প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
২০২৬ এর নির্বাচনের আগে বিজেপির বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করার বার্তা দিচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কে কার কথা শোনে? দলের ঊর্ধ্বে যে নেতারা উঠে গিয়েছে, তা জেলায় জেলায় একের পর এক গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং বিভিন্ন সমস্যার দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। বিরোধীদের সঙ্গে লড়াই করা তো দূরের কথা, এখন তৃণমূল বনাম তৃণমূলের লড়াই দেখতেই বেশি অভ্যস্ত রাজ্যের সাধারণ মানুষ। ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এবার তৃণমূল পরিচালিত কৃষ্ণনগর পৌরসভার চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে জেলা শাসককে চিঠি দিলেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। যে ঘটনা জেলা রাজনীতিতে তো বটেই, রাজ্য রাজনীতিতেও ব্যাপক চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বলা বাহুল্য, উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গ, তৃণমূলের বিভিন্ন জায়গায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে দলের নেতাকর্মীরা দলের দ্বারাই আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এবার কৃষ্ণনগর পৌরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন তৃণমূলেরই ১৩ জন কাউন্সিলর। যেখানে একজন নির্দল কাউন্সিলর এবং একজন কংগ্রেস কাউন্সিলর রয়েছেন। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে তৃণমূলের কাউন্সিলর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যে অনাস্থা প্রস্তাবহ তার কপি জেলা শাসক এবং এসডিওর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলেই খবর।
এদিকেই গোটা বিষয় সামনে আসতেই তৃণমূলকে আক্রমণ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, তৃণমূল দল এখন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জরাজীর্ণ। মানুষের কাজ অপেক্ষা কে চেয়ারে বসবে, তা নিয়েই তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা। যার ফলে তৃণমূল তৃণমূলের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। কৃষ্ণনগর পৌরসভায় মানুষের পরিষেবাকে ব্যাহত করে দলের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেই অনাস্থা প্রস্তাব এনে ক্ষমতা দখলের খেলায় নেমেছেন তৃণমূলের কাউন্সিলররা। এর ফলে মানুষ বিরক্ত। আগামী দিনে কৃষ্ণনগর তো বটেই, গোটা নদীয়া জেলায় তৃণমূলকে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৬ এর নির্বাচন তৃণমূলের কাছে অত্যন্ত কঠিন নির্বাচন। গোটা রাজ্যজুড়েই তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া কাজ করছে। রাজ্যে একের পর এক ঘটে যাওয়া ঘটনা তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির হাতে বাড়তি অস্ত্র তুলে দিয়েছে। আর তার মধ্যেই দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দলের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেই অনাস্থা প্রস্তাব এনে তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা যেভাবে তা জেলা শাসকের কাছে জমা দিলেন, তা নিঃসন্দেহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিড়ম্বনা যথেষ্ট বাড়িয়ে দিলো বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।