প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই একপক্ষ বলছেন যে, বিএল ওরা ঠিক মত কাজ করতে পারছেন না। আবার আর এক পক্ষ বলছেন, বিএলওদের যে কাজ করতে হচ্ছে, তাতে তাদের সঠিক পারিশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে না। তবে প্রথম থেকেই একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, বিএলওদের এই পারিশ্রমিক দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল দায়িত্ব রয়েছে রাজ্য সরকারের। তারা কি তাদের দায়িত্ব পালন করছে? বিএলওদের এই অতিরিক্ত কাজ করতে হচ্ছে যে রাজ্যের ভুল পদ্ধতির জন্য, সেই ব্যাপারেও বারবার করে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর তৃণমূলপন্থী ২-৪ জন বিএলও রাজ্যের শাসক দলের সুবিধে করে দেওয়ার জন্য যতই নির্বাচন কমিশনের দপ্তরের সামনে পড়ে থেকে চেঁচামেচি করুন না কেন, এবার নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে যে তথ্য প্রকাশ করা হলো, তাতেই স্পষ্ট হয়ে গেল যে, এই রাজ্যের সরকার তৈরি করছে আসল সমস্যা। আর আসল সমস্যা তৈরি করে তারা বিএলওদের ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছে। কিন্তু আদতে বিএলওদের যে সমস্যা হচ্ছে তার জন্য নির্বাচন কমিশন নয়, রাজ্য সরকারের ঢিলেমি এবং তাদের কার্যপদ্ধতি দায়ী বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এতদিন ধরে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে, এসআইআর তড়িঘড়ি করা হয়েছে। তারা এটাও বলতে শুরু করেছিলেন যে, প্রচুর বিএলওরা এই এসআইআরের কাজের চাপ নিতে পারছেন না। তাই অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু প্রত্যেকেরই কাজের একটা নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক আছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার বা তাদের দলের নেতা-নেত্রীরা, গুটি কয়েক তৃণমূল পন্থী বিএলওরি যতই দাবি করুন যে, তাদের ওপর কাজের চাপ দেওয়া হচ্ছে কমিশনের পক্ষ থেকে, বাস্তব তথ্য কিন্তু আলাদা। কাজের চাপ হয়ত আছে। কিন্তু সেই কাজের যে পারিশ্রমিক, তা দেওয়ার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। আর এখনও পর্যন্ত যে সমস্ত বিএলওরা কাজ করছেন, তাদের প্রাপ্য টাকা রাজ্য সরকার মেটায়নি বলেই জানিয়ে দিলো নির্বাচন কমিশন। আর এখানেই নবান্নের মুখোশ খুলে গেল বলেই কটাক্ষ করছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, এর পর ওই ২-৪ জন তৃণমূল পন্থী বিএলও, যারা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন, তারা কি এবার তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পারবেন? তারা কি চোখে চোখ রেখে এই সরকারের বিরুদ্ধে নবান্নের সামনে বসে বিক্ষোভ দেখিয়ে তাদের পারিশ্রমিক কেন দেওয়া হচ্ছে না, সেই ব্যাপারে আন্দোলন করতে পারবেন?
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিএলওদের পারিশ্রমিক নিয়ে একটি বড় তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, বিএলওদের প্রাপ্য টাকা দেওয়া যাচ্ছে না, তার একটাই কারণ, রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত বিএলওদের পারিশ্রমিক দেয়নি। এক্ষেত্রে প্রত্যেক বিএলওদের জন্য ১৮ হাজার টাকা প্রয়োজন। তাই রাজ্য সরকার যতক্ষণ না টাকা দিচ্ছে, ততক্ষণ যে বিএলওদের পারিশ্রমিক মেটানো সম্ভব নয়, তা জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। স্বাভাবিকভাবেই যে সমস্ত বিএলওরা কাজের চাপ নেওয়া যাচ্ছে না বলে চিৎকার করছিলেন, তাদের কাছেও এখন স্পষ্ট হয়ে গেল যে, মূল সমস্যাটা তৈরি করছে কে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন পারিশ্রমিক দেওয়ার সদিচ্ছা প্রকাশ করলেও, রাজ্যের পক্ষ থেকেই যে টাকা দেওয়া হচ্ছে না এবং সেই কারণেই যে বিএলওদের পারিশ্রমিক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তার তথ্য সামনে আসায় নবান্নের মুখোশ খুলে গেল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।