প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
আরজিকরের ঘটনার পর এই রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ হয়েছে, প্রতিরোধ হয়েছে। বারবার করে প্রশাসনের কাছে একটা বার্তা পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন জনসাধারণ যে, আর যেন এইভাবে সরকারি কর্মক্ষেত্রের মধ্যে কোনো মহিলাকে অসম্মান হতে না হয়। কিন্তু কিসের কি? এই রাজ্যে যে অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি, কিছু মানুষ তারা যে এই রাজ্যকে নিজেদের সাম্রাজ্য মনে করে অন্যায় অবিচার করেই চলেছেন, তা আরও একবার প্রকাশ্যে চলে এলো। গতকালই খবর আসে যে, পাঁশকুড়ার সরকারি হাসপাতালে এক চুক্তিভিত্তিক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে রীতিমত লজ্জায় পড়ে যায় গোটা বাংলা। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, এখনও পর্যন্ত সরকারি জায়গায় নিরাপত্তা কেন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না? কোথায় রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে মহিলাদের সুরক্ষা? আর এসবের মধ্যেই এবার কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করলো জাতীয় মহিলা কমিশন। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় স্তরের একটি কমিশন এবার রাজ্যে ঘটে যাওয়া এই লজ্জাজনক ঘটনায় নিজে থেকেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হলো।
ইতিমধ্যেই সকলেই অবগত হয়ে গিয়েছেন যে, রাজ্যের বুকে আরজিকরের পর আরও একটি লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেছে। গতকালই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল পাঁশকুড়ার সরকারি হাসপাতালের ঘটনা। যেখানে রবিবার দিন ঠিকাদারি সংস্থার ফেসিলিটি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে এক চুক্তিভিত্তিক মহিলা স্বাস্থ্য কর্মীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। আর সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই রীতিমত হইচই পড়ে যায় রাজ্য জুড়ে। বিরোধীরা দাবি করতে শুরু করে, যে ব্যক্তি এই ঘটনা ঘটিয়েছে, সেই ব্যাক্তি তৃণমূলের মদতপুষ্ট। ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে সকলের সোচ্চার হতেই ঘটনা ঘটার পরেই মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে জাতীয় মহিলা কমিশন।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই পাঁশকুড়ায় সরকারি হাসপাতালে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে ধর্ষণের ঘটনায় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। তারা নিজেরাই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা রুজু করেছে। শুধু তাই নয়, মামলা করেই থেমে থাকবে না তারা। এই ঘটনায় আরও বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। যেখানে খুব দ্রুত তারা ঘটনা স্থলে পৌঁছে যাবেন। এমনকি যে সরকারি হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটেছে, সেই এলাকা পরিদর্শন করবেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। অর্থাৎ বাংলার বুকে আবারও যে লজ্জা জনক ঘটনা ঘটেছে সরকারি হাসপাতালের মধ্যে, তাকে আর রেয়াত করতে রাজি নয় জাতীয় মহিলা কমিশন। আর সেই কারণেই ঘটনা ঘটার খবর সামনে আসার সাথে সাথেই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করলো এই কেন্দ্রীয় কমিশন।
এদিকে জাতীয় মহিলা কমিশনের এই পদক্ষেপকে সকলেই স্বাগত জানাচ্ছেন। তবে অনেকের মনেই প্রশ্ন রয়েছে যে, এর আগেও এই রাজ্যের বুকে ঘটে গিয়েছে অনেক ঘটনা। বিভিন্ন ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কমিশনও এসেছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে শুরু করে জাতীয় মহিলা কমিশনের একাধিক টিমে এই রাজ্যে এসেছে। এই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেছে। কিন্তু দিনের শেষে লাভের লাভ কিছু হয়নি। এই রাজ্যে যে আইন শৃঙ্খলা নেই, এই রাজ্যে যে আইনের শাসন নেই, এই রাজ্যে যে মহিলাদের নিরাপত্তা নেই, তা বারবার করে স্পষ্ট হচ্ছে। তাই রাজ্যকে সঠিক পথে আনতে নিশ্চিত করেই এই সমস্ত জাতীয় কমিশনের একটা ভূমিকা থেকেই যায়। তারা নিজে থেকেই এই ঘটনা এগিয়ে এসেছে। তবে শুধুমাত্র মামলা করলেই হবে না, যে রাজ্যের প্রশাসন সরকারি কর্মক্ষেত্রের মধ্যে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, অবিলম্বে সেই প্রশাসনের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। দিনের শেষে তেমনটাই দাবি করছেন বিরোধীরা।