প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুনবাবু অনেক কথা বলছেন। তিনি বলছেন, তিনি নাকি মিমের সঙ্গে জোট করবেন। আবার বলছেন, আইএসএফ থেকে শুরু করে বাম, কংগ্রেস তার সঙ্গে এলেও কোনো ক্ষতি নেই। তবে তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, তিনি সংখ্যালঘুদের নিয়ে এবার লড়াই করতে চান এবং বেশিরভাগ আসন থেকে সংখ্যালঘু প্রার্থীদের জয়লাভ করে বিধানসভা ভোটের পর একটা নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চান। এখন ভোটের বাক্সে কতটা তিনি খেলা দেখাতে পারবেন, সেটা তো সময় বলবে। তিনি যে তৃণমূলের সঙ্গে সেটিং করেই এই সমস্ত কাজ করছেন না, সেই ব্যাপারেও অনেকের মনে সন্দেহ রয়েছে। আর এসবের মধ্যেই যে বিজেপি বারবার করে বলা সত্ত্বেও মুসলমানদের একটা বড় অংশের ভোট তৃণমূলের দিকে যায়, তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া এবং নতুন দলের কথা বলে আগামী নির্বাচনে লড়াই করার হুংকার দেওয়া হুমায়ুন কবীর এবার সেই বিজেপিকেই সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে দিলেন বড় বার্তা।
এই রাজ্যের বুকে অনেক সময়ই বিজেপি সম্পর্কে একটা ভুল ধারণা তৈরি হয়েছিল সংখ্যালঘুদের। তারা ভাবতে শুরু করেছিলেন যে, বিজেপি হচ্ছে সংখ্যালঘু বিরোধী দল। কিন্তু বিজেপি এমন একটি রাজনৈতিক দল, যারা সমস্ত ধর্মের উন্নতির কথা বলে। তবে এই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস সংখ্যালঘুদের সমস্ত ভোট পাওয়ার জন্য বিজেপির বিরুদ্ধে তাদের ক্ষেপিয়ে তোলার একটা কৌশলের রাস্তা বেছে নিয়েছিল। অন্তত তেমনটাই দাবি করেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। বারবার করে শুভেন্দু অধিকারীকে সংখ্যালঘু বিরোধী মুখ বলে অনেকে প্রচার করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শুভেন্দুবাবু বলেছেন যে, তিনি সংখ্যালঘুদের ভোট চান, কিন্তু সেই ভোট তারা পান না। এমনকি রাষ্ট্রবাদী মুসলিমরা তাদের দিকে এলে তারা অত্যন্ত খুশি হবেন বলেও মন্তব্য করেন বিভিন্ন বিজেপি নেতারা। আর এই পরিস্থিতিতে এবার নিজের দর্প বাড়িয়ে হুমায়ুন কবীর বোঝাতে চাইলেন যে, সংখ্যালঘু ভোট চাইতে শুরু করেছে বিজেপি। এক্ষেত্রে নিজের দর বাড়িয়ে তিনি এমন কিছু কথা বললেন, যার মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হচ্ছে যে, তিনি সংখ্যালঘুদের ভোটের এক নির্ণায়ক শক্তি হয়ে দাঁড়াবেন, তাই তাকে গুরুত্ব না দিলে চলবে না।
এদিন সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে বিজেপির ভাবনা প্রসঙ্গে বড় মন্তব্য করেন হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় যে, ওনারা দেরিতে হলেও বুঝেছেন। বাংলায় ৩৭ শতাংশ মুসলিম রয়েছেন। ২ কোটি ৮২ লক্ষের কাছাকাছি ভোট রয়েছে। কাজেই তাদের কিছু ভোট না পেলে তারা যে এককভাবে হিন্দু ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসতে পারবে না, এটা দেরিতে হলেও বিজেপি নেতাদের বোধগম্য হয়েছে। এটা আমার মনে হচ্ছে।” আর এখানেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন দর বানানোর খেলায় নেমেছেন হুমায়ুন কবীর। তিনি বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, সংখ্যালঘুরা তার দিকে রয়েছে। তাই বিজেপি যদি ভাবে যে, শুধুমাত্র হিন্দুদের ভোট পেয়ে তারা ক্ষমতায় আসবে, তাহলে তা হবে না। তাই তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর এখন সংখ্যালঘু ভোটের প্রলোভন দেখিয়ে নির্ণায়ক শক্তি হওয়ার মরিয়া চেষ্টা করছেন ভরতপুরের বিধায়ক বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।