প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খুব ভালো মতই বুঝতে পারছেন যে, এসআইআর হলে তার দল আর ক্ষমতায় টিকে থাকবে না। আর সেই কারণে তিনি যখন খুশি, যা ইচ্ছে তাই মন্তব্য করছেন। সম্প্রতি তিনি নবান্নে বসে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে সঙ্গে নিয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন। যেখানে তিনি সরাসরি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল সম্পর্কে একাধিক মন্তব্য করেন। পরোক্ষে রাজ্যের সিইওকে হুমকি দেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান বলেই অভিযোগ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর। আর এই পরিস্থিতিতে কেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সকলেই তাকিয়ে ছিলেন যে, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সম্পর্কে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এত বড় কথা বলার পর কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে জাতীয় নির্বাচন কমিশন? অবশেষে দিল্লির পক্ষ থেকে নেওয়া হলো পদক্ষেপ। যার ফলে মনে করা হচ্ছে যে এবার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য চরম বিপাকে পড়তে হতে পারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে।
সম্প্রতি গোটা রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়ে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। নবান্নে বসে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে পাশে নিয়ে তিনি যেভাবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলেই মনে করছেন সকলে। গতকালই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে পৌঁছে যান। যেখানে গিয়ে তিনি দাবি জানান যে, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অবিলম্বে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। যেভাবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সম্পর্কে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তাতে কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দেন বিরোধী দলনেতা। এমনকি সঠিক সময়ে যদি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে তিনি সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এবং বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে এই নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে এসে ধরনা দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দুবাবু। আর এই রকম একটা পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ঘুম কখন ভাঙবে, তারা মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আদৌ কোনো ব্যবস্থা নেবে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন সকলেই।
তবে বিশেষ সূত্র মারফত পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা যাচ্ছে যে, দিল্লির পক্ষ থেকে এবার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে বসে মুখ্যসচিবকে পাশে নিয়ে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, সেখানে তার ভিডিও ফুটেজ তলব করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে সেই ভিডিও ফুটেজ তলব করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সেই ভিডিও ফুটেজ দেখার পর কি জাতীয় নির্বাচন কমিশন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো শাস্তি মূলক পদক্ষেপ নিতে পারে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে চর্চা। তবে কি হবে, তা পরবর্তী সময়ে বলবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার দাবি এবং হুঁশিয়ারির পর যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সম্পর্কে মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন ভিডিও ফুটেজ তলব করেছে, তাতে যদি বড়সড় কোনো শাস্তি মূলক ব্যবস্থা হয়, তাহলে চরম বিপাকে পড়ে যেতে পারেন এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।