের বড় বড় চোর। বাংলার প্রতিভা আছে বলেই বাংলাকে বঞ্চনা।” আর এখানেই বিজেপির প্রশ্ন যে, বাংলায় চুরি, দুর্নীতি, খুন, ধর্ষণের মত ঘটনা স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূল সরকারের আমলে সাধারণ মানুষ অত্যাচারিত। সেখানে দাঁড়িয়ে এই সমস্ত ঘটনা কি দেখেও না দেখার ভান করছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী! কোন ঘটনাকে তিনি সামান্য ঘটনা বলছেন? কসবা ল কলেজ থেকে শুরু করে আরজিকরের মত ঘটনা কি করে তার চোখে সামান্য ঘটনা হতে পারে? আর রাজ্যে যে সমস্ত অনিয়ম চলছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কমিশন এলেই কেন মুখ্যমন্ত্রীর এত গাত্রদাহ হবে? তাহলে তার রাজ্যের প্রশাসনকে তিনি এই রাজ্যে হিন্দু নির্যাতন থেকে শুরু করে ক্রমাগত ঘটে যাওয়া আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের মত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আগেভাগেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন না কেন? যদি পুলিশ প্রশাসন ঠিক থাকে, তাহলে তো এরকম দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাও ঘটে না, আর রাজ্যও শান্তিতে থাকে. তাহলে নিজের রাজ্যের শান্তির শৃঙ্খলাকে অটুট না রেখে সেখানে দুর্ভাগ্যজনক কোনো ঘটনা ঘটলে এবং কেন্দ্র তার পরিপ্রেক্ষিতে পদক্ষেপ নিলেই কেন পাল্টা কেন্দ্রকে দোষারোপ করবেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী? প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।