প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তো এগিয়ে বাংলা প্রকল্প চালু করেছেন। লক্ষীর ভান্ডার করেছেন। রাজ্যকে নাকি তিনি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তিনি নাকি যে কাজ করে দিয়েছেন, তা আগামী ৯০ বছরে কেউ করতে পারবে না। ইত্যাদি অনেক কথা সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলের নেতা-নেত্রীদের মুখ থেকে শোনা যায়। গোটা রাজ্যে সন্ত্রাস বাদীদের মাথা তুলে দাঁড়ানোর মত হিম্মত নেই, এইরকম কথাও তাদের মুখ থেকে শোনা যায়। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে কলকাতার ভেতরে একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যার নাম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানে কেন মাঝেমধ্যেই একের পর এক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে? আর সেই ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেই কেন তৃণমূল নেতারা দাবি করছেন যে, যাদবপুর বাম এবং অতিবামদের আতুড়ঘর! এই রাজ্যে বিজেপি নেতাদের কেস দিতে তো তৃণমূল এবং তাদের সরকারের পুলিশ দুইবার ভাবে না। মিথ্যে মামলা দিয়ে বিজেপি নেতাদের জেলে ভরতেও তো তাদের দু মিনিট সময় লাগে না। তাহলে সেই কাজ কেন তারা রাজ্যে কার্যত শূন্য হয়ে যাওয়া বামেদের ক্ষেত্রে করতে পারছে না? যারা যাদবপুরকে বারবার অশান্ত করে তুলছে বলে এই তৃণমূলের নেতারাই দাবি করছেন, তারাই রাস্তায় নামছেন যাদবপুরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, তারা শাসন ক্ষমতায় থাকার পরেও কেন এই যাদবপুরকে শিক্ষা দিতে পারছেন না? এই প্রশ্নগুলো উঠছে, তার কারণ, আজকে তৃণমূলেরই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই যাদবপুর নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেছেন। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই পাল্টা কিছু মন্তব্য করতে শুরু করেছে বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহল।

প্রথমে জেনে নেওয়া যাক যে, কল্যাণবাবু কি বলেছেন? তিনি আজকে যাদবপুরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের বলেছেন যে, “যাদবপুর হচ্ছে বাম এবং অতিবামদের আতুড়ঘর। সিপিএম যেভাবে ৩৪ বছর ধরে রাজত্ব করেছে, ঠিক সেই কায়দাতেই যাদবপুরকে নষ্ট করে দিচ্ছে কিছু ব্যক্তি। ১০ শতাংশ মানুষ রয়েছেন, যারা যাদবপুরে এই সমস্ত কার্যকলাপ করছেন। এদের কোনোভাবেই কন্ট্রোল করা যায় না।” পাশাপাশি তৃণমূলের এই সাংসদ এটাও দাবি করেছেন যে, যাদবপুরে এই যে অল্পসংখ্যক মানুষ, তারা নেশাজাতীয় দ্রব্য নিয়ে থাকে। পাশাপাশি এরা চরিত্রহীন বলেও মন্তব্য করেছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এখানেই পাল্টা প্রশ্ন উঠছে যে, তৃণমূল তো সব পারে। তারা রাজ্যকে শান্ত করতে পারে, বিরোধীরা গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ করলে তাদের ঠান্ডা করতে মিথ্যে মামলা দিতে পারে, প্রতিবাদী সাংবাদিক থেকে শুরু করে ইউটিউবারদের বাড়িতে গিয়ে দরজা ভেঙে তাদের ভিডিও করার সরঞ্জাম তুলে নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এই ১০ শতাংশ ব্যক্তি, যারা যাদবপুরকে অশান্ত করছে, তাদের কেন ঠান্ডা করতে পারছে না? নাকি ভেতরে ভেতরে একটা সেটিং চলছে?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মধ্যে দুটো অংক রয়েছে। যারা এই যাদবপুরে বাম এবং অতিবাম, যারা প্রতিনিয়ত যাদবপুরকে অশান্ত করছে, তারাই ভোটের সময় নো ভোট টু বিজেপি করে। ফলে তাদের প্রতি একটা সমর্থন ভোটবাক্সে ঘুরিয়ে বিজেপিকে চাপে ফেলার জন্য হয়ত তৃণমূল সরকারের পক্ষ থেকে থাকলেও থাকতে পারে। কারণ, যদি তা নাই থাকত, তাহলে এতদিনে তৃণমূলের মত দল প্রশাসনে আছে, অথচ যাদবপুরকে টাইট দিতে পারছে না, এমনটা হতেই পারে না। তারা ইচ্ছা করলেই নিজেদের সমস্ত কৌশল কাজে লাগিয়ে যাদবপুরের এই অবৈধ কার্যকলাপ, যারা এর সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়ে যাদবপুরে যে অশান্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা শান্ত করার পথে এগিয়ে যেতেই পারত। তাহলে এই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে বলছেন যে, এদের কন্ট্রোল করা যায় না, কিন্তু বাস্তবে এদের কন্ট্রোল করা যায়। ইচ্ছাকৃতভাবেই কল্যাণ বাবুদের দল এবং তাদের দলের পক্ষ থেকে পরিচালিত রাজ্য সরকার এবং তার প্রশাসন শুধুমাত্র বিজেপিকে চাপে রাখতে এবং ভোটের সময় নো ভোট টু বিজেপি করতেই যাদবপুরের এই সমস্ত মাকুদের পরোক্ষে প্রশ্রয় দেওয়ার কাজটা করেই চলেছে। কটাক্ষ করে তেমনটাই বলছে বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহল।