প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- অবশেষে আজ দলবিরোধী কাজের জন্য তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে হুমায়ুন কবীরকে। যে সময় তাকে সাসপেন্ড করা হয়, সেই সময় তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দলীয় সভায় আমন্ত্রণ পেয়ে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। আর সেই খবর পাওয়ার সাথে সাথেই গজগজ করতে করতে সেখান থেকে বেরিয়ে যান ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। এমনকি তিনি জানিয়ে দেন যে, বাবরি মসজিদের যে শিলান্যাস তিনি করার কথা বলেছেন, সেটা তিনি করেই ছাড়বেন। শুধু তাই নয়, এতদিন বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন। তাদের মিথ্যে প্রলোভন দিয়ে তাদের ভোট নিচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি সংখ্যালঘুদের সঙ্গে তেজপাতার মতো আচরণ করেন। আর তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং তার দল তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু প্রীতি নিয়ে কি বিজেপির সুরেই সুর মেলালেন হুমায়ুন কবীর? শুধু তাই নয়, বাবরি মসজিদ শিলান্যাস করার কারণেই যে তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, তা উপলব্ধি করে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরএসএস মার্কা বলেও কটাক্ষ করলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। পাশাপাশি তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বললেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে বিজেপির পক্ষ থেকে ডাইরেক্ট কোনো মুখ্যমন্ত্রী হলে তিনি স্বাগত জানাবেন বলেও বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন হুমায়ুনবাবু।

বেশ কিছুদিন ধরেই লাগাতার দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে যাচ্ছেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। অতীতে তাকে দলের পক্ষ থেকে শোকজ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেই সমস্ত কিছুকে পাত্তাই দেননি। আগামী ৬ তারিখ তিনি বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। আর এটা তৃণমূলের কাছে অস্বস্তি হওয়ার দরুন আর দলের পক্ষ থেকে তাকে সাসপেন্ড করা হয়। আর তারপরেই বাবরি মসজিদ শিলান্যাসের ক্ষেত্রে যেভাবে তাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন সাসপেন্ড হওয়া হুমায়ুন কবীর। বিজেপির সঙ্গে তার দূরত্ব থাকলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে বিজেপির কেউ মুখ্যমন্ত্রী হলে তিনি যে অত্যন্ত খুশি হবেন, সেই কথাও জানিয়ে দিয়েছেন ভরতপুরের বিধায়ক। আর এখানেই জল্পনা তৈরি হচ্ছে যে, তাহলে কি এবার সরাসরি বিজেপিতে যুক্ত না হলেও, আলাদা দল তৈরি করার যে কথা বলছেন হুমায়ুনবাবু, সেই আলাদা দল তৈরি করে বিজেপিকে সহযোগিতা করবেন তিনি? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোণঠাসা করতে সংখ্যালঘুদের ভোট যাতে বিজেপির দিকে নিয়ে যাওয়া যায়, তার জন্য কৌশল অবলম্বন করবেন হুমায়ুনবাবু?

এদিন সাসপেন্ড হওয়ার পরেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, “মুসলমানদের মসজিদ তৈরি করতে বাধা দিচ্ছে। এদিকে সরকারি টাকায় ভুরি ভুরি মন্দির তৈরি হচ্ছে। এই ক্ষমতা কত দিন থাকে, আমি বেঁচে থাকলে দেখব। বেশ করেছি, বেশ করেছি। ক্ষমতা থাকলে রুখে নেবে। এরকম আরএসএস মার্কা মুখ্যমন্ত্রী চেয়ে ডাইরেক্ট বিজেপির কেউ মুখ্যমন্ত্রী হলে আমি ওয়েলকাম জানাবো।”