প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের যারা সাধারণ মানুষ, যারা এই রাজ্যকে ভালোবাসেন, তারা এখন দেখতে পাচ্ছেন যে, রাজ্যটা সবদিক থেকে শেষ হয়ে যাচ্ছে। চুরি, দুর্নীতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অব্যবস্থা চলছে গোটা রাজ্য জুড়ে। আর তৃণমূল সরকারে আসার পরেই যে এই প্রবণতা সবথেকে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই সম্পর্কে দ্বিমত নেই কারো মধ্যেই। শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে বালি পাচার, কয়লা পাচার সবদিক থেকে সবথেকে বেশি তৃণমূল নেতাদেরই নাম জড়িয়ে পড়ছে বলে দাবি উঠছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে। বিরোধীরা অনেক সময় কটাক্ষ করে এটাও বলছেন যে, তৃণমূল মানেই তো চোর। যদি কোনো সৎ ব্যক্তিও তৃণমূলে গিয়ে থাকেন, তাহলেও তিনি বেশিদিন সৎ থাকতে পারবেন না। চোরেদের দলে গিয়ে তাকেও চুরি, দুর্নীতিতেই নাম লেখাতে হবে। তাই অনেক স্বচ্ছ ব্যক্তিরাও তৃণমূলে যাওয়ার পর অসৎ হয়ে যাচ্ছেন বলে বিরোধীদের পক্ষ থেকে খোঁচা দেওয়া হচ্ছে। আর তার মধ্যেই গতকাল যে খবর সামনে এসেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে যে, তাহলে কি বিরোধীদের এই বক্তব্য সত্যিই? কেননা এতদিন তো তাকে বিতর্কের মধ্যে থাকতে দেখা যায়নি। কিন্তু একসময় তিনি তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন। আজকে যদি বা প্রাক্তন হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যেভাবে তাকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ডেকে পাঠালো এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে যেভাবে তৃণমূলে যেই যাবে সেই চুরি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে বলে দাবি করে বসলেন সুকান্ত মজুমদার, তার ফলে রীতিমত প্রেস্টিজে এই রাজ্যের শাসক দল।

এই রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে বালি পাচার, কয়লা পাচারের ঘটনায় এমনিতেই তৃণমূল যথেষ্ট অস্বস্তিতে। তাদেরকে প্রতিমুহূর্তে চেপে ধরছে বিরোধীরা। শাসকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে একেবারে ওপরতলার মাথার গ্রেপ্তারি দাবি করছেন তারা। আর তার মধ্যেই বেটিং অ্যাপ মামলায় তৃণমূলেরই প্রাক্তন সাংসদ তথা বিশিষ্ট অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীকে আজ দিল্লিতে তলব করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। আর এই খবর সামনে আসার পরেই রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে। তৃণমূলে যুক্ত থাকার সময় থেকেই তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, নাকি জড়িত নন, সেটা তো তদন্তকারী সংস্থা বলবে। জিজ্ঞাসাবাদের পর স্পষ্ট হবে। কিন্তু বিরোধীরা এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে মিমি চক্রবর্তীকে যেমন কটাক্ষ করছেন, ঠিক তেমনই তৃণমূলকেও তুলোধোনা করছেন। তাদের একটাই বক্তব্য, তৃণমূলে যে ব্যক্তিই যাবেন, কেউ স্বচ্ছ থাকতে পারবে না। প্রত্যেকেই চুরি সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে। আর এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। গতকাল সুকান্ত মজুমদার যে কথা বললেন, তারপর অন্তত বিরোধীদের পক্ষ থেকে এইরকম কটাক্ষ করার প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পেতে দেখা যাচ্ছে।

গতকাল সুকান্তবাবুকে সাংবাদিকরা এই মিমি চক্রবর্তীর বেটিং অ্যাপ মামলা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। আর তার উত্তর দিতে গিয়ে তিনি রাজ্যের শাসক দলকে রীতিমত লজ্জার মুখে ফেলে দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, “যদি তিনি যুক্ত থাকেন, তাহলে ইডি ডাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আমি তো আগেই বলেছিলাম, তৃণমূল হচ্ছে নোংরা নর্দমা। আপনি যদি কোনো মিনারেল ওয়াটারের জল খুলে নর্দমায় ঢালেন, তাহলে সেই জল তো আর মিনারেল ওয়াটার থাকে না। নর্দমাতেই রূপান্তরিত হয়। তৃণমূল কংগ্রেস হচ্ছে, সেই রকমই দল। ওখানে দেব থাকুক, মিমি থাকুক, আর শুভশ্রী থাকুক। যেই যাবে, সেই চোর হবে। চোরেদের দলে আবার অন্য কিছু হয় নাকি? চোরেদের দলে ওটাই থাকবে। ওটাই ওদের আইকার্ড। সাধুদের তো এন্ট্রি নেই।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত বড় লজ্জার আক্রমণ হয়ত তৃণমূল অতীতে আর শোনেনি। মিমি চক্রবর্তী কি করেছেন না করেছেন, সেটা তিনি তদন্তকারী সংস্থার কাছে উল্লেখ করবেন। তিনি যদি সত্যিই এই ঘটনার জড়িত না হয়ে থাকেন, তাহলে দিনের শেষে তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। তবে যেভাবে তার নাম জড়িয়ে পড়েছে, যেভাবে তাকে ডাকা হচ্ছে, তাতে বিরোধীরা একটা প্রশ্ন করার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। তারা বলার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে যে, তৃণমূল মানেই দুর্নীতিগ্রস্ত। কারণ চোখের সামনে তো তারা দেখতে পাচ্ছে যে, এই রাজ্যের বুকে তৃণমূল সরকারে আসার পর কত ভয়ংকর ভয়ংকর দুর্নীতি হয়েছে। ফলে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মিমি চক্রবর্তী এককালে তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন। আর তার নাম এখন বেটিং অ্যাপ মামলায় যুক্ত হয়ে যাওয়া এবং তাকে যেভাবে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে, তাতে তৃণমূলকে আবারও নোংরা নর্দমার সঙ্গে তুলনা করলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি।