প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- একদিকে অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য এবং অন্যদিকে দলীয় জনসভা করতে আজ উত্তরবঙ্গে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যেখানে দলীয় জনসভা থেকে একাধিক বিষয়ে তৃণমূলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। এক কথায় ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের কুকীর্তির পর্দা একেবারে ফাঁস করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর সেটাই হয়ত সবথেকে বড় ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তাই প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি এমন কিছু কথা বলে ফেললেন, যার ফলে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, প্রধানমন্ত্রী বাংলা এসে তৃণমূলের দুর্নীতি সবার সামনে প্রকাশ করে সোচ্চার হওয়ার কারণে রীতিমত ভয়ে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল তৃণমূল কংগ্রেস। তেমনটাই বলছেন বিরোধীরা।

প্রসঙ্গত, এদিন মোদীর সভার দিকে গোটা রাজ্যের মানুষের নজর ছিল চোখে পড়ার মত। সকলেই টেলিভিশন পর্দায় নজর রাখছিলেন যে, উত্তরবঙ্গের সভা থেকে ঠিক কোন কোন বিষয়ে আলোকপাত করেন প্রধানমন্ত্রী। যেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একেবারে তৃণমূল সরকারের দুর্নীতি স্বজনপোষণ এবং প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে অত্যাচার নিয়ে তুলোধোনা করেছেন তিনি। যার ফলে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় পরিবর্তন আনতে সর্বোচ্চ জোর লাগিয়ে দেবে গেরুয়া শিবির। আর প্রধানমন্ত্রী আক্রমণের পরেই বাংলায় আসলেও কেন তিনি মনিপুরে গেলেন না, তা নিয়ে বড় বড় প্রশ্ন করতে শুরু করে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরেই পাল্টা নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে তিনি বলেন, “আপনাকে খোলা চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি, আজ বাংলা নিরাপদ বলে আপনি ঠিক নির্বাচনের আগে এখানে আসেন। বাংলার মানুষকে ভুল বোঝাতে, কুৎসা রটাতে, ষড়যন্ত্র করতে। মণিপুরে গেলেন না কেন? আপনার তো আগে ওখানে যাওয়া উচিত ছিল।”তবে মুখ্যমন্ত্রী যখন এত বড় বড় কথা বলছেন, তখন পাল্টা তার বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী তো এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তাহলে মুর্শিদাবাদের যখন দাঙ্গা হয়, যখন মালদহে মানুষ অত্যাচারিত হয়, যখন চাকরিহারা ব্যক্তিরা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও নিজেদের চাকরি চলে যাওয়ার কারণে রাস্তায় বসে থাকেন সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলার জন্য, তখন কেন সেখানে যান না এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান?

আর প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেওয়ার তিনি কে? প্রধানমন্ত্রী কোথায় যাবেন, না যাবেন, সেটা তিনি বিলক্ষণ জানেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এসে প্রধানমন্ত্রী তৃণমূলের দুর্নীতির পর্দাফাঁস করে দিয়েছেন জন্যই কি এত বেশি গাত্রদাহ হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের?তার সরকারের আসল কীর্তি ফাস হয়ে যাচ্ছে জন্যই কি তিনি এবার মরিয়া হয়ে উঠেছেন, বাংলায় কেন প্রধানমন্ত্রী এলেন, এই সমস্ত প্রশ্ন তুলতে? যদি তার সরকার ভালোই কাজ করে থাকবে, তাহলে প্রধানমন্ত্রী এই সমস্ত বললেও, তিনি তো কনফিডেন্ট থাকবেন, নিজের নির্বাচন নিয়ে। তাই প্রধানমন্ত্রীর আক্রমণের পরেই মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের বক্তব্য প্রমাণ করছে যে, আগামী ২৬ এর নির্বাচন নিয়ে তার চোখ, মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট বলেই মত গোটা রাজনৈতিক মহলের।