প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
শুধু রাজ্যের বুকে নয়, দেশের মধ্যে এক ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম হচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু সেই যাদবপুরকে এখন যেভাবে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, যেভাবে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আসছে একের পর এক ভয়ংকর খবর, তাতে হতাশ বাংলা ও বাঙালি। এর আগেও এক পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি আরও এক ছাত্রীর দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে রীতিমত প্রশ্ন উঠছে সেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে। সকলের একটাই বক্তব্য যে, এই যাদবপুরে বাম এবং অতিবামের আখড়া তৈরি হয়েছে। আর তারাই মেধাকে নষ্ট করে যাদবপুরকে নেশার আঁতুড়ঘরে পরিণত করেছে। তবে কবে এই যাদবপুর ঠিক হবে? বর্তমান রাজ্য প্রশাসন কেন এই যাদবপুরকে টাইট দিতে পারছে না? কেন শিক্ষাঙ্গনকে শান্তিপূর্ণ করে তুলতে পারছে না! এই প্রশ্ন অনেকের মধ্যেই রয়েছে। অনেকে বলছেন, বর্তমান তৃণমূল সরকার ইচ্ছাকৃত ভাবেই এই কাজ করছে না। কারণ এই যাদবপুরে যাদের চাষ হয়েছে, তারা ভোটের সময় নো ভোট টু বিজেপি করে। আর সেই কারণেই ফায়দা নেওয়ার জন্য তৃণমূলের প্রশাসন যাদবপুরে একের পর এক জঘন্য ঘটনা ঘটে গেলেও, তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয় না। তবে এই জায়গা থেকে আলাদা বিজেপি। আর সেটাই একেবারে সাত সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বুঝিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

ইতিমধ্যেই যাদবপুরে আরও এক ছাত্রীর রহস্য মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে প্রশ্ন উঠছে যে, যাদবপুরের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? এভাবেই কি শহর থেকে গ্রাম থেকে বহু মেধাকে কলকাতার এই নামী বিশ্ববিদ্যালয় পাঠিয়ে তাদের শেষ পরিণতি দেখতে হবে অভিভাবক-অভিভাবিকাদের? কোন শক্তি এই যাদবপুরের ভেতরে রয়েছে, যারা প্রতিমুহূর্তে মেধাকে নষ্ট করে দিচ্ছে! যারা যাদবপুরের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতিকে নষ্ট করে দিয়ে সেখানে নেশার আঁতুড়ঘর তৈরি করেছে? তৃণমূলও দাবি করছে যে, এখানে বাম এবং অতিবামের একটা প্রশ্রয় রয়েছে। তাহলে তাদের যুক্তিই যদি ঠিক হবে, তাহলে তৃণমূল তো বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতে অভ্যস্ত, তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান বজায় রাখতে কেন তারা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছে না? নাকি ইচ্ছাকৃতভাবেই নিচ্ছে না? এই প্রশ্ন যখন উঠছে, তখন বাম-অতিবামের সঙ্গে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ মনোভাব নিয়ে মন্তব্য করার পাশাপাশি বিজেপি ক্ষমতায় এলেই যাদবপুরের এই জঞ্জাল সাফ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।

এদিন যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে শুভেন্দুবাবুকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন। আর তার বক্তব্যে তিনি বলেন, “সিসিটিভিও লাগাতে দেবে না, বন্দেমাতরমও গাইতে দেবে না। যাদবপুরে আল্ট্রা লেফট যারা, যারা গোমতী থেকে গোদাবরী আলাদা দেশ চায়, সংবিধান মানে না। অর্থাৎ পরিষ্কার কথায় যাদের মাকু বলা হয়, যারা হিরোইন গাজার চাষ করেছে ওখানে, ওরা আমাদের দেশের শিক্ষানীতির বিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদেরকে লালিত পালিত করেন। কারণ এরা ভোটের সময় নো ভোট টু বিজেপি বলে। আর তার লাভ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পান। বিজেপিকে আনুন, সাফ করে দেবো আমরা। যত পার্থেনিয়াম আছে যাদবপুরে, আমরা পরিস্কার করে দেব।”

এখন অনেকেই বলতে পারেন যে, শুভেন্দু অধিকারীর মত এইরকম অনেক কথা ক্ষমতায় আসার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছিলেন। কিন্তু তার কথায় বিশ্বাস করে বাঙালির কি অবস্থা হয়েছে, তা তো আজকে বাংলা গভীরভাবে উপলব্ধি করছে। তাই শুভেন্দু অধিকারী ক্ষমতায় এলে বা তার দল ক্ষমতায় এলে যে যাদবপুরের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বদলে যাবে, তার গ্যারান্টি কোথায়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না। কিন্তু এতদিন বামেদের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে, তৃণমূলকেও মানুষ দেখেছে। আর এই দুই সরকারের আমলে বাংলা শুধু পিছিয়েই গিয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে যে সমস্ত প্রদেশে বিজেপি আছে, সেখানে কিন্তু হচ্ছে গঠনমূলক উন্নতি। আর যাই হোক, যে সমস্ত জায়গায় বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে, সেখানে আর কেউ দেশবিরোধী কার্যকলাপ চালাতে পারে না। কারণ বিজেপির কাছে, দেশ আগে, ব্যক্তি পরে। তাই যাদবপুরে যে বাম এবং অতিবাম শিক্ষার পরিবেশকে নষ্ট করে সেখানে নেশার পরিবেশ তৈরি করেছে এবং তাকে যেভাবে এই রাজ্যের তৃণমূল সরকার ব্যবস্থা না নিয়ে প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে, এবার তা বন্ধ করতে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনার পরেই আসল পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।