প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- গতকাল হাজার হাজার টিকিট কেটে নিজেদের স্বপ্নের নায়ককে দেখতে যুবভারতীতে এসেছিলেন প্রচুর দর্শক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই মেসিকে দেখতে না পেয়ে তাদের ক্ষোভ এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে, যুবভারতীর ভেতরে বিভিন্ন চেয়ার পর্যন্ত ভেঙে দেওয়া হয়। আয়োজকদের অপদার্থতা নিয়ে উঠতে শুরু করে প্রশ্ন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আসার কথা থাকলেও, দর্শকদের মধ্যে যে ক্ষোভের আগুন তৈরি হয়েছে, সেই খবর পেয়ে মাঝপথে গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে চলে যান তিনি। সকলের একটাই বক্তব্য যে, মেসিকে দেখতে তারা হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটে এসেছিলেন। কিন্তু দেখতে পাওয়া তো দূরের কথা, উল্টে মেসিকে ঘিরে রেখেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী থেকে শুরু করে আয়োজকদের একটা বড় অংশ। স্বাভাবিকভাবেই তাদের কাছ থেকে তাহলে কেন এত টাকা করে নেওয়া হলো? আর তার ফলেই যে তাদের এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এই পরিস্থিতিতে এবার গোটা ঘটনার পর রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে সেই যুবভারতীতে আসলেও, শেষ পর্যন্ত গেট বন্ধ দেখে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তিনি। স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দিলেন যে, এর পেছনে যারা জড়িত, যাদের গাফিলতি রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে।
গতকাল যুবভারতীতে যে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি হয়েছিল, যেভাবে কিছু মানুষের জন্য হাজার হাজার দর্শক প্রচুর টাকা দিয়ে টিকিট কেটেও মেসিকে দেখতে পারলেন না, তার জন্য তাদের ক্ষোভ আছড়ে পড়েছিলো। এখন অনেকে বলতেই পারেন যে, দর্শকরা এইভাবে যুবভারতীর ভেতরে তান্ডব না চালালেই পারতেন। আর যদি কেউ এই প্রশ্ন তোলেন, সাথে সাথে তাহলে এই প্রশ্নটাও উঠবে যে, তাহলে তাদের কাছ থেকে এত হাজার হাজার টাকা নেওয়া হলো কেন টিকিটের জন্য? দর্শকরা যদি আগেভাগেই জানতেন যে, কিছু মন্ত্রী এবং তাদের ঘনিষ্ঠরা এবং আয়োজকরা মেসিকে ঘিরে রাখবেন, তাহলে তো কেউ টিকিট কেটে আসতেন না, এখানে নিজেদের স্বপ্নের নায়ককে দেখতে! ফলে টাকা খরচ করে টিকিট কেটে এসেও যখন তারা মেসিকে দেখতে পেলেন না, তখন নিঃসন্দেহে তাদের রাগ এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, তা আছড়ে পড়ে যুবভারতী প্রাঙ্গণে। প্রচুর চেয়ার পর্যন্ত ভাঙচুর করা হয়। আর এই পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থল দেখতে সেই যুবভারতীতে পৌঁছলেও ভেতরে ঢুকতে না পেরে রীতিমত ক্ষোভ উগড়ে দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
গতকাল যুবভারতীতে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পরেই হইচই পড়ে যায় বিভিন্ন মহলে। আর তারপরেই ঘটনাস্থলে আসেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু যুবভারতীর ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি তিনি। আর তারপর পরবর্তীতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলেন, “আমি ভেতরে ঢুকতে না পারলেও সত্য লুকিয়ে রাখা যাবে না। পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ প্রশাসন।” এমনকি তিনি এই গোটা ঘটনার জন্য একদম শিকড় পর্যন্ত যাবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। আর তিনি গতকাল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে যে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন, তাতেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান গোটা ঘটনায় অত্যন্ত বিরক্ত। তবে অতীতেও তিনি অনেক ঘটনায় বিরক্ত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু দিনের শেষে তার সেই রকম কড়া পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। তাই এবারও তিনি হয়ত কড়া পদক্ষেপের কথা বলছেন। কিন্তু বাস্তবে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সত্যিই কতটা কড়া পদক্ষেপ নিতে পারেন, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।