প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে বিরোধীরা অভিযোগ করেন যে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনিক সভা বা সরকারি কর্মসূচি করতে গেলেও, সেখানে বিরোধী দলের কোনো জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না। তবে এই রাজ্যে পরিবর্তন হলে এবং বিজেপি সরকারে আসলে যদি বিরোধী দলের কেউ জনপ্রতিনিধি থাকেন, তাহলে তাদেরকেও আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে এখন থেকেই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বিজেপি। কিন্তু শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি দেওয়া নয়, আজ নরেন্দ্র মোদী একদিকে দলীয় সভা এবং অন্যদিকে প্রশাসনিক সভা করতে বাংলায় আসছেন। আর প্রধানমন্ত্রীর সেই সভায় রাজনৈতিক দ্বৈরথ ভুলে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বর্ধমান দুর্গাপুরের তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদকেও। আর কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা করার পরেই রীতিমত চাপে পড়ে গিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। পাশাপাশি তৃণমূলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে শুরু করেছে বিজেপিও।

বলা বাহুল্য, আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুর্গাপুরে একটি প্রশাসনিক সভাও করবেন। যেখানে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা করবেন তিনি। আর সেই সভাতেই রাজনৈতিক দ্বৈরথ ভুলে বিজেপির সাংসদ, বিরোধী দলনেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করার পাশাপাশি ঘোষণা করা হয়েছে বর্ধমান দুর্গাপুরের তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদের নামও। যদিও বা দলের কাছে নাম্বার কাটা যাওয়ার ভয়ে এই তৃণমূল সাংসদ হয়ত সভায় থাকবেন না বলেই কটাক্ষ করছে বিজেপি। পাশাপাশি তারা এটাও বলছেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারের এই মনোভাব দেখে শিক্ষা নেওয়া উচিত রাজ্যের তৃণমূল সরকারের। যে তৃণমূলের সাংসদরা কথায় কথায় বিজেপির বিরোধিতা করেন, সেই বিজেপি বা এনডিএ পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে প্রশাসনিক সভায় আসছেন, আর সেখানে বিরোধী দল হলেও একজন সাংসদ এই কীর্তি আজাদ। সেই কারণেই তাকে তার প্রাপ্য মর্যাদা দিয়ে সেই মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আর এটাই দলের উর্ধ্বে উঠে প্রশাসনিক উদারতা সম্পন্ন কাজ বলেই দাবি করছে গেরুয়া শিবির।

বিজেপির আরও দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্যে কোথাও কোনো প্রশাসনিক সভা করলে কোনো বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ পর্যন্ত জানান না। বিন্দুমাত্র তাদের সম্মান দেওয়া হয় না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যে প্রশাসনিক সভা করতে আসছেন, অথচ সেখানে যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও, সাংসদ কীর্তি আজাদকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাই তিনি আসবেন কি আসবেন না, সেটা তার ব্যাপার। কিন্তু মানুষ এই চিত্র দেখে একটা বিষয় স্পষ্ট বুঝে গিয়েছে যে, তৃণমূল সরকার সংকীর্ণ রাজনীতি করে। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দেশের উন্নতির জন্য সকলকে নিয়ে একসাথে চলে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কীর্তি আজাদের নাম প্রধানমন্ত্রীর প্রশাসনিক মঞ্চে ঘোষণা হওয়ার ফলে চরম ঝটকা খেয়ে গেলেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেননা এখন যদি তিনি তার সাংসদকে সেই মঞ্চে না পাঠান, তাহলে জনমানসে প্রশ্ন উঠবে যে, তৃণমূল কি তাহলে এক্ষেত্রে সংকীর্ণ রাজনীতি করছে? পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের মঞ্চে বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধির নাম ঘোষণা হওয়ার পর বাংলার মানুষের মধ্যে এই প্রশ্নও উঠতে শুরু করবে যে, তাহলে কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই রাজ্যে প্রশাসনিক বৈঠক করার সময় বিজেপি বা অন্য কোনো বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানান না? তাহলে তো তিনি নিজেই সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছেন! ফলে সব দিক থেকেই দুর্গাপুরের সভায় তৃণমূল সাংসদের আমন্ত্রণ পাওয়ার ঘটনায় রীতিমত চাপে পড়ে গেলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।