প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধন এবং পার্মানেন্ট স্টাফেরা বিএলওর দায়িত্ব পেতেই কি এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভয় পাচ্ছেন? তিনি বুঝতে পারছেন যে, তার পার্টির ক্যাডাররা বিএলওর পদ থেকে সরে যাচ্ছে! আর এখন নির্বাচন কমিশন সর্ষের মধ্যে থাকা ভূতগুলোকে সরকারি কর্মচারী যারা বিএলও হয়েছেন, তাদের মধ্যে দিয়ে প্রকাশ্যে নিয়ে চলে আসবেন। আর তাতে সেই ভুয়ো ভোটারদের নাম বাদ গেলে তার ক্ষমতায় থাকা হবে না। এসব অনুধাবন করেই কি কিছুদিন আগে বিএলওদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? তবে রাজ্যের বুকে কেউ যে আর মুখ্যমন্ত্রীর এই সমস্ত হুমকি, হুঁশিয়ারিতে ভয় পায় না, এবারের নির্বাচন যে সকলেই চায়, তৃণমূল বিদায়ের নির্বাচন হোক, তা মুখ্যমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারি পর বিএলওদের মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই বিএলওদের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আপনারা বিএলও, যেসব লিস্ট করেছেন, বিএলওদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, ভোটার লিস্ট থেকে কারও নাম যেন বাদ না যায়, সেটা দেখার। এটা মনে রাখবেন, আপনারা চাকরি করেন রাজ্য সরকারের।” অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী তার এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন যে, রাজ্য সরকারের চাকরি করছেন, তাই বিএলও হয়ে যদি কারও নাম বাদ দেন, তাহলে তার ফল ভুগতে হবে। অর্থাৎ তিনি ঘুরিয়ে সেই সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের হুশিয়ারি দিয়েছেন, যাতে তার সাধের ভোটব্যাঙ্ক যারা রয়েছে, তাদের নাম কোনোমতেই ভোটার তালিকা থেকে বাদ না যায়। আর যদি তা বাদ যায়, তাহলে তার ফল এই সমস্ত সরকারি কর্মচারীকে ভুগতে হবে বলেই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সেই বিএলওরাও। তারাও বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তারা মুখ্যমন্ত্রীর এই সমস্ত হুমকি, হুঁশিয়ারিতে আর ভয় পান না।
বিএলওর দায়িত্বপ্রাপ্ত এক শিক্ষিকা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে বললেন, এটা তো কোল্ড থ্রেট। ওনার নৈতিক অধিকার আছে? কমিশনকে সুরক্ষা দিতে হবে। আমি যদি দেখি কেউ এই ঠিকানায় থাকে না, অন্য দেশের নাগরিক, তাহলে তো আমাকে তা বাদ দিতে হবে।” অন্যদিকে বিএলওর দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষক চিরঞ্জিত ধীবর বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে আমাদের অনুরোধের সুরে হুমকি দিয়েছেন যে, আমরা যেন ভোটার তালিকা কোনো নাম বাদ না দিই। এটা তো অস্বাভাবিক। আমরা তো বিভিন্ন জায়গায় জানি যে, মৃত ভোটার থাকতে পারে, ভুয়ো ভোটার থাকতে পারে। আমরা শিরদাঁড়া বিক্রি করব না।”
আর এখানেই রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির ঘনিষ্ট মহলের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী এই সমস্ত হুমকি দিয়ে আর খেলা ঘোরাতে পারবেন না। কারণ যারা বিএলও রয়েছেন, তারাও বুঝে গিয়েছেন যে, এই রাজ্যের সরকার কতটা অনিয়মভাবে ক্ষমতায় বসে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ভাবছেন, ২০২৬ সালে তিনি আবার ক্ষমতায় আসবেন এবং তারপর যারা সঠিকভাবে বিলওর দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের প্রতি বদলা নেবেন। কিন্তু যারা এখন বিএলও হিসেবে রয়েছেন, তারা কেউ ভয় পাবেন না। নিজেদের কাজ দায়িত্বপূর্ণ সহযোগে করে যান। তাতে যদি অনিয়ম ভাবে কেউ ভোটার লিস্টে থাকে এবং কারও নাম বাদ দিতে হয়, তাহলে সেই নাম অবশ্যই বাদ যাবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই সমস্ত হুমকি, হুঁশিয়ারিতে ভয় পেলে রাজ্যের গণতন্ত্র উদ্ধার হবে না। ফলে সেক্ষেত্রে সেই সমস্ত সাহসী প্রতিবাদী বিএলওদের পাশে থাকারই বার্তা দিচ্ছেন পদ্ম শিবিরের নেতারা।