প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
বেশ কিছুদিন ধরেই ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করছেন। অনেকেই ভেবেছিলেন, তিনি দলত্যাগ করবেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেরকম মেরুদন্ড সোজা রেখে তার সেই পদক্ষেপ সামনে আসেনি। স্বাভাবিকভাবেই বোঝাই যাচ্ছে যে, হয়ত এটা তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ গেমপ্ল্যান। তৃণমূল হয়ত হুমায়ুন কবীরকে এইরকম কিছু বলতে বলেছে, কারন, দুর্নীতি সহ এসআইআরে যে অবৈধ ভোটারদের নাম বাদ যাচ্ছে, তার থেকে নজর ঘোরানোর জন্য তিনি যাতে কিছু বলেন, সেই বিষয় নিয়ে যাতে খবরে আলোচনা হয়, তার জন্যই হয়ত তৃণমূল এই ধরনের প্ল্যানিং করেছে। অন্তত বিরোধীদের পক্ষ থেকে তেমনটাই দাবি করা হচ্ছে। আর এসবের মধ্যেই দেখা গেল যে, সেই হুমায়ুন কবীর এখন আবার বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করার কথা বলছেন। আগামী ৬ ডিসেম্বর তিনি নাকি মুর্শিদাবাদে সেই বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করবেন। আর এখানেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, হঠাৎ করে বাবরি মসজিদ কেন পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে কেন বাবরের নামে কোনো মসজিদ হবে? আর সেই প্রশ্ন তুলে দিয়ে হুমায়ুন কবীর যে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করার কথা বলছেন, তার পেছনেও যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা প্ল্যানিং রয়েছে, সেই তথ্য ফাঁস করে চমকে দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
এই রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত দাবি করা হয় যে, ২০২৬-এ যদি আবার তৃণমূলের সরকার আসে, তাহলে বাঙালি হিন্দু বলে কিছু থাকবে না। কেননা তৃণমূলের সরকার এবং তাদের মুখ্যমন্ত্রী একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে তোষণ করতে গিয়ে বাংলায় হিন্দুদের সর্বনাশ করছেন। আর তার মধ্যেই তৃণমূলের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর, যিনি প্রতিনিয়ত দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেন, তিনি দল থেকে বেরোচ্ছেন না। আবার ঘোষণা করে দিলেন যে, আগামী ৬ ডিসেম্বর তিনি নাকি বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করবেন। যাকে ঘিরে বিরোধীদের মধ্যে তো বটেই, সাধারন মানুষের মধ্যেও হিন্দু সনাতনীদের মধ্যেও নানা প্রশ্ন উঠছে। অন্য কারও নামে মসজিদ করা যেতেই পারে। কিন্তু বাবরের নামে কেন মসজিদ হবে? যে বাবর বারবার ইতিহাসের পাতায় একজন জঘন্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন, যিনি ইব্রাহিম লোদীকে পর্যন্ত মারতে দু’বার ভাবেননি, তার নামে কেন হবে মসজিদ? কেন এত বাবর প্রীতি এই তৃণমূল বিধায়কের? এবার সেই ব্যাপারে সোচ্চার হয়ে হিন্দুদের জন্য যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্দির করছেন, তখন ব্যালেন্স করার জন্য, সংখ্যালঘু ভোট পাওয়ার জন্য তিনি পেছনের দরজা দিয়ে এই তৃণমূল বিধায়ককে সাপোর্ট দিয়ে এই ধরনের মসজিদ করার ক্ষেত্রে উৎসাহ দিচ্ছেন বলেই বুঝিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
এদিন বিজেপির একটি সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। আর সেখানেই তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজিদ তৈরীর যে ঘোষণা, তাকে পাল্টা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেন তিনি। সুকান্তবাবু বলেন, “বাংলার মাটিতে বাবরি মসজিদ দেখতে হবে? আর আমরা চুপ করে বসে থাকব? হবে না। আমরাও স্লোগান দেব, “তেল লাগাও ডাবর কা, নাম মিটাদো বাবর কা।” মনে রাখবেন, এই আলাদা পার্টি, এই পার্টি, এই সমস্ত কিছু গেম হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী একটা দীঘায় কালচারাল সেন্টার তৈরি করে মন্দির বানিয়ে দিয়েছেন। এবার সেটাকে ব্যালেন্স করতে হবে। ব্যালেন্স করার জন্য দু’চারটে লোককে ছেড়ে দিয়েছেন। ত্বহা সিদ্দিকী, এদিক থেকে হুমায়ুন কবীর, তারা গিয়ে এখন মসজিদ তৈরি করবে। তুমি অন্য কারওর নামে মসজিদ বানাও, আমাদের আপত্তি নেই। বাবর তো ভারত আক্রমণ করেছিল। হিন্দু, মুসলিম সবাইকে কেটেছিল। তার নামে কেন আমাকে মসজিদ করতে হবে? তুমি নিজের নামে মসজিদ করো হুমায়ুন কবীর মসজিদ। কে মানা করেছে? কিন্তু এই নাম আমরা মানবো না। প্রয়োজনে আমরা ওখানে রাম মন্দিরের শিলান্যাস করবো। আর রাম মন্দিরও মুর্শিদাবাদে তৈরি হবে।”