প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
কিছুদিন আগেই বিহারের মত রাজ্যে নির্বাচন হয়ে গেল। কিন্তু সেখানে বিজেপি এত বিপুল আসন নিয়ে জয়লাভ করার পরেও, বিরোধী নেতারা একজনও অভিযোগ করতে পারলেন না যে, তাদের বাড়ির সামনে হামলা হয়েছে বা তাদের বাড়ির সামনে একটা সামান্য চকলেট বোমের মত পটকা ফেটেছে। কিন্তু এই নির্বাচন যদি পশ্চিমবঙ্গে হতো, তাহলে এই ভোটে এই রাজ্যের বর্তমান শাসক দল জেতার সঙ্গে সঙ্গেই বিরোধী নেতাদের বাড়িতে হামলা থেকে শুরু করে রক্তাক্ত পরিবেশ দেখতে পেত গোটা বাংলার মানুষ। বিরোধীরা বিহার নির্বাচনের পর এই সমস্ত কথা বলছেন একটাই কারণে। কারণ তারা ২০১১ সালের পর থেকে বামেরা যে সন্ত্রাসের মধ্যে দিয়ে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে, সেই একই কায়দায় তৃণমূল আরও ভয়ংকর ভাবে রক্তপাতের মধ্যে দিয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পরিচালিত করছে বলে প্রত্যক্ষ করেছে। তাই পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন যে বিধানসভা নির্বাচন, সেই নির্বাচনকে রক্তপাতহীন করতে সন্ত্রাসমুক্ত নির্বাচন করতে শাসকদলের ওপর যে ভরসা রাখলে হবে না, এক্ষেত্রে যে নির্বাচন কমিশনকেই এগিয়ে আসতে হবে এবং বাংলার জন্য আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, সেই দাবি লাগাতার ভাবে করে আসছেন বিজেপি নেতারা। এদিন আরও একবার বাংলার নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গকে স্পেশাল দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখা উচিত কমিশনের বলেই আর্জি জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।

এই রাজ্যের বিরোধী নেতারা প্রতিনিয়ত রাজনীতি করতে গেলেই বাধার শিকার হন। তাই পুলিশ প্রশাসন যে এই রাজ্যে নিরপেক্ষ নেই, এই রাজ্যে যে সবটাই তৃণমূলের কথামত চলে, তা আর নতুন করে বলতে হবে না। তবে নির্বাচনে কেউ জিতবে, কেউ হারবে। কিন্তু বিরোধী দল যদি পরাজিত হয়, তাহলে কেন শাসক পক্ষ জেতার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের বাড়িতে হামলা চালাবে? এটা তো অন্য কোনো রাজ্যে হয় না। কেন পশ্চিমবঙ্গে ভোট হলেই মানুষকে ভয়ে থাকতে হয়? কেন রক্তপাতহীন নির্বাচন হতে পারে না বাংলার বুকে? বিহারে যেভাবে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়ে গেল, কোনো হিংসার ঘটনা দেখা গেল না, তারপর বাংলার কাছে চ্যালেঞ্জ যে, আগামী ২৬ এর নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত করা। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যদি বাংলার জন্য আলাদা ট্রিটমেন্ট না রাখে, বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে যদি বাংলাকে না দেখে, তাহলে যে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন সন্ত্রাসমুক্ত হবে না, তাতে এক প্রকার নিশ্চিত বিরোধীরা। তাই এবার কমিশনের কাছেই বাংলাকে আলাদা নজরে দেখার আবেদন জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।

এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। আর সেখানেই পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাসহীন নির্বাচন করানোর পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে বড় আবেদন করেন তিনি। সুকান্তবাবু বলেন, “আপনারা দেখলেন, বিহারে নির্বাচন হলো। বিজেপি ২০২ টি সিট পেল। কোনো কংগ্রেস নেতা বা কোনো আরজেডি নেতা অভিযোগ করেছে যে, তার বাড়িতে হামলা হয়েছে? ওখানে একটা তুবড়িও জ্বলবে না। জ্বললে বিজেপি পার্টি অফিসের সামনে জ্বলবে। ওদের বাড়ির সামনে জ্বলবে না। ওদের পার্টি অফিসের সামনে জ্বলবে না। আর পশ্চিমবঙ্গে ২০২১ এর পর অন্য সবকিছু ছেড়ে দিন। অভিজিৎ সরকারের ওপর যে অত্যাচার হয়েছিল, তা তো আমরা লাইভ দেখেছি। এমনকি তার প্রেগনেন্ট কুকুরগুলোকে পর্যন্ত পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এটাই অন্য রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের পার্থক্য। তাই আমার মনে হয়, নির্বাচন কমিশনের স্পেশাল কেস হিসেবে পশ্চিমবঙ্গকে দেখা উচিত। এমনকি এসআইআরকেও দেখা উচিত।”