প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের বিধানসভার অধ্যক্ষ পুরোপুরি তৃণমূলের দলদাস হয়ে কাজ করছেন। তার বিভিন্ন কাজকর্ম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মূলত, পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান করা হয় বিরোধী দলের কোনো বিধায়ককে। কিন্তু এই রাজ্যের শাসক দল এবং তাদের নেতা-নেত্রীদের কথায় রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ এমন কিছু কাজ করে ফেলেছেন, যার ফলে তিনি নিজেকেই বিতর্কের মুখে ফেলে দিয়েছেন। বিরোধীদের পক্ষ থেকে অন্তত তেমনটাই দাবি করা হয়। কেননা প্রথমে পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে বিরোধীরা চেয়েছিল অশোক লাহিড়ীকে সেই পদে বসাতে। কিন্তু সেই জায়গায় প্রকাশ্যে তৃণমূলে যোগদান করা বিজেপির টিকিটে জেতা মুকুল রায়কে সেই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। পরবর্তীতে সেই বিষয় নিয়ে যখন প্রশ্ন তুলতে শুরু করে বিজেপি, তখন মুকুলবাবু দাবি করেন, তিনি তো বিজেপিতেই আছেন। কিন্তু প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে, তিনি তৃণমূলের যোগদান করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই যে তৃণমূলের দ্বৈত নীতি এবং অধ্যক্ষ যেভাবে তাকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে সেই পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান পদ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টে যান অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেখান থেকে আবার সেই মামলা ফিরিয়ে দেওয়া হয় কলকাতা হাইকোর্টে। আজ সেই মামলার রায়দান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর শিলিগুড়িতে দলীয় বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগে সেই রায়দান এবং তার সম্ভাবনা নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

বলা বাহুল্য, দীর্ঘদিন ধরেই এই পিএসি কমিটির চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী লেগে রয়েছেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে আইনের দরজায় পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। এমনকি এই বিষয়ে তিনি যে শেষ দেখে ছাড়বেন, বারবার সেই কথা উথাপন করেছেন। যেভাবে রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ দলদাসের ভূমিকা পালন করছেন, যেভাবে তিনি তৃণমূলের শেখানো কথা বারবার করে বিধানসভায় বলছেন, তাতে তার ভূমিকা নিয়েও বারংবার প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দুবাবু। আর আজ দীর্ঘদিন ধরে তিনি যে লড়াইটা লড়ছেন, তাতে রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষকে শিক্ষা দিতে কলকাতা হাইকোর্টের রায়দানের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। পিএসি কমিটির চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে যে মামলা তিনি করেছেন, আজ তার রায়দান কি হয় এবং তাতে কার পক্ষে রায় যায়, তার দিকে নজর রয়েছে শুভেন্দুবাবুর। এমনকি গোটা বিষয়ে তিনি যে মামলা করেছেন, তাতে সত্যের পক্ষেই যে রায় থাকবে, সেই ব্যাপারেও তিনি যথেষ্ট আশাবাদী।

এদিন কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হোন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই পিএসি কমিটির চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে তার যে মামলা, সেই মামলার আজ রায়দান হতে পারে বলে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়। আর সেই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, “এই ব্যাপারে মামলাকারী তো আমি। ২০১১ সাল থেকে এই অধ্যক্ষ বিমান ব্যানার্জির সময়ে সংবিধানের যে নিয়ম-কানুন, তাকে অমান্য করা হয়েছে। কার্যত সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, এখানকার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে। এর আগে কংগ্রেস, সিপিএম এমনকি সমাজবাদী পার্টি ও এফেক্টেড হয়েছে। কিন্তু ইনি ২০২১ এর পর থেকে বিজেপি বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে, বিজেপির বিধায়কদের বেমালুম….মুকুল রায় তৃণমূলের উত্তরীয় পড়ছেন, তৃণমূলের মিটিংয়ে থাকছেন, আর বিধানসভায় বলছেন, ও তো বিজেপির। এইরকম মিথ্যাচার অধ্যক্ষ গোটা ভূ ভারতে কোথাও পাবেন না। এইরকম একটি সাংবিধানিক পোস্টে বসে থেকে উনি শুধু বিজেপির সঙ্গে মিথ্যাচার করছেন না, মিথ্যাচারটা সংবিধানের সঙ্গে করছেন। আমি এই বিষয়টা নিয়ে প্রথম দিন থেকেই লড়াই করছি। এতদিন ধরে শুনানি হয়েছে, রায়দান বাকি ছিলো। কিছুক্ষণ আগেই আমার আইনজীবী আমাকে জানালেন যে, আজকে লিস্টে আছে। আমি সংবিধানের পক্ষে লড়াই করেছি। আমি আশাবাদী। বাকিটা তো রায় আসার আগে আমার বলাটা ঠিক হবে না।”