প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যেই এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে যখন বিএলওরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম দিচ্ছেন, তখন তাদের সঙ্গে শাসকদলের প্রতিনিধিরা বেশ কিছু জায়গায় থাকলেও, অনেক জায়গায়, যেখানে বিরোধীদের সংগঠন শক্তিশালী নয়, সেখানে বিজেপির বিএলএদের অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই যেখানে শাসকদলের এজেন্ট রয়েছে, সেখানে তারা তাদের মত করে বিএলওদের প্রভাব বিস্তার করে এই গোটা প্রক্রিয়ায় কারচুপি করছে না তো? এই আশঙ্কা বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ছিল। তবে গতকাল নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। যেখানে জানানো হয়েছে যে, কাউকে বিএলএ টু হতে গেলে সেই বুথেরই ভোটার হতে হবে, এমনটা নয়। এক্ষেত্রে সেই নির্দিষ্ট বিধানসভার ভোটার হলেই তিনি সেই বিধানসভার অন্তর্গত যে কোনো বুথের বিএলএ টু হতে পারবেন। স্বাভাবিকভাবেই কমিশনের এই নির্দেশের ফলে বিজেপির যে বুথে সংগঠন একটু কম জোর, সেখানে তারা একটি বিধানসভা থেকে যে কাউকে এনে সেই বুথে বিএলএ টু এর দায়িত্ব দিতে পারবেন। এই ব্যাপারে আর কোনো সমস্যা থাকবে না। তবে কমিশনের পক্ষ থেকে এই নির্দেশিকা আসতেই রীতিমত চাপে পড়ে গিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ তাদের এজেন্ট থাকার পাশাপাশি এবার প্রত্যেকটি জায়গায় বিরোধীদের এজেন্ট থাকবে। আর সেই কারণেই কি এখন কমিশনের এই নির্দেশিকাকে কটাক্ষ করে বিজেপির কথা মত কমিশন কাজ করছে বলে মন্তব্য করতে শুরু করেছে রাজ্যের শাসক দল? এদিন সেই ব্যাপারেই তৃণমূলের আপত্তিকে রীতিমত উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা জবাব দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর প্রক্রিয়া যেভাবে শুরু হয়েছে, তাতে বেশ কিছু অভিযোগ তুলছে বিজেপি। তারা এসআইআরের প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানালেও যেভাবে বিএলওদের ওপর প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে এবং যেভাবে তৃণমূল চাপে রাখছে, তা নিয়ে সোচ্চার হয়েছে তারা। পাশাপাশি বিজেপির পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে এই আবেদন জানানো হয়েছিল যে, একটি বিধানসভা কেন্দ্রের যে কেউ যদি কোনো গণনা কেন্দ্রের এজেন্ট হতে পারে, তাহলে এক্ষেত্রে সেই বুথেরই ভোটার একমাত্র বিএলএ টু হতে পারবেন, এই নিয়ম কেন? নির্বাচনে গণনার ক্ষেত্রে যে নিয়ম আছে, ঠিক একই নিয়ম এক্ষেত্রেও প্রযোজ্য করা হোক। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই গতকাল নির্বাচন কমিশন একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দিয়েছে যে, এসআইআর প্রক্রিয়ায় বিএলএ টু যারা রয়েছেন, তাদের সেই নির্দিষ্ট বুথেরই ভোটার হতে হবে, এমনটা নয়। তারা সেই নির্দিষ্ট বিধানসভার ভোটার হলেই তারা বিএলএ টু হতে পারবেন। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি এখন অনেকটাই উজ্জীবিত। তবে তৃণমূল এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে দাবি করছে যে, বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে এবং নির্বাচন কমিশন বিজেপির কথা মত চলছে। তবে কমিশনের এই নির্দেশিকায় কিসের এত আপত্তি, তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলে দিলেন সুকান্ত মজুমদার।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। আর সেখানেই কমিশনের এই বিএলএ টু নিয়োগ নিয়ে যে নির্দেশিকা, তাকে স্বাগত জানান তিনি। সুকান্তবাবু বলেন, “কেন সেই বিধানসভার বাসিন্দা অন্য বুথে বিএলএ টু হতে পারবেন না! যুক্তি কি? বিজেপিকে সুবিধে করে দেওয়ার জন্য, কার অসুবিধে করার জন্য, সেটা পরে আসবে। আপনাকে তো লজিক দিতে হবে। আপনার পশ্চিমবঙ্গের যে কেউ তো গণনা কেন্দ্রে এজেন্ট হতে পারে। স্বাভাবিকভাবে এসআইআরে যদি একজন বাসিন্দা তার নিজের বুথ বাদ দিয়ে অন্য বুথে বিএলএ টু হন, এতে অসুবিধের কি আছে? যদি একটি বুথে একজন বিএলওর সাথে একজন বিএলএ টু যাচ্ছে, তার বদলে বিজেপি বাদ দিয়েও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সমস্ত বিএল এ টু যায়, তাহলে কোনটা বেশি স্বচ্ছতা বলে ধরা হবে?”