প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
গতকালই পশ্চিমবঙ্গে পা রেখেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ প্রথমেই নিউটাউনের হোটেল থেকে বেরিয়ে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পূজো উদ্বোধন করেন তিনি। আর তারপরেই তিনি চলে যান কালীঘাট মন্দিরে। এই কালীঘাটেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবন। স্বাভাবিকভাবেই সেখানকার মাতৃপ্রতিমা দর্শন করে ২৬ এর নির্বাচনের আগে কি বড় কোনো বার্তা দিতে চাইলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী! তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। অনেকে বলছেন, একেবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাসতালুকে পৌঁছে মায়ের কাছে প্রার্থনা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি তৃণমূল নেত্রীকে চাপে রাখতে চাইলেন।

বলা বাহুল্য, আজ সকালে অমিত শাহ আসার আগে থেকেই রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল কালীঘাট মন্দির চত্বর এলাকায়। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, গতকাল মাঝরাত পর্যন্ত তারা অনেক পরিশ্রম করে অমিত শাহকে স্বাগত জানিয়ে ফেস্টুন, ব্যানার লাগিয়েছিল। কিন্তু আজ সকালে সেগুলো সব খুলে নেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত জায়গায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই কার্যকলাপের পেছনে তৃণমূল নোংরা রাজনীতি করার চেষ্টা করছে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের। আর তার মাঝেই অমিত শাহ কিন্তু নিজের স্ট্র্যাটেজি ঠিক রাখলেন। একেবারে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পূজো উদ্বোধনের পরেই সেই কালীঘাট মন্দিরে পৌঁছে গেলেন তিনি। অর্থাৎ তার ব্যানার খুলে নিয়ে তাকে আটকানো যে যাবে না, বাংলায় পরিবর্তনের লক্ষ্যে তিনি যে সমস্ত পদক্ষেপ নিচ্ছেন, তা যে আগামী দিনে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করার জন্য যথেষ্ট, তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই তৎপরতার মধ্য দিয়েই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

এদিন সজল ঘোষের পূজা উদ্বোধনের পরেই সোজা কালীঘাট মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় অমিত শাহের কনভয়। যেখানে তার সঙ্গী হিসেবে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মাতৃপ্রতিমা দর্শনের জন্য গর্ভগৃহে প্রবেশ করেন তিনি। আর তারপরেই মায়ের চরণে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করার পাশাপাশি মন্ত্র উচ্চারণ করতেও দেখা যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। শুধু তাই নয়, কালীঘাটের মায়ের উদ্দেশ্যে আরতিও করেন অমিত শাহ। অর্থাৎ একেবারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যে কালীঘাটে থাকেন, সেখানকারী ঐতিহ্যমন্ডিত মন্দিরে গিয়ে মাতৃপ্রতিমাকে দর্শন করে অমিত শাহ কিন্তু এক অন্য রাজনৈতিক বার্তাও দেওয়ার চেষ্টা করলেন। একদিকে সনাতনী সংস্কৃতির প্রতি সম্মান, আর একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাস তালুকে পৌঁছে গিয়ে রাজনৈতিক চাপ। দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে তৃণমূলেরই চাপ বাড়িয়ে দিলেন অমিত শাহ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।