প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- একসময় বাম সরকারের আমলের শেষের দিকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সমস্ত আন্দোলন করেছিলেন, তার প্রত্যেকটাই ধ্বংসাত্মক আন্দোলন ছিল। সেই সময় মানুষ বাম সরকারকে বিদায় দিতে চাওয়ার কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিল ঠিকই। কিন্তু আজকে যারা সেই সময় নেত্রীর সঙ্গে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিলেন, তাদের অনেকেই বিরোধী হিসেবে নাম লিখিয়েছেন। আর তারা এখন উপলব্ধি করতে পারছেন যে, কিভাবে সেই সময় ক্ষমতায় আসার জন্য আন্দোলন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বইকার যুবক যুবতী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের সর্বনাশ করেছেন। বিরোধীরা মাঝেমধ্যেই এই কথা বলেন। আর সব থেকে বেশি বিরোধীদের মধ্যে থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই রাজ্যে শিল্প না হওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করেন। কারণ একসময় এই টাটা নামক জনপ্রিয় শিল্পগোষ্ঠীকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের জন্য এই রাজ্য ছাড়া হতে হয়েছিল। তাই বিজেপিকে ক্ষমতায় আনলেই রাজ্যে শিল্পনগরী হবে। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন বঙ্গবাসীকে সেই স্বপ্নই দেখালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

হাতে আর কয়েক মাস বাকি। তারপরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ২৬ এর নির্বাচনে যেভাবেই হোক তৃণমূল সরকারকে বিদায় দিতে হবে। আর এই নির্বাচনেও যদি তৃণমূলের বিদায় নিশ্চিত না হয়, তাহলে রাজ্য যে আরও অন্ধকারে চলে যাবে বেকার যুবক-যুবতীদের হাতে কাজ বলে যে আর কিছুই থাকবে না, তা বারবার করে মানুষের কাছে তুলে ধরছে বিজেপি। আর গতকাল প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের দিনে, যেদিন বিশ্বকর্মা পূজাও পড়েছে, ঠিক সেই দিনেই একটি কর্মসূচি থেকে বাংলার মানুষের মনে শিল্পের স্বপ্ন জাগানোর চেষ্টা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। মানুষের মনে আশা যোগানোর চেষ্টা করলেন যে, এবারের নির্বাচনটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিতাড়িত করার নির্বাচন করুন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্য থেকে বিদায় নিলেই টাটাকে ফিরিয়ে আনবে বিজেপি।

গতকাল একটি সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “২৬ এর নির্বাচনে টাটাকে ফিরিয়ে আনার ভোট করুন। আর যারা টাটাকে তাড়িয়েছে, তাদের হারানোর নির্বাচন করুন। মমতা ব্যানার্জির আমলে ৬ হাজার ৮৮৮ টা কারখানা বন্ধ হয়েছে। ৮ হাজার ২০০ স্কুল বন্ধ হয়েছে। ২ কোটি ১৫ লক্ষ বেকার হয়েছে। ৬০ লক্ষ যুবক বাড়ি ছেড়ে পরিযায়ী শ্রমিকের নাম লিখিয়েছে।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যের দিকে তাকালেই এখন শুধু হাহাকার ছাড়া আর কিছু দেখতে পাওয়া যায় না। কারণ এই রাজ্যে কাজ নেই। এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যেমন চাকরি দিতে পারে না, ঠিক তেমনই এই সরকারের দুর্নীতির কারণে, এসএসসির অযোগ্যতার কারণে কিছু ব্যক্তিদের পাওয়া চাকরি চলে যায় আদালতের নির্দেশে। আবার চাকরি না পেলেও যে শিল্পে কর্মসংস্থান হবে, সেই দিকও খোলা নেই। কারণ তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগেই এই রাজ্যে যে শিল্পের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, সেই টাটাকে আন্দোলন করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এবার সেই তৃণমূলের বিদায়ের মধ্যে দিয়েই টাটার আগমন নিশ্চিত হবে এবং রাজ্যে শিল্পের সম্ভাবনা তৈরি হবে বলেই আশা যোগালেন শুভেন্দু অধিকারী।