প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছেন যে, এবার রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিক পদে যিনি রয়েছেন, তিনি তার কথামত কাজ করবেন না। আর একের পর এক নির্বাচনী প্রস্তুতি যেভাবে শুরু হচ্ছে, যেভাবে এসআইআরের প্রস্তুতি শুরু হতে দেখা যাচ্ছে, তাতে রীতিমতো আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে রাজ্যের সেই মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে গতকাল আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে পরোক্ষে তাকে হুমকি দিয়েছেন তিনি বলেই অভিযোগ উঠছে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে যেভাবে রাজ্যের সিইওকে মুখ্যমন্ত্রী আক্রমণ করেছেন এবং হুমকি দিয়েছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানালেন বিরোধী দলনেতা।

গতকালই যখন নির্বাচন কমিশন কোলাঘাটে বৈঠক করছে, যখন শোনা যাচ্ছে যে, এসআইআর নিয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে, ঠিক তখনই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন যে, এসআইআরের বদলে ঘুরপথে এনআরসি করার চক্রান্ত হচ্ছে। এমনকি রাজ্যের যিনি নির্বাচনী আধিকারিক, অর্থাৎ সিইও, তাকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরোক্ষে তাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের বিরুদ্ধে।‌ আর রাজ্যের প্রধান সচিবালয় নবান্ন থেকে মুখ্যসচিবকে পাশে বসিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে একজন নির্বাচনী আধিকারিককে আক্রমণ করলেন, তা গণতন্ত্র এবং সংবিধানকে লংঘন বলেই দাবি করতে শুরু করেছে বিরোধীরা। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই এবার রাজ্যের যিনি মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এবং সিইও তাকে তার অফিসে এবং বাড়িতে সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের আক্রমণাত্মক মন্তব্যের বিরুদ্ধে যাতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তার জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।

বিরোধীদের দাবি, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গণতন্ত্র বলে কিছুই মানেন না। প্রতি সময় তিনি নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে যারাই তার বিরুদ্ধে যাবে, তাদেরকেই তিনি চ্যালেঞ্জ করেন। এর আগে যিনি মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ছিলেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলদাস হিসেবে কাজ করেছেন। যার ফলে তার বিরুদ্ধে কিছুই বলতে দেখা যায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু বর্তমানে যিনি মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন, তিনি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছতা সহকারে পালন করার চেষ্টা করছেন। যার ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তেলে বেগুনে জ্বলে উঠছেন। যার ফলস্বরূপ গতকাল নবান্ন থেকে একেবারে মুখ্যসচিবকে পাশে বসিয়ে সেই রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিককেও হুমকি দিয়েছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তবে এরপরেও যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনোরূপ কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে সংবিধানের প্রতি, দেশের গণতন্ত্রের প্রতি মানুষের ভরসা অনেকটাই কমে যাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।