প্রিয়বন্ধু মিডিয়ার রিপোর্ট-
এই রাজ্যে এমনিতেই শিল্প কলকারখানা প্রায় নেই বললেই চলে। আর কেউ যদি ছুঁচ হয়ে চালুনের ছুতো খুঁজতে আসে, তাহলে বিষয়টা সত্যিই হাস্যকর হয়ে যায়। যে রাজ্যে শিল্প স্থাপন করতে কার্যত ব্যর্থ তৃণমূল সরকার, সেই তৃণমূল সরকারেরই একজন মন্ত্রী শ্রমিকদের নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন। আর বিক্ষোভের মুখে পড়ে আটকে দেওয়া হলো বিজেপির রাজ্য সভাপতির গাড়ি। প্রশ্ন উঠতে শুরু করলো, যদি শিল্প সম্ভাবনা বা কলকারখানা বন্ধ বা তার কোনোরকম গাফিলতি থাকে, তাহলে তো আলোচনায় বসে সমস্যা সমাধান করা যায়। তার তো একটা পদ্ধতি আছে। কিন্তু সেটা না করে বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য সভাপতির গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, এটা কোন ধরনের সংস্কৃতির পরিচয়?

কি ঘটনা ঘটেছে? আপনারা সকলেই জানেন যে, স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো ধর্ম সভার বক্তৃতা উপলক্ষে আজকের দিনটিকে বিজেপি একটি মহৎ দিন হিসেবে পালন করছে। আসানসোলে তারা নরেন্দ্র কাপ ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করেছে। আর সেই কর্মসূচিতেই সাত সকাল বেলা যোগ দিতে যাচ্ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। কিন্তু রাস্তাতেই তৃণমূলের মন্ত্রী মনোজ তিওয়ারির নেতৃত্বে আরতি কটন মিলের শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। যেখানে আটকে পড়ে শমীক ভট্টাচার্যের গাড়ি। বিক্ষোভকারীদের দাবি, অবিলম্বে শমীকবাবুকে নামতে হবে, তাদের কথা শুনতে হবে।

রাজ্যের মন্ত্রী মনোজ তিওয়ারির বক্তব্য, আরতি কটন মিল দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকরা তাদের বেতন পাচ্ছেন না। পুজোর মুখে তারা সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছেন। পাঁচ বছর ধরে বন্ধ থাকা এই মিল খোলার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই। আর আজ সেই মিলের পাশেই মাঠে ফুটবল ম্যাচ করে দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা হচ্ছে। আর এর বিরুদ্ধেই শ্রমিকদের নিয়ে তারা প্রতিবাদ করছেন।

এখন তৃণমূলী মন্ত্রীর বক্তব্য তো বোঝা গেল। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, এইভাবে রাস্তায় একজন বিজেপি সাংসদকে আটকে তারা কি আসল সমস্যা সমাধান করতে পারবেন? শুধুমাত্র আটকে রেখে, গায়ের জোরে বাধা দিয়েই কি সব সমস্যার সমাধান হয়? নাকি আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করতে হয়! যদি সত্যিই কলকারখানা খোলার ব্যাপারে সদিচ্ছা থাকে তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের, তাহলে প্রশ্ন ওঠে যে, এই রাজ্যে তৃণমূল সরকারের আমলে কতগুলো কলকারখানা স্থাপিত হয়েছে, আর কতগুলো বন্ধ হয়েছে? আসলে যে সমস্ত শ্রমিকদের নিয়ে তাদের পেটের ভাতের জন্য রাজ্যের মন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি এই প্রতিবাদ দেখালেন, সেটা যে শ্রমিকদের প্রতি দরদ অপেক্ষা নিজের রাজনৈতিক নম্বর বাড়ানোর চেষ্টা, সেই সম্পর্কে দ্বিমত নেই বিরোধীদের মধ্যে।