প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের বিরোধীরা মাঝেমধ্যেই অভিযোগ করেন যে, রাজ্যে অনুপ্রবেশ এবং রোহিঙ্গাতে ভরে গিয়েছে। আর তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীরা জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। আর বিরোধীদের সেই অভিযোগকে তৃণমূল অস্বীকার করলেও, এবার পহেলগাঁওয়ের জঙ্গিদের নিয়ে যেভাবে সাফাই দিতে দেখা গেল তৃণমূলের বিধায়ককে, তাতে প্রশ্ন উঠছে যে, সত্যিই কি তৃণমূল জঙ্গিদের নিকেশ করার পক্ষে! নাকি তাদের আশ্রয় দেওয়ার পক্ষে? যখন গোটা দেশ সেই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার, বেছে বেছে পর্যটকদের মারা হয়েছে বলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সকলেই প্রতিবাদ করছেন, ঠিক তখনই তৃণমূল বিধায়ক কেন এই ধরনের বেলাগাম মন্তব্য করলেন? এটা কি তিনি জেনে বুঝে করলেন, নাকি খবরে শিরোনামে থাকার জন্য করলেন? তবে যে কারণেই করুন না কেন, তার এই মন্তব্যের চরম খেসারত যে তার দল এবং নেত্রীকে দিতে হবে এবং বিরোধীরা যে এই বিষয়টি হাতিয়ার করে তৃণমূলকে প্রবল চাপে ফেলে দেবে, তা বলাই যায়।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে যে ঘটনা ঘটেছে, তার বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে গোটা দেশ। এমনকি ভারতের পক্ষ থেকে সেই জঙ্গিদের শায়েস্তা করতে পাকিস্তানের অপারেশন সিঁদুর চালিয়ে সেই দেশের কোমর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে ভারতের পদক্ষেপে গোটা দেশবাসী খুশি। কিন্তু তার মধ্যেই একি মন্তব্য করে ফেললেন তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র? গতকাল তিনি তৃণমূলের একটি কর্মসূচিতে দাঁড়িয়ে দাবি করলেন যে, “জঙ্গিরা কখনো পর্যটকদের মারে না, তারা পর্যটকদের স্বাগত জানায়।” স্বাভাবিকভাবেই একজন দায়িত্বশীল বিধায়ক কি করে জঙ্গিদের পক্ষ নিতে পারেন? ঘুরিয়ে কি করে তাদের প্রশংসা করতে পারেন? সেই প্রশ্ন তুলে ধরে রীতিমত শিউরে উঠছে বিরোধীরা।
ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে সোচ্চার হয়েছে গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহল। তাদের দাবি, বিন্দুমাত্র লজ্জা আছে এই তৃণমূল বিধায়কের? প্রকাশ্যে তিনি জঙ্গিদের পক্ষ নিচ্ছেন! এর পরে কি আর নতুন করে বলতে হবে যে, তৃণমূল দেশবিরোধী দল নয়! জঙ্গিদের পক্ষ নিয়ে তৃণমূলের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র যে মন্তব্য করলেন, তাতে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতা আছে, তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার? তাকে দল থেকে বের করে দেওয়ার? আসলে পশ্চিমবঙ্গ এখন দেশবিরোধীদের হাব হয়ে উঠেছে। তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল যে, এরা জঙ্গিদের কতটা স্নেহ করে এবং এদের জন্যই আজকে ভারতবর্ষ বিপদের মুখে বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্যে রীতিমতো বিড়ম্বনার মুখে পড়ে গেলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনিতেই পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর তৃণমূলের বিভিন্ন নেতা নেত্রীর মন্তব্যে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে এবার সরাসরি যেভাবে “জঙ্গিরা পর্যটকদের মারে না” বলে সেই জঙ্গিদেরই ঘুরিয়ে প্রশংসা করলেন তৃণমূলের একজন বিধায়ক, তাতে সমস্ত দায় দলীয় নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীকেই নিতে হবে বলে বিরোধীদের পক্ষ থেকে দাবি উঠছে। স্বাভাবিক ভাবেই দলের একজন দায়িত্বশীল বিধায়কের এই মন্তব্যে মাথায় হাত পড়তে বাধ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলেই দাবি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।