প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এতটাই রাজ্য পরিচালনায় দক্ষ যে, তিনি রাজ্যে কোথাও কোনো মহিলার সঙ্গে অন্যায় মূলক কোনো ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই তদন্ত হওয়ার আগেই তিনি বলে দেন, কি হয়েছে। যার ফলে পরবর্তীতে আর তদন্ত করে অন্য কোনো রিপোর্ট নিয়ে আসার মত ক্ষমতা থাকে না প্রশাসনের। আবার মঞ্চ থেকেই তিনি কে মাওবাদী, তা আখ্যা দিতে দুবার ভাবেন না। স্বাভাবিকভাবেই তদন্তকারী সংস্থার ওপর ভরসা না রেখে নিজে থেকেই যে কোনো ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীর এই যে আগ বাড়িয়ে মন্তব্য, তা তাকে তার দলের কাছে বড় করতে পারে। কিন্তু জনমানসে তার ভাবমূর্তি যে এই সবজান্তা মনোভাবের জন্য অত্যন্ত বেশি করে ক্ষুন্ন হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি দিল্লি বিস্ফোরণ হয়েছে। আর তারপরেই দফায় দফায় বৈঠক করে গোটা বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে তারপরেই তো একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কি হয়েছে, তা বলতে হবে। আর যাই হোক, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত নয় যে, আগেভাগেই তিনি যা খুশি একটা কমেন্ট করে দেবেন এবং তারপর প্রশ্নের মুখে পড়বেন। তিনি অত্যন্ত দায়িত্বশীল মানুষ। তাকে প্রশাসন চালাতে হয় এবং তিনি দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত দায়বদ্ধ। ফলে দিল্লির বুকে এই ধরনের ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর তা সন্ত্রাসবাদীদের হামলা, নাকি অন্য কোনো ঘটনা, তা নিয়ে যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুখ খোলেননি, তখন সেই বিষয়ে পাল্টা আসরে নেমে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস তৃণমূলের এই রাজ্যের এক মন্ত্রী। তিনি আবার প্রশ্ন তুলেছেন যে, কেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঠিক কি কারণে এই বিস্ফোরণ হয়েছে, তা নিয়ে মুখ খুলছেন না। আর সেখানেই পাল্টা জবাব দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত ওই দূর থেকেই কে মাওবাদী, তা ঠিক করে দেওয়ার মত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নন বলেই জানিয়ে দিলেন সুকান্ত মজুমদার।
গতকালই তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটি সাংবাদিক বৈঠক করা হয়েছে। যেখানে শশী পাঁজা প্রশ্ন তুলেছেন যে, দিল্লির বুকে এত বড় বোমা বিস্ফোরণ হয়ে গেল। তারপরেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এর যথাযোগ্য কারণ সামনে আনলেন না! স্বাভাবিকভাবেই তাদের এই প্রশ্ন তারা করতেই পারেন। কিন্তু এখানেই পাল্টা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, এখন বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের আমলে দেশে বিস্ফোরণ কথাটা প্রায় উঠেই গিয়েছে। কিন্তু দিল্লিতে এই বিস্ফোরণের ঘটনার পর তো বিস্তারিত তথ্য নিয়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মুখ খুলতে হবে। যা খুশি তাই তো আর বলে দেওয়া যায় না। ফলে তিনি সময় নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করেই তার কথা জানাবেন। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের এই তাড়াহুড়ো মনোভাব কেন, তাহলে কি তারা চাইছে যে, তাদের দলনেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে যে কোনো ঘটনায় তদন্ত হওয়ার আগেই যা খুশি তাই বলে দেয় এবং বিতর্কের মুখে পড়েন, সেই একই পথ বেছে নেবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে এই বহুমুখী প্রতিভা থাকলেও, দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে, দেশকে সুরক্ষিত রাখতে এইরকম চটজলদি মন্তব্য করে আর যাই হোক, অমিত শাহ দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেবেন না। সাংবাদিক বৈঠকে সেই কথাই বুঝিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
এদিন অমিত শাহকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে আক্রমণ করতেই পাল্টা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুলনা টেনে তৃণমূলের চাপ বাড়িয়ে দেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “দেখুন, আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত নাক বা চোখ নেই যে, মঞ্চ থেকে দাঁড়িয়ে উনি ৫০০ মিটার দূরে থাকা কাউকে দেখে গন্ধ শুকে বলে দেবেন যে, কে মাওবাদী আর কে মাওবাদী নয়! এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পারেন, আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পারেন না। আমরা তো মেনে নিচ্ছি, আমরাও পারি না। আমরা মানুষ তো, মহাপুরুষ তো নই। এটা একমাত্র নিতান্তই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইউনিক ট্যালেন্ট যে, ৫০০ মিটার দূর থেকে উনি কে মাওবাদী, কে টেররিস্ট, এগুলো সব ধরে নিতে পারেন। শুধু রোহিঙ্গা চিনতে পারেন না। রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি মুসলিম তারা ঢুকলে পরে তখন তাদের দক্ষিণ 24 পরগণায় ভোটার কার্ড, আধার কার্ড দিয়ে জামাই আদর করে রাখা হয়।”