প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
গোটা দেশজুড়ে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বন্দেমাতরম সংগীতের সার্ধশতবর্ষ পালন করা হচ্ছে। মহাসমারোহে যেদিন এই কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল, সেদিন পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারকে সেরকম কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়নি। উল্টে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে যাওয়ার সময় শুভেন্দু অধিকারীর পথ আটকে দেওয়ার সমস্ত চেষ্টা করা হয়েছিল বলেই অভিযোগ বিরোধীদের পক্ষ থেকে। আর গতকাল সংসদে সেই বন্দেমাতরম সংগীতের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে বলতে গিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে “বঙ্কিমদা” বলে সম্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরবর্তীতে সৌগত রায় গোটা বিষয়টি নিয়ে আপত্তি করায় তিনি নিজের ভুল শুধরে নিয়ে বঙ্কিমবাবু বলে সম্বোধন করেন। আর নরেন্দ্র মোদীর এই বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই তৃণমূল এখন বলতে শুরু করেছে যে, এইভাবে বাংলার মহান মনীষীদের অপমান করে বাংলা বিরোধীতার প্রমাণ দিচ্ছে বিজেপি। আজ কোচবিহারে সভা থেকেও সেই বিষয়টি উত্থাপন করে কেন্দ্রীয় সরকার এবং নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মুখ্যমন্ত্রী যখন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি এত দরদ দেখাচ্ছেন, তখন পাল্টা রাজ্যের পক্ষ থেকে তাকে সম্মান জানানোর জন্য কি করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে গেরুয়া শিবির।
আজ কোচবিহারের সভা থেকে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে গতকাল প্রধানমন্ত্রী যে দাদা বলে সম্বোধন করেছেন, সেই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে সোচ্চার হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেছেন যে, বাংলার মনীষীদের এভাবেই অপমান করা হচ্ছে। এতটুকু সম্মান পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না। তবে মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই পারেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী দাদা বলার পরেই নিজের ভুল শুধরে নিয়ে বঙ্কিমবাবু বলে সম্বোধন করেছেন। আর যখন তিনি ভুল শুধরে নিয়েছেন, তারপরেও এই বিষয় নিয়ে যেভাবে তৃণমূল লাগাতার প্রচার করছে, তা নিকৃষ্ট রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নয় বলেই মনে করছেন একাংশ। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরেই পাল্টা প্রশ্ন ধেয়ে আসছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে।
আর মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহল। তাদের বক্তব্য, যেদিন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বন্দেমাতরম সংগীতের ১৫০ বছর পূর্তি হয়েছিল, সেদিন রাজ্যের পক্ষ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে স্কুলগুলিতে রাজ্য সংগীত চালু করার নির্দেশিকা দেওয়া হয়। এটা কি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সেই বন্দেমাতরম সংগীতকে অপমান করা নয়? কেন বেছে বেছে সেই দিনই রাজ্য সংগীত হিসেবে তাদের পছন্দ মত একটি গানকে স্কুলে গাওয়ানোর ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করা হলো? অন্যদিন কেন সেই নির্দেশিকা জারি করতে পারলো না রাজ্য? আর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে এবং তার বন্দেমাতরম সংগীতকে গোটা দেশজুড়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সেরকম কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। তাই একটি বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলে ফেলেছেন। তারপর তিনি পরবর্তীতে ভুল শুধরে নিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও যে বিষয় নিয়ে এই ধরনের নোংরা রাজনীতি তৃণমূল করতে শুরু করেছে, তা ঘোলাজলে মাছ ধরার চেষ্টা। আর এসব করে তৃণমূল নিজেদের বাংলার সংস্কৃতির পরিপূরক বলে প্রমাণ করতে পারবে না বলেই দাবি করছে পদ্ম শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহল।