প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- একদিকে এসআইআরের চাপে নাকি বিএলওদের মৃত্যু হচ্ছে, বিএলওদের জন্য নাকি তার প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে। আর সেই কারণে তিনি নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে বিএলওদের এত চাপের বিষয়টি উল্লেখ করে এসআইআর স্থগিত করার আবেদন করছেন। অথচ সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলেরই বিধায়ক থেকে শুরু করে নেতা-নেত্রীরা ক্রমাগত হুমকি, হুশিয়ারি দিয়েই চলেছেন। বিরোধীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, কোথাও যদি কোনো বিএলও নিরপেক্ষভাবে কাজ করেন, তাহলে তাদের প্রতিনিয়ত শাসক দলের নেতাদের শাসানি মুখে পড়তে হচ্ছে। কারণ তৃণমূল চাইছে, যেভাবেই হোক, অবৈধ ভোটারের নাম বাদ দিতে। আর এই অবৈধ ভোটারকেই বৈধ ভোটার বলে চালানোর মরিয়া চেষ্টা করছে এই রাজ্যের শাসক দল বলেই অভিযোগ করছে বিরোধীরা। আর এসবের মধ্যেই এবার কোনো বৈধ ভোটারের নাম যদি বাদ যায়, তাহলে সেই বিএলওর হাত ভেঙে দেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিলেন তৃণমূল বিধায়ক শ্যামল মন্ডল।
এই রাজ্যে এসআইআরের বিরুদ্ধে প্রথম দিন থেকেই মন্তব্য করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। কোনোমতেই এসআইআর হতে দেওয়া যাবে না বলে অতীতে মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। কিন্তু পরবর্তীতে এই রাজ্যে এসআইআর হয়েছে এবং এখন সেই প্রক্রিয়া চলছে। আর যত দিন যাচ্ছে, ততই তৃণমূলের আতঙ্ক আরও বাড়তে শুরু করেছে। কারণ তারা খুব ভালো মতোই জানে যে, অবৈধ ভোটারের নাম ভোটার তালিকায় থাকবে না। তবে তৃণমূলের কাছে এই অবৈধ ভোটাররাই কি বৈধ ভোটার? আর তাদেরকে রাখার জন্যই কি মরিয়া হয়ে উঠেছেন এই রাজ্যে শাসকদলের নেতা-নেত্রীরা? বিরোধীদের পক্ষ থেকে এই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, কারণ, বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল নেতারা হুমকি, হুশিয়ারি দিচ্ছেন। আর তার মধ্যেই তৃণমূল বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল বিএলওদের উদ্দেশ্যে সরাসরি হুশিয়ারি দিয়ে বসলেন। আর তার এই মন্তব্য ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তৃণমূল বিধায়ক যেভাবে হুঁশিয়ারি দিলেন, তা তো সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ জানানো। ফলে কমিশন কবে এই বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।
এদিন একটি কর্মসূচিতে বিএলওদের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারি দিয়ে বসেন তৃণমূল বিধায়ক শ্যামল মন্ডল। যেখানে তিনি বলেন, “যদি কোনো বিএলও, ইচ্ছাকৃতভাবে একজনও প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ যায়, তাহলে প্রয়োজনে আমরা প্রথমে বোঝাবো। আর ইচ্ছাকৃত ভুল হলে প্রয়োজনে তার হাত আমরা ভেঙ্গে দেব।” আর এখানেই বিরোধীদের প্রশ্ন যে, বি এলওদের জন্য তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত কান্নাকাটি শুরু করেছেন যে, তাদের কষ্ট, তাদের চাপ নাকি তিনি দেখতে পারছেন না। অথচ প্রকাশ্যে তার দলের বিধায়ক এইভাবে বিএলওদের হুমকি দিচ্ছেন। এর জন্য যদি কোনো বিএলও মানসিক চাপে থাকেন, তাহলে তার দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেবেন তো? যেভাবে তৃণমূল বিধায়ক বিএলওদের ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলেন, তাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করলেন, তাতে কেন এই বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না! তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।