প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
রাজ্য এবং এসএসসির দুর্নীতি। আর সেই দুর্নীতির কারণে গোটা প্যানেল বাতিল হয়ে গিয়েছে আদালতের নির্দেশে। যে প্যানেলের মধ্যে অনেক যোগ্য শিক্ষকরাও ছিলেন। আজকে কিছু মানুষ দুর্নীতি করে চাকরি পাওয়ার কারণে প্রচুর যোগ্যদেরও আদালতের নির্দেশে আবার নতুন করে পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। প্রশ্ন একটাই, বহুদিন আগে তারা যে মেধা নিয়ে পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিয়েছিলেন, আবার কি তারা সেই উৎসাহ নিয়ে পরীক্ষায় বসতে পারবেন? আর পরীক্ষায় বসলেও তারা যে অতীতের মতই সাফল্য পাবেন, এর তো কোনো গ্যারান্টি নেই? এত বছর ধরে যারা মেধার ভিত্তিতে পড়াশোনা করে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের আবার পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। এটাতে যোগ্যরা এমনিতেই হতাশার মধ্যে রয়েছেন, চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। আর দিনের শেষে সেই যোগ্যদের মধ্যে কারও যদি পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয় এবং সেই ব্যক্তি যদি চাকরি না পান, তাহলে তাদের ভবিষ্যতের কি হবে? রাজ্যের দুর্নীতির কারণে তো তাদের চাকরি দিয়েছে। তাহলে যোগ্যদের মধ্যে কারও যদি চাকরি এবার বাদ যায়, তাহলে তাদের সংসার চালানোর দায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নেবে তো? এসএসসির
একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় বসার আগে যোগ্যদের মনের ভেতরে যে প্রশ্নটা চলছে, সেটাই তুলে ধরলেন আরও এক যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মন্ডল।
প্রথম দিন থেকেই যে সমস্ত যোগ্যদের চাকরি গিয়েছে, তারা একটাই দাবি করছিলেন যে, তাদের যেন আর পরীক্ষায় বসতে না হয়। একবার তো তারা পরীক্ষা দিয়েছেন, পরীক্ষা দিয়েই তো তারা চাকরি পেয়েছেন। আর অযোগ্যের যে তালিকায় এসএসসি প্রকাশ করেছে, সেখানে তো তাদের নাম নেই। ফলে রাজ্য সরকার আবার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করুক যে, যোগ্যদের তালিকা তাদের কাছে আছে, তাদের আর পরীক্ষায় বসতে হবে না। কিন্তু সেই কাজ রাজ্য সরকার করেনি। ফলে আবার যোগ্যদের পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই যে সমস্ত যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা পরীক্ষা দিচ্ছেন, তারা এখন পরীক্ষা দেওয়ার থেকেও বেশি করে চিন্তায় রয়েছেন যে, তারা চাকরিটা আবার ফিরে পাবেন তো? এখন তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া গেল, যদি সব যোগ্যরা চাকরি পেয়ে গেলেন, তাহলে তো কিছু বলার নেই। কিন্তু যদি কোনো যোগ্য এবার চাকরি না পান, যিনি আগে চাকরি করতেন, এবার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পরে তিনি যদি দেখেন যে, প্যানেলে তার নাম নেই, তাহলে তার মানসিক অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? এতদিন ধরে তিনি চাকরি করে সংসার দাড় করিয়েছেন। এবার যদি আবার তাকে পরীক্ষা দিয়ে নিজের মেধা তিনি প্রমাণ করতে না পারেন, তাহলে তিনি তার সংসার নিয়ে কোথায় যাবেন? এই উত্তর কি দিতে পারবে রাজ্য প্রশাসন? তাই সঠিকভাবেই প্রতিবাদী যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মন্ডল এক নতুন সুর বেঁধে দিলেন।
পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে তার একটাই বক্তব্য যে, একজন যোগ্যও যেন বঞ্চিত না হয়। কারণ অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করে দিয়েছে এসএসসি। তাই কারা যোগ্য, সেটা সকলেই জানে। ফলে সেই যোগ্যতা প্রমাণে আবার তাদের নতুন করে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। কিন্তু নিজেদের যোগ্যতা নিয়ে যারা এতকাল চাকরি করে এসেছেন, তারা আবার পরীক্ষায় বসছেন আদালতের নির্দেশে, সেই সমস্ত কিছু ঠিক আছে। কিন্তু যদি ফলাফল প্রকাশে দেখা যায় যে, কোনো যোগ্যের নাম বাদ গিয়েছে, তাহলে তাদের সংসার চালানোর দায়িত্ব পরিবার চালানোর দায়িত্ব এই রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। কারণ রাজ্য সরকার এবং এসএসসির দুর্নীতির জন্যেই আজকে এত সমস্যা তৈরি হয়েছে। আর প্রতিবাদী যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মন্ডলের এই দাবি এবং বক্তব্যকে সকল যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক, যারা আজকে আবার নতুন করে পরীক্ষা বসেছেন, তারা সকলেই স্বাগত জানাচ্ছেন। তাদের বক্তব্য একটাই যে, দিনের শেষে তারা এতদিন যেভাবে চাকরি করতেন, সেই মতই যেন তারা চাকরি করতে পারেন, তারা নিজেদের সংসারটা চালাতে পারেন। কারণ রাজ্যের দুর্নীতির জন্য তাদের আবার নতুন করে যোগ্যতা প্রমাণ করতে হচ্ছে।