প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে প্রত্যেকটি নির্বাচনেই এখন হিংসার ঘটনা ঘটে। আগে যে হত না, এমনটা নয়। বিগত বাম সরকারের আমলেও প্রত্যেকটি ভোটেই হিংসার ঘটনা ঘটতো। কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে পৌরসভা এবং ইদানিংকালে যেভাবে সমবায় নির্বাচনেও হিংসার ঘটনা ঘটছে, তাতে একটাই প্রশ্ন উঠছে যে, সবকিছুই কি দখল করতে হবে এই রাজ্যের শাসক দলকে? গায়ের জোরে সব কিছু দখল করতে গিয়ে কেন হিংসার পথ বেছে নিতেই হবে? কেন ভয়ের বাতাবরণ সৃষ্টি করতে হবে গণতন্ত্রের উৎসবে? সাথে সাথে এই প্রশ্নটাও উঠতে শুরু করেছে যে, সমবায়ের মত সামান্য ভোটেও যদি সবকিছু দখল করতে গিয়ে হিংসার পথ বেছে নিতে হয় কোনো রাজনৈতিক দলকে, তাহলে সামনেই তো ২০২৬ এর বিধানসভায় নির্বাচন। তাহলে সেই নির্বাচনে হিংসা ঠিক কোন আকার ধারণ করতে পারে?

বর্তমানে এই রাজ্যে একটি ট্রেন্ড লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো যে সমস্ত সমবায় সমিতির নির্বাচন হচ্ছে, সেখানেও আশ্চর্যজনকভাবে ভালো ফল করছে গেরুয়া শিবির। বোঝাই যাচ্ছে যে, বিন্দু বিন্দুতেই সিন্ধু তৈরি হতে পারে। ২০২৬ এর নির্বাচনের আগে খেলা ঘোরার একটা স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় সমবায় নির্বাচনে বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীদের জয়লাভের মধ্যে দিয়ে। এতদিন পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে পৌরসভা নির্বাচনগুলিতে হিংসা, বুথ দখলেলের অভিযোগ আসত। আর এবার সমবায় নির্বাচনেও বিজেপি ভালো ফল করছে দেখে কি সেখানেও সমস্ত কিছু নিজেদের দখলে রাখতে সেই হিংসার পথ বেছে নিতে শুরু করলো এই রাজ্যের শাসক দল? ইতিমধ্যেই খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের সমবায় নির্বাচনে বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যে ঘটনায় ইতিমধ্যেই একটি তাজা বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ।

কি ঘটনা ঘটেছে? ঘটনা যেটা ঘটেছে, সেটা অনেকের কাছে শুনলেই সামান্য মনে হতে পারে। অনেকেই বলতেই পারেন যে, পশ্চিমবঙ্গে আর এটা এমন কি ঘটনা? এ তো হামেশাই ঘটে থাকে। যেখানে প্রতিনিয়ত বোমা, গুলি উদ্ধার হচ্ছে, সেখানে ক্ষমতা দখলে রাখার জন্য এমনটা হবে, এটা তো অত্যন্ত স্বাভাবিক। কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য এই ঘটনা অত্যন্ত চিন্তাদায়ক। জানা গিয়েছে, খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের জনাখা অঞ্চলের গোড়াহার সমবায় নির্বাচনে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ, বিজেপি সমর্থিত প্রার্থী অমৃত পাত্রর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই সেই তাজা বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। যদিও বা তৃণমূল সেই অভিযোগকে অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেছে যে, বিজেপি নিজেরাই এই সমস্ত কাণ্ডকলাপ করে তৃণমূলের ঘাড়ে মিথ্যে দোষ চাপাচ্ছে।

আর এখানেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কে বোমাবাজি করেছে, কি তার বৃত্তান্ত, সেটা তো যদি তদন্ত ঠিক মত হয়, তাহলেই বেরিয়ে আসবে। যদিও বা এই রাজ্যে পুলিশি তদন্ত যে একতরফা হয় এবং সব জায়গায় যে বিরোধীদের ফাঁসানোর একটা চেষ্টা হয়, তা তো বিভিন্ন ঘটনার মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে মূল যে বিষয় এই ঘটনা থেকে উঠে আসছে, সেটা অত্যন্ত চিন্তাদায়ক। কেননা হাতে আর কয়েক মাস বাকি, তারপরেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। তবে সামান্য সমবায় নির্বাচনেও যদি নিরাপত্তাটুকু না থাকে, তার আগেও যদি এইভাবে হিংসার ঘটনা ঘটতে থাকে, বোমাবাজির ঘটনা ঘটতে থাকে, তাহলে আগামী বিধানসভা নির্বাচন, যেটা মূল ক্ষমতা দখলের লড়াই, সেই নির্বাচনে জিততে বাংলায় ঠিক কতটা হিংসা হতে পারে? ফলে এই ছোটখাটো নির্বাচনে যে হিংসা হচ্ছে, তা দেখে ভবিষ্যতে বড় হিংসা আটকানোর জন্য এখন থেকেই নির্বাচন কমিশনের গ্রহণ করা উচিত কড়া পদক্ষেপ। তেমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।