প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের লজ্জা বলতে কিছু নেই। প্রতি মুহূর্তে তারা কিভাবে ক্ষমতা দখল করবে, কিভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকবে, তার চেষ্টা করে আসে। আর সেটা করতে গিয়ে যদি অবৈধ উপায় অবলম্বন করতে হয়, তাতেও কোনো অসুবিধে নেই তৃণমূলের। কারণ তাদের একটাই টার্গেট, ক্ষমতা ভোগ করা। এতদিন কিভাবে পশ্চিমবঙ্গে ভোট হয়েছে, তা সকলেই জানে। ভোটের নামে যে প্রহসন হয়েছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যে মৃত ভোটার, ভুয়ো ভোটাররা আবির্ভূত হয়ে ভোট দিয়ে চলে গিয়েছে, সেই ঘটনা বারবার বিরোধীদের অভিযোগের মধ্যে দিয়ে সামনে এসেছে। তবে এবার সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে রাজ্যে হতে চলেছে এসআইআর। তৃণমূলের এই সমস্ত কারচুপি এই সমস্ত চালাকি এবার আর সহ্য করা হবে না এবং কোথাও তৃণমূল চালাকি করলে এবং বিএলওর তালিকায় তাদের কোনো নেতার নাম থাকলে যে রাতারাতি তাদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেবে বিজেপি, সেই ব্যাপারে প্রথম থেকেই দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর এবার এতকিছুর পরেও সেই বিএলওর তালিকায় দেখা যাচ্ছে এক তৃণমূল নেতার নাম।

এই রাজ্যবাসীর মধ্যে এখন একটাই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে যে, এসআইআরটা কবে হবে? কবে এই রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা, অবৈধ বাংলাদেশি, অনুপ্রবেশকারী এবং মৃত ও ভুয়ো ভোটারদের নাম বাদ যাবে! কারণ ভোটার তালিকায় তৃণমূল এতদিন এদের সাহায্যেই অবৈধ ভোটের মাধ্যমে জিতে এসেছে। তাই এই সমস্ত ব্যক্তির নাম বাদ গেলে তৃণমূলের ভোটে জেতার দিন শেষ হয়ে যাবে বলেই আত্মবিশ্বাসী সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তবে এসআইআরের ক্ষেত্রেও তৃণমূল শেষ মুহূর্তে বেশ কিছু চালাকি করার মরিয়া চেষ্টা করছে বলেই অভিযোগ। যার ফলস্বরূপ এবার মেদিনীপুর থেকে এক ভয়ঙ্কর খবর সামনে এলো। যে খবরের পরিপ্রেক্ষিতে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, তৃণমূল কংগ্রেস জেলায় জেলায় হয়ত এই পন্থা নিয়েই কাজ করার চেষ্টা করবে। যাতে তাদের লোকেদের বিএলওর তালিকায় রাখা যায়। কিন্তু সেক্ষেত্রে বিরোধীরা যদি তাদের কড়া নজর না রাখে, তাহলে তৃণমূল দিনের শেষে বাজিমাত করবে এবং অবৈধ উপায় অবলম্বন করে নিজেদের দলীয় লোকেদের বিএলও করে ভোটে জেতার মরিয়া চেষ্টা করতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই মেদিনীপুর থেকে একটি খবর সামনে এসেছে। যেখানে জানা যাচ্ছে যে, মেদিনীপুরের বিএলওর তালিকায় নাম রয়েছে তৃণমূলের জেলার সম্পাদক শংকর মাঝি নামে এক ব্যক্তির। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে, তৃণমূলের এত বড় পদাধিকারী, তার নাম কি করে বিএলওর তালিকায় থাকে? জানা গিয়েছে মেদিনীপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১৮৩ নম্বর পার্টে নাম রয়েছে এই তৃণমূল নেতার। যেখানে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ রয়েছে, সেখানে তারপরেও তৃণমূল যে সর্ষের মধ্যে কিছু ভূত রেখে দেওয়ার চেষ্টা করছে এবং এই ব্যক্তিদের দ্বারাই, যারা অবৈধ ভোট দিয়ে এতদিন তৃণমূলকে জিতিয়ে এসেছে, তাদের নাম রাখার মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছে, তার আরও একটা চক্রান্তের পর্দা এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে ফাঁস হয়ে গেল বলেই দাবি করছে বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে দাগি তৃণমূল নেতাদের নাম বিএলও তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, তৃণমূল কংগ্রেসের লজ্জা বলতে কিছু নেই। শেষ মুহূর্তেও তারা ভোটার তালিকায় কি করে অবৈধ ভোটারদের রাখা যায়, তার জন্য চেষ্টা করছে। যার ফলস্বরূপ তাদের দলের সম্পাদকের নাম বিএলও তালিকায় দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। অবিলম্বে এই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যারা তৃণমূলের নেতা বলে পরিচিত, তাদের একজনের নামও বিএলওর তালিকায় রাখা যাবে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তৃণমূল তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে সব রকম চেষ্টা করবে। কিন্তু এক্ষেত্রে বিরোধীদের কড়া নজরদারি প্রয়োজন বিজেপির। প্রত্যেকটি বিএলওর তালিকা ধরে ধরে দেখা প্রয়োজন। কারণ তা না হলে তৃণমূল নিজেদের মত ব্যবস্থা করে দেবে। তাই এক্ষেত্রে বিরোধীরা যদি সতর্ক দৃষ্টি না রাখে, তাহলে আবার নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হতে পারে। সেক্ষেত্রে এসআইআর হলেও কোনো লাভ হবে না। তাই মেদিনীপুরে তৃণমূলের এই চালাকি ধরার পাশাপাশি গোটা রাজ্যজুড়ে বিজেপি নেতাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে, যাতে তৃণমূল নিজেদের কোনো দলীয় নেতাকে বিএলওর তালিকায় রাখতে না পারে। স্বাভাবিক ভাবেই মেদিনীপুরে বিএলওর তালিকায় তৃণমূল নেতার নাম দেখার পর বিজেপির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কবে ব্যবস্থা হয় এবং কবে সেই তালিকা থেকে বাদ যায় তৃণমূল নেতার নাম, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।