প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে প্রতিবাদ করা যাবে না। এই রাজ্যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না, চিৎকার করা যাবে না। কারণ সেই প্রতিবাদ করতে গেলেই শাসকের গায়ে ছ্যাঁকা লাগবে। আর শাসকের গায়ে ছ্যাঁকা লাগলেই পুলিশ প্রশাসন যেভাবেই হোক, আপনার কণ্ঠরোধ করতে চলে আসবে। সে আপনি শিক্ষক হন, সে আপনি সমাজের বিশিষ্ট মানুষ হন, যাই হোন না কেন, আপনি এই সরকারের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলেই আপনার কপালে জুটতে পারে হেনস্থার মত ঘটনা। বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এমনটাই অভিযোগ করে বিরোধীরা। এসএসসি নিয়ে যে দুর্নীতির তথ্য এই রাজ্যের মাটিতে ফাঁস হয়ে গিয়েছে, যার ফলে এতগুলো মানুষের চাকরি চলে গিয়েছে, তারপরেও কি এই রাজ্য সরকার এবং এসএসসি স্বচ্ছভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্যন্ত করতে চাইছে না? কেননা ইতিমধ্যেই পরীক্ষা হলেও যাদেরকে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়েছে, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন একটা বড় অংশ। তাদের বক্তব্য, অনেক ফ্রেশার্স পরীক্ষার্থীরাও পরীক্ষায় বসে ছিলেন। কিন্তু তাদের অনেকে পুরো নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি। ফলে একটা দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছেন নয়া চাকরিপ্রার্থীরা। যার ফলে আজ তারা বিক্ষোভে নেমেছিলেন। কিন্তু সেখানেও পুলিশ তাদের সঙ্গে যে ব্যবহার করলো, যে নির্লজ্জ ভাবে তাদের ওপর অত্যাচার নেমে এলো, তাতে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষিত সমাজের।
ইতিমধ্যেই এসএসসির যে নতুন পরীক্ষা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, তাতে অনেক আশা নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন অনেক নয়া পরীক্ষার্থীরাও। তারা ভেবেছিলেন যে, এবার অন্তত স্বচ্ছভাবে নিয়োগ হবে। কিন্তু নয়া পরীক্ষার্থীরা তো বটেই, যারা যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকা ছিলেন, তারাও এখন বলছেন যে, এই পরীক্ষার নামে প্রহসন হয়েছে। কেননা যাদের ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেক অযোগ্য ব্যক্তি রয়েছে বলেও অভিযোগ করা হচ্ছে। এমনকি যারা নতুনভাবে এবার পরীক্ষা দিয়েছেন, তারা অনেকে পুরো নম্বর পেলেও তাদেরকে ইন্টারভিউ ডাকা হয়নি বলেই অভিযোগ উঠছে। আর এই পরিস্থিতিতে এসএলএসটির নয়া চাকরিপ্রার্থীরা আজ করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত একটি মিছিল করেন। আর সেখানেই তারা বিক্ষোভ দেখান। আর সেখানেই পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের শুধু বাধা দেওয়া নয়, যেভাবে তাদের টানা হ্যাঁচড়া করা হলো, তাতে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন সেই সমস্ত চাকরিপ্রার্থীরা।
এদিন এসএলএসটির নয়া চাকরিপ্রার্থীরা করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত মিছিল করেন। আর সেন্ট্রাল পার্কের সামনে তারা যখন অবস্থান বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন, তখন সেখানে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। অভিযোগ, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, পুলিশ তাদের টানা হ্যাঁচড়া করতে শুরু করে। এমনকি প্রতিবাদকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিতে অনেক চাকরি প্রার্থীদের মেট্রো স্টেশনের ভেতরে বলপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয়, যাতে তারা বাইরে বেরিয়ে আর আন্দোলন করতে না পারেন। স্বাভাবিকভাবেই যেখানে অন্যায় হচ্ছে, যেখানে অত্যাচার হচ্ছে, যেখানে শাসক দুর্নীতি করছে বলে চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সেখানে কেন আন্দোলনকারীরা কেন চাকরি প্রার্থীরা যোগ্যতার সহকারী পরীক্ষা দিয়েও ফল না পেলে প্রতিবাদটুকু করতে পারবেন না? কেন সেই প্রতিবাদে এইভাবে পুলিশ দিয়ে তাদের এইভাবে হেনস্থা করা হবে, তা নিয়ে গর্জে উঠছে নাগরিক সমাজ।