প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এতদিন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর তৃণমূলের কথা মত চলতো বলেই অভিযোগ করে বিরোধীরা। কিন্তু বর্তমানে যিনি সিইও পদে রয়েছেন, তিনি চেষ্টা করছেন, নিরপেক্ষভাবে কাজ করার। আর এতেই কি গাত্রদাহ হচ্ছে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল তৃণমূল কংগ্রেসের? প্রথম দিন থেকেই তিনি সিইও মনোজ আগরওয়ালকে আক্রমণ করতে শুরু করেছেন। তার দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করে দেওয়া হবে, এমন মন্তব্য করতেও দেখা গিয়েছিল রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে। আর বর্তমানে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক নিরপেক্ষভাবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এবং তার দপ্তর কাজ করে যাওয়াতেই কি চাপ বাড়ছে এই রাজ্যের শাসক দলের? আর এসআইআর ঠিকমত হলে যে তার দল ক্ষমতায় থাকবে না, তা বুঝতে পেরেই কি একের পর এক চিঠি জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে দিয়েই চলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? তবে তিনি সিইওর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও একটি চেয়ারে বসে তিনি যে সমস্ত কাজ করছেন, তা যে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক করছেন এবং কোনো নিয়ম যে তিনি লঙ্ঘন করেননি, তা স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল।
এই রাজ্যে যে প্রক্রিয়ায় এসআইআর হচ্ছে, তাতে যে তৃণমূল খুব একটা খুশি নয়, তা তাদের গতি প্রকৃতিতেই বোঝা যাচ্ছে। বারবার করে প্রচুর মানুষের এই এসআইআরের চাপে মৃত্যু হচ্ছে, এমন যুক্তি সামনে এনে এসআইআর স্থগিত করার দাবি জানাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকি যাতে এই প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়, তার জন্য কিছুদিন আগেই মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে একটি চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ আবার ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের সিইও দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠিতে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। তবে সেই বিষয়ে প্রশ্ন করতেই পাল্টা মুখ খুলে রাজ্যের সিইও জানিয়ে দিলেন যে, তিনি যা করেছেন, তা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নিয়ম পালন করেছেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ জাতীয় মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে করেছেন, সেই বিষয়ে রাজ্যের সিইও মনোজ আগরওয়ালকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। আর সেই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মনোজবাবু বলেন, “নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, অস্থায়ী যে সমস্ত কর্মী রয়েছে, তাতে তাদেরকে এই কাজে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এই ব্যাপারে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে, বিহারে নির্বাচন হয়েছে। বিহারে একটি টেন্ডার হয়েছিল। আপনারাও সেই রকম প্রক্রিয়া করতে পারেন। সেই রকমই আমরা টেন্ডার করেছি। এরপর যা নিয়ম রয়েছে, আমরা তা করেছি।” অর্থাৎ এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যতই সিইও দপ্তরের বিরুদ্ধে এসআইআর আবহে গোটা প্রক্রিয়াকে বানচাল করার জন্য চেষ্টা করুন না কেন, যতই তিনি চিঠি লিখুন না কেন, তার যে কোনো গুরুত্ব নেই, তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল বলেই মনে করছেন একাংশ। কেননা মুখ্যমন্ত্রী যে বিষয়ে চিঠি লিখেছেন, সেই ব্যাপারে পাল্টা সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের সিইও বুঝিয়ে দিলেন যে, তিনি যা করেছেন, তা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলে নিয়ম মোতাবেকই করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি দেওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই রাজ্যের সিইওর এই মন্তব্য তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলে দিলো বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।