প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের কোষাগারে নাকি অর্থ নেই। বিভিন্ন সময় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সোচ্চার হতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু আবার এই রাজ্য সরকার ভাতা, ভর্তুকি থেকে শুরু করে ক্লাবগুলোকে টাকা দিতে দুবার ভাবে না। স্বাভাবিকভাবেই সেই সময় তাদের টাকা কোথা থেকে আসছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে দেখা যায় বিরোধীদের। তাহলে কি রাজ্য সরকার শুধুমাত্র ভোট পাওয়ার জন্যই সেই টাকা খরচ করে? যেখানে টাকা খরচ করা প্রয়োজন, সেখানে কেন তাদের সদিচ্ছা লক্ষ্য করা যায় না? এই প্রশ্নটা উঠছে, কারণ আজ আদালতে কড়ি প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে। বিচার বিভাগীয় কাজের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা উচিত, সেই অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় আজ রাজ্যকে বেশ কিছু প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে আদালত।

কি ঘটনা ঘটেছে? আজ কলকাতা হাইকোর্টে বেশ কিছু প্রশ্নের মুখে পড়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। পরিস্থিতি সামলাতে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়ার পর আগামী সাত দিনের মধ্যে গোটা বিষয়ে রিপোর্ট দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, এদিন বিচারপতি বিচার বিভাগীয় কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। রাজ্যের মুখ্য সচিবের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “সিসিটিভি বসানো এবং ফুটেজ সংরক্ষণ সংক্রান্ত কাজ প্রায় ২০২৪ থেকে আটকে আছে। আর কত দিন সময় লাগবে? প্রধান বিচারপতির সঙ্গে শেষ কবে কথা হয়েছে? জেলা আদালতের দিকে দেখুন। কিভাবে কাজ হচ্ছে দেখুন।”

শুধু তাই নয়, রাজ্যের উদ্দেশ্যে আরও বেশ কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন বিচারপতি। ১৭ কোটি টাকা দেওয়ার যে কথা ছিল, তার কি হলো, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টে কেউ অসুস্থ হলে যে মেডিক্যাল ইউনিট করার কথা হয়েছিল, সেই কাজও এগোচ্ছে না বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি। তিনি বলেন, “৫০ টি প্রকল্প বন্ধ রয়েছে। প্রিন্ট করার কার্টিজ নেই। আদালত কিভাবে চলবে?” আর বিচারপতির এই সমস্ত চোখাচোখা প্রশ্নের মুখে পড়ে রীতিমত অস্বস্তিতে পড়ে যায় রাজ্য। যার ফলে আগামী ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিয়ে কত দিনের মধ্যে এই কাজ শেষ করা যাবে, তা জানানো হবে বলে জানান রাজ্যের মুখ্যসচিব।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রাজ্যের সরকার বিভিন্ন জায়গায় টাকা খরচ করতে পারে। কিন্তু বিচারবিভাগীয় ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য যা যা প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে রাজ্যের খরচ করার মত সামর্থ্য নেই। সেক্ষেত্রে এদিন আদালত যে সমস্ত প্রশ্ন করছে, তা অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য। এখন আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে সাত দিনের মধ্যে এই কাজ শেষ করার ব্যাপারে আদালতকে কি জানান মুখ্যসচিব, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।