প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সামনেই ২০২৬ এর নির্বাচন। তৃণমূল নিজেদের সর্বভারতীয় দল বলে দাবি করে। কিন্তু সর্বভারতীয় স্তরে তাদের কি অবস্থা, তা আজ দলীয় সাংসদদের নিয়ে বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে সমস্ত কথা বলেছেন, তার মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্তত তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা। কিন্তু কি এমন বলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়?
বিশেষ সূত্র মারফত পাওয়া খবর অনুযায়ী, বেশ কিছুদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের বাইরে ছিলেন। কিন্তু গতকালই তাকে দেখা যায়। আর এর মধ্যেই শোনা যাচ্ছিল যে, তৃণমূলের যে সংসদীয় দল, সেই দলে বেশ কিছু মহিলা সাংসদদের মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়েছে। আর আজ সেই দলীয় সাংসদদের নিয়েই একটি বৈঠক করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই তিনি যে সমস্ত কথা বলেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে মনে করা হচ্ছে যে, দলীয় সাংসদদের কোনোমতেই সামাল দিতে পারছে না তৃণমূল কংগ্রেস। আর এখনই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে যদি ২০২৬ এ বিজেপি ক্ষমতায় না আসলেও, যদি ক্ষমতার কাছাকাছি আসন পেয়ে যায়, তাহলে সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূলের যে কয়েকটি সাংসদ রয়েছেষ, তারা যে সকলেই গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করবে এবং তাদের সঙ্গে ভালো ভাব বিনিময় করবে, তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন একাংশ।
সূত্রের খবর, আজ দলীয় সাংসদদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই বেশ কিছু সাংসদ দলের অনুমোদনের বাইরে গিয়ে যেভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। দলের গাইড লাইনের বাইরে যে কোনো কাজ করা যাবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের বৈঠকে তিনি বলেন, “সবাইকে শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। আপনারা পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত। দলীয় অনুমোদন ছাড়া কোনো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করা যাবে না। দলের অনুমোদন ছাড়া কোনো নেতাদের আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া যাবে না।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছুদিন আগেই রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় নিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে ঘুরিয়ে হয়ত তাকেই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি মহুয়া মৈত্র কিছুদিন আগে একটি বিয়ের পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন। যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। এদিনের বার্তার মধ্যে দিয়ে কি ঘুরিয়ে তাকেও কথা শুনিয়ে দিলেন অভিষেকবাবু? শুধু তাই নয়, তৃণমূলের বর্ষীয়ান সংসদ সৌগত রায় শরদ পাওয়ারের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। এই বার্তার মধ্যে দিয়ে কি সৌগতবাবুকেও আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিলেন আঞ্চলিক তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক? যদি এখনই এমন হয়, যদি এখনই তৃণমূলের নেতাদের এই পরিস্থিতি হয়, জনপ্রতিনিধিরা এভাবেই বিগড়ে যেতে শুরু করে, তাহলে সামনে যে দিন আসছে, যদি তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় না আসে, তাহলে তো সত্যিই এই দলটার অস্তিত্ব বলে কিছু থাকবে না। আর সেই কারণেই কি এখন শেষ পর্যন্ত সাংসদদের সামাল দিতে না পেরে এই বার্তা দিতে বাধ্য হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।