প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
সম্প্রতি বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করে এমনিতেই বিতর্কের মুখে রয়েছেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তৃণমূল তাকে সাসপেন্ড করলেও তলায় তলায় এর পেছনে তৃণমূল তাকে সাপোর্ট দিচ্ছে না তো, এই প্রশ্ন বিরোধীদের মধ্যে রয়েছে। অনেকেই বলছেন, এসব ভোটের আগে তৃণমূল এবং হুমায়ুন কবীরের অভ্যন্তরীণ নাটক নয় তো? আসলে এসব বিজেপির হিন্দু ভোট কাটার একটা গোপন চেষ্টা। তাই হুমায়ুনবাবুর এই সমস্ত গল্পে মাতামাতি করতে নারাজ গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহল। ইতিমধ্যেই তিনি বাবরের নামে মসজিদের শিলান্যাস করায় প্রত্যেকের একটাই প্রশ্ন যে, যে বাবর ভারতবর্ষের আক্রমণ কারী, তার নামে কেন মসজিদ করা হচ্ছে? আর আজ যখন গোটা রাজ্য মুখরিত হয়েছিল ব্রিগেড ময়দানে ৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠে, ঠিক সেই দিনেই ১ লক্ষ কন্ঠে কোরান পাঠের ঘোষণা করলেন হুমায়ুন কবীর।
ইতিমধ্যেই বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করার কারণে তাকে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে দাবি করছেন হুমায়ুন কবীর। পাল্টা বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, এসব তৃণমূল এবং হুমায়ুন বাবুর মধ্যে অভ্যন্তরীণ সেটিংয়ের রাজনীতি। বিজেপি যে হিন্দু ভোট এক ছাতার তলায় করেছে, সেই হিন্দু ভোট পাওয়ার জন্য তৃণমূল এখন লোক দেখানো রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, তারা হুমায়ুন কবীরের মত ব্যক্তিকে সমর্থন করেন না। কিন্তু আসলে তৃণমূলই তাকে দিয়ে এই সমস্ত কাজ করাচ্ছে বলে খোঁচা দিচ্ছে বিরোধীরা। তবে হুমায়ুনবাবু অবশ্য তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দলের বিরুদ্ধেই লড়াই করার কথা বারবার করে সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরছেন। আজ আবার তিনি মিমের সঙ্গে জোট করার কথা বলেছেন। আর এই পরিস্থিতিতে ব্রিগেডে যখন ৫ লক্ষ কন্ঠে গীতা পাঠ হচ্ছে, যখন হিন্দু সনাতনীরা জাগরণ ঘটাচ্ছেন, ঠিক তখনই ফের ১ লক্ষ কন্ঠে কোরান পাঠের ঘোষণা করলেন ভরতপুরের বিধায়ক।
এদিন ব্রিগেডে ৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পাল্টা বড় ঘোষণা করেন হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, “গীতা পাঠ করতেই পারে। সনাতন ধর্মের মানুষ, তারা তাদের কালচার করতেই পারে। এই বিষয়ে আমার তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে। আমি আগামী দিনে মুসলমানদের বেশি বেশি করে বিধানসভায় সিট জেতার জন্য কোরান পাঠের আয়োজন করবো। ১ লক্ষ লোক নিয়ে কোরান পাঠ হবে। তাদের সকলকে খাওয়া দাওয়া করিয়ে দিনভর মুর্শিদাবাদে কোরান পাঠের আয়োজন করব।” আর এখানেই অনেকের প্রশ্ন, ব্রিগেডে যখন সনাতন সংস্কৃতির জাগরণ হচ্ছে, যখন ৫ লক্ষের বেশি কন্ঠে গীতা পাঠ হয়েছে, সেই দিনেই কেন পাল্টা এই ধরনের ঘোষণা করতে হলো হুমায়ুনবাবুকে? তিনি কি তাহলে হিন্দু ধর্ম যা করবে, তার পাল্টা কর্মসূচি করবেন? এই সমস্ত করে যে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে স্থাপিত করা হচ্ছে, যেভাবে ধর্মের সঙ্গে ধর্মের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, তাতে এটা কোথায় গিয়ে থামে, সেদিকেই নজর থাকবে গোটা রাজ্যবাসীর।